জন্মের পর থেকেই বাবা খোঁজ রাখেনি। মায়ের কাছেই বড় হচ্ছে হাবিবা। অর্থাভাব তার পিছু ছাড়েনি। তারপরও অধ্যবসায় আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে এবার এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। চরম দারিদ্র্য তাকে হার মানাতে পারেনি। বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন তার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি হার মানতে হবে অর্থাভাবের কাছে- সেই চিন্তার ছাপ কপালে ফলাফলে খুশি হাবিবার।
হাবিবা যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের রুমিচা বেগমের মেয়ে। সে মাহমুদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। হাবিবা এর আগেও একই বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ ও বৃত্তি লাভ করেছিলো। সমাপনীতেও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছিলো।
মেধাবী শিক্ষার্থী হাবিবা খাতুন জানায়, জন্মের পর থেকেই পিতা আমাকে আর আমার মাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। আর কোনোদিন খোঁজ রাখেনি। মামাদের ভিটায় থেকেই মানুষ হয়েছি। ৮ম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্থানীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘এমবি থ্রি’ ফাউন্ডেশন যাবতীয় খরচ বহন করে। এমনকি সংসার চালানোর জন্য ২০ শতক জমি আমার মাকে দিয়েছে। ‘এমবি থ্রি’ ফাউন্ডেশনের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ।
আমি মনে করি, ফাউন্ডেশনের এ সহযোগিতা বিফলে যায়নি। তাদের সহযোগিতা পেয়েই আমি সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি। পড়ালেখা করে আমি ডাক্তার হতে চাই। তাই ‘এমবি থ্রি’ ফাউন্ডেশনসহ সমাজের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
হাবিবার মা রুমিচা বেগম জানান, অনেক কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারব কিনা আল্লাহই জানে।
‘এমবি থ্রি’ ফাউন্ডেশনের বাঘারপাড়া এরিয়া ম্যানেজার সনিয়া খাতুন জানান, ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে হাবিবাকে যাবতীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে সহযোগিতা করা হবে বলে আশা রাখছি। অন্যদিকে হাবিবার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গরিব মেধাবি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
মাহমুদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রতন কুমার দেবনাথ জানান, হাবিবা অত্যন্ত মেধাবী। অসুস্থ ও দারিদ্র্যের মধ্য দিয়েও ভালো ভালাফল অর্জন করেছে। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
বিবার্তা/তুহিন/এসএ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]