শিরোনাম
কুড়িগ্রামে পানির নীচে পাকা ধান, দুশ্চিন্তায় কৃষক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২০, ১৯:১০
কুড়িগ্রামে পানির নীচে পাকা ধান, দুশ্চিন্তায় কৃষক
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের উঠতি বোরো ধান। এ অবস্থায় কয়েক’শ হেক্টর জমির আধা-পাকা ধান পানিতে তলিয়ে থাকায় তা ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা এসব ধান সম্পূর্ণরুপে নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন তারা।


কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্র‏হ্মপুত্র ও দুধকুমর নদের অববাহিকার প্রায় দুই শতাধিক চরে বোরোর আবাদ করেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। এসব এলাকায় দেরীতে ২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করায় তা এখনো ঘরে তুলতে পারেননি বেশির ভাগ কৃষক। এবারে আগাম বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পোড়ার চর, মাঝিয়ালির চর, বড়ুয়া, রলাকাটা, ভগবতীপুর, পারবতীপুর, ঝুনকার চর, নাগেশ্বরীর নারায়রনপুর, কালার চর, অষ্টআশির চর, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা, জাহাজের আলগা, দুই খাওয়া, আইরমারীসহ রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক চরসহ নিম্নাঞ্চলগুলোতে আবাদকৃত বোরো ধানের বেশির ভাগই পানির নীচে তলিয়ে আছে। এ অবস্থায় কৃষকরা পানির নীচ থেকে কিছু ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।


সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পারবতীপুর চরের খোকা মন্ডল জানান, চরের পাঁচ বিঘা জমিতে ২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করেছি। হঠাৎ করেই নদীতে পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে এক বিঘা জমির ধান সামান্য জেগে আছে সেই এক বিঘা জমির ধান লোকজন নিয়ে কাটছি। বাকিগুলো এখনো পানির নীচে পড়ে আছে।


সদরের ভগবতীপুর চরের আয়নাল হক জানান, ধার-দেনা করে আবাদ করা এ ধান দিয়েই আমাদের সারা বছর চলে যায়। কিন্তু এবার প্রকৃতির এই বৈরী আচরণে তারা অর্ধেক ধানও ঘরে তুলতে পারছি না। সব শেষ হয়ে গেল।


সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শাহা জামাল জানান, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সমস্ত ২৯ জাতের বোরো ধান পানির নীচে তলিয়ে আছে। কয়েকদিন ধরে এসব ধান পানির নীচে থাকায় তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে করে এসব এলাকার কৃষকের অপুরণীয় ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি।


যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আইযুব আলী সরকার জানান, চরাঞ্চলগুলোর কৃষকরা যে বোরো আবাদ করেছেন পানি আসার আগে তার অর্ধেকও ঘরে তুলতে পারেননি। এখন দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষকদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।


কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান এর নিকট কি পরিমান ধান তলিয়ে গেছে জানতে চাইলে তিনি সঠিক হিসাব দিতে পারেননি। তবে তিনি জানান যেসব ধান দেরীতে লাগানো হয়েছে চরাঞ্চলের শুধু সেসব ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনে কাজ চলছে।


দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে চরাঞ্চলে বোরো চাষীদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন কৃষকরা।


বিবার্তা/সৌরভ/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com