শিরোনাম
পাবনায় ট্রিপল মার্ডার: ঘাতক গ্রেফতার
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২০, ১৬:২৯
পাবনায় ট্রিপল মার্ডার: ঘাতক গ্রেফতার
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পাবনা শহরের দক্ষিণ রাঘবপুরে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী-কন্যাকে অর্থসম্পদের লোভে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একমাত্র আসামি তানভীর হোসেনকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদ্ধার করা হয়েছে।


তানভীর একাই তিনজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও কাঠের বাটাম দিয়ে মাথায় আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।


রবিবার (৭ জুন) গ্রেফতারের পর তানভীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে। ঘাতক তানভীর নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার হরিপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে।


রবিবার (৭ জুন) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম পুলিশলাইনস অডিটরিয়ামে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করেন।


তিনি জানান, আবদুর জব্বার দম্পত্তি নিঃসন্তান ছিলেন। সানজিদা জয়া তাদের (১২) পালিত মেয়ে। সানজিদা শহরের কালেক্টরেট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।


পুলিশ সুপার জানান, পাবনা শহরের দক্ষিণ রাঘবপুর ভাড়া বাড়ির পাশে ফায়ার সার্ভিস অফিসের মসজিদের ইমামতি করা তানভীর হোসেনের সঙ্গে দেড় বছর আগে আবদুল জব্বারের পরিচয় হয়। তার আচার ব্যবহারে সন্তষ্ট হয়ে তাকেও আবদুল জব্বার দম্পত্তি সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। সেই সূত্রে ওই বাড়িতে তানভীরের অবাধে যাতায়াত ছিল। এমনকি সন্তানের মতোই ব্যাংক, পোস্ট অফিসের টাকা তোলাসহ সব বিষয়ে তার সঙ্গে শেয়ার করতেন এই নিঃসন্তান দম্পত্তি। আর এটিই ওই দম্পত্তির কাল হয়ে দাঁড়ায়।


আবদুল জব্বার দম্পত্তি তানভীরকে সন্তানের মতো ভালোবাসলেও সে মনে মনে তাদের অর্থসম্পদ টাকা-পয়সা লুটপাটের পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৫ মে সে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যায় এবং ৩১ মে পাবনায় ফিরে আসে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তানভীর আবদুল জব্বারের বাড়িতে এসে উঠলে কোনো কিছু না বুঝেই তিনি তানভীরকে নিজ বিছানায় ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেন।


এক রুমে তানভীর ও আবদুল জব্বার এবং অন্য রুমে আবদুল জব্বারের স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদা শুয়ে পড়েন। রাত গভীর হয়, এ সময় সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও তানভীরের চোখে ঘুম নেই। সে শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। ভোর ৪টা ৫ মিনিটের দিকে আবদুল জব্বার ঘুম থেকে ওঠে বাথরুমে যাওয়ার চেষ্টা করলে তানভীর পেছন থেকে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে বিছানার ওপর ফেলে দেয়।


পরে তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এর পর সে অন্য রুমে গিয়ে ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদাকে ঘুমের মধ্যেই কুপিয়ে হত্যা করে। এর পর সে চাবি দিয়ে আলমিরা থেকে নগদ দুই লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় মুদ্রাসহ বেশ কিছু সোনার গহনা নিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে নওগাঁয় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।


পুলিশ সুপার জানান, আবদুল জব্বার দম্পত্তি ও তাদের কন্যার মরদেহ উদ্ধারের পর পরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(হেডকোয়ার্টার্স) খন্দকার রবিউল আরাফাত লেনিন, সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ, ওসি ডিবি ফরিদ হোসেন এর সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করেন।


এই টিম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাতক তানভীরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার এবং লুণ্ঠিত টাকা ও সোনার গহনা উদ্ধার করেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত তিনটি চাকু, একটি গামছা ও চারটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com