শিরোনাম
লিবিয়ায় নিহত রকিবুলের বাড়িতে শোকের মাতম
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২০, ১৬:৩৭
লিবিয়ায় নিহত রকিবুলের বাড়িতে শোকের মাতম
যশোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আর্থিক স্বচ্ছলতার এক বুক স্বপ্ন নিয়ে মাস চারেক আগে মাতৃভূমি ছেড়েছিলেন ২০ বছরের টগবগে তরুণ রাকিবুল ইসলাম (২০)। তার বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার খাটবাড়িয়া গ্রামে। দালালের মাধ্যমে তিনি পাড়ি দেন লিবিয়ায়। তিনি জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন একটু উন্নতমানের। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।


দালাল চক্র লিবিয়ার একটি শহরে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় দালালরা। পরিবারের লোকজন টাকা দিতে রাজিও হয়। এরই মধ্যে তারা খবর পান দালাল চক্র রাকিবুলকে গুলি করে হত্যা করেছে। এখন তার পরিবারসহ গোটা গ্রামে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।


গৃহযুদ্ধকবলিত দেশ লিবিয়ার দক্ষিণা লীয় মিজদা শহরে বৃহস্পতিবার ২৬ বাংলাদেশীসহ ৩০ অভিবাসীকে খুন করা হয়। তাদেরই একজন এই রাকিবুল।


রাকিবুলের বড় ভাই সোহেল রানা জানান, ১৩ ফেব্রুয়ারি উন্নত জীবনের আশায় দেশ ছেড়ে ছিলেন রাকিবুল। ভালো কাজের জন্য দালালের মাধ্যমে তাকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। কিন্তু শুরু থেকেই দালালরা তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকে। পরে তাকে আটকে রেখে ১৭ মে মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ওই টাকা দুবাই থেকে তারা নিতে চায়। ভাইয়ের মুক্তির জন্য ওই টাকা দিতে রাজিও হয়েছিলেন সোহেল রানা। আগামী ১ জুন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে সময় নিয়েছিলেন।


রাকিবুলের চাচাতো ভাই ফিরোজ হোসেন লিবিয়া থেকে ফোন করে জানিয়েছেন, যে ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে রাকিবুলও রয়েছেন।


পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাকিবুল যশোর সরকারি সিটি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। রাকিবুলের চাচাতো ভাই ফিরোজ লিবিয়াপ্রবাসী। ওই ভাই লিবিয়ায় থাকা এক বাংলাদেশী দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাকিবুলকে লিবিয়ায় নিয়ে যান। চার মাস আগে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে রাকিবুলকে লিবিয়ায় পাঠান পরিবারের লোকজন। চার ভাইবোনের মধ্যে রাকিবুল সবার ছোট। যে কারণে তার মৃত্যুর খবরে মা-বাবা, ভাই-বোন মুষড়ে পড়েছেন। তাদের বাড়িতে এখন শোকের মাতম চলছে।


ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিছার উদ্দীন বলেন, লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে আমার ইউনিয়নের খাটবাড়িয়া গ্রামের রাকিবুল নামে এক যুবকও রয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে দ্রুত লাশ গ্রামে আনতে চাই।


বিবার্তা/তুহিন/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com