প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলায় দ্রুত করে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ থেকে আগত প্রবাসীর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের হোম কোয়ারেন্টাইন বা সেলফ কোয়ারেন্টাইনে নির্দেশনায় আছেন ৩১৭ জন কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবমতে শুধু বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ পর্যন্ত ১০১ জনকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের হোম কোয়ারেন্টাইন বা সেলফ কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৩১৭ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া কোয়ারেন্টাইন নির্দেশনায় থাকা ৩১৭ জনের মধ্যে সদরে ২৬, কুলাউড়ায় ৫২, জুড়ীতে ১৯, বড়লেখায় ৩২, শ্রীমঙ্গলে ৮১, কমলগঞ্জে ৬৫ এবং রাজনগরে ৪২ জন। মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।
তবে এদের বেশির ভাগই বিদেশফেরত। তবে আশার বিষয় হলো এদের কারো শরীরেই এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের লক্ষণ বা উপসর্গ পাওয়া যায়নি।
তবে অভিযোগ আছে করোনা সন্দেহে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীদের অধিকাংশই মানছেন না কোনো নিয়ম কানুন। বরং প্রকাশ্যেই জনসমাগমে ঘোরাফেরা করছেন। অনেকে বিয়ে সহ অন্যান্য কেনাকাটায়ও ব্যস্ত। মানছেন না ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়মাবলী। ইতিমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অনেককে জরিমানা করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। জোর করে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে হোম কোয়ারেন্টাইনে।
এদের বেশির ভাগই বিদেশফেরত। ৩১৭ জনের মধ্যে কয়েকজন বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের নিকট আত্মীয়ও রয়েছেন, যারা তাদের সংস্পর্শে ছিলেন। জানিয়েছেন -মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. রোকশানা ওয়াহিদ রাহি।
তবে কোয়ারেন্টাইনে থাকা কারো শরীরে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের লক্ষণ বা উপসর্গ নেই। তারা সবাই মৌলভীবাজারের স্বাস্থ্য বিভাগের নিবিড় তদারকির মধ্যে রয়েছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
ডা. রোকশানা ওয়াহিদ রাহি আরো বলেন, ‘মনে রাখবেন করোনা বাংলাদেশের জন্য একটি immigrant disease। শুধু বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিরা যদি করোনাভাইরাসের বাহক হোন, তাদের মাধ্যমেই এর সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং নিজের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং সমস্ত দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে বিদেশ থেকে আগত সবাইকে অবশ্যই ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে। একমাত্র সঠিকভাবে হোম কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমেই এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ সম্ভব। সকলের সহযোগিতা ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের একার পক্ষে এই সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়।’
নিজেরা সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন, পরিচিতজন বিদেশ থেকে আসলে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলতে পরামর্শ দিন এবং সাহায্য করুন।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে মৌলভীবাজার জেলায় ১১৬টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে করোনা রোগী পাওয়া গেলে চিকিৎসা দেয়া হবে।
বিবার্তা/আরিফ/জাহিদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]