শিরোনাম
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আতঙ্কে উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২০, ২১:২৬
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আতঙ্কে উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ
ভোলা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

একদিকে কয়েক মাস ধরে করোনার আতঙ্কে রয়েছে উপকূলের মানুষ। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ভোলায় ৭ নং মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আতঙ্কে ভোলার উপকূলের মানুষ।


ঢালচরের মেঘনা পাড়ের বাসিন্দা জসিম জানান, মেঘনার ভাঙ্গনে কয়েক বার ভিটে বাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। আবার নতুন করে তুলছি, এখন শুনলাম আম্ফান নামে ঘূর্ণিঝড় আসছে। তার প্রশ্ন আমরা এহন কি করুম। করোনার ভয়ের মধ্য যদি আবার এই ঝড় শুরু হয় তাহলে আমাদের কী কোনো উপায় থাকবে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কী হবে।


ভোলা সদর তুলাতলীর মেঘনা পাড়ের আযাহার আলী বলেন, করোনার কারণে অসহায় অবস্থায় মধ্যে দিন কাটছে। এর মধ্যে আবার ঘূর্ণিঝড় এলে তো আরো ভয় বেড়ে যাবে। ঝড়ে ক্ষতি হলে আমরা কীভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকবো, কি ভাবে চলবে আমাদের দিন।


শুধু আযাহার মিয়া কিংবা জসিম নয়, তাদের মত অনেকেই এখন ঝড় নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।


করোনাভাইরাসের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফান নিয়ে সংকটে পড়েছেন ভোলার উপকূলের মানুষ। ঝড়ের আগাম বার্তা পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই কর্মহীন এসব মানুষ যেন অজানা আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছেন।


নিরাপদ আশ্রয় কিংবা জীবন বাঁচানোর চিন্তা না করে তারা নিজেদের বসতঘর আর সম্পদ রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ঝড়ে না জানি কি হয়, এমন চিন্তার তাদের চোখ-মুখে হতাশা।


এদিকে ঝড় মোকাবিলায় ৩টি ধাপে প্রস্তুতি নিয়েছে ভোলা জেলা প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড়ের আগে, ঝড়ের সময় এবং ঝড় পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।


জানা যায়, ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া পাড়ে বাঁধে আশ্রিত এবং ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপচরের বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্রতার সঙ্গেই লড়াই করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়ে কষ্টে দিন পার করছিলেন এসব পরিবার। যদিও তাদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ পাচ্ছেন।


কিন্তু মহামারি করোনার সেই দূর্যোগ কাটিয়ে না উঠতেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পূর্বাভাস উপকূলবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে।


নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের চেয়েও বসতভিটা আর সম্পদ রক্ষা নিয়েই চিন্তিত বেশিরভাগ উপকূলের মানুষ। আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় মধ্যে কাটছে তাদের দিনানিপাত।


ভোলা মানিকা এলাকার দরিদ্র পরিবারের সন্তান আছমা জানান, ঝড়ের কথা শুনেছি, আমরা ভয়ের মধ্যে বসবাস করছি। যদিও করোনার কারণে কষ্টে দিন কাটছে, বেশি কিছু হলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবো কিন্তু ঝড়ে যদি ঘর ভেঙে যায়, তাহলে কোথায় সন্তানদেও নিয়ে আশ্রয় নেব।


ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, ঝড় মোকাবিলা আর উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদে আনতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।


তিনি বলেন, করোনার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে যাতে মানুষের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত হয় সে জন্য ১১০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে কাজ করছে সিপিপিসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ উপজেলা প্রশাসন, নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ সবাই একযোগে কাজ শুরু করেছে।


তিনি আরো বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপক‚লের সব বাসিন্দারের নিরাপদে আনতে চাই। সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও মেডিক্যাল টিম ও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ, নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় ঝ‚ঁকিপ‚র্ণ ও উপকূলীয় এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে আনা হচ্ছে।


বিবার্তা/শাহীন/এসএ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com