শিরোনাম
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে মারধর ও গরু লুটের মামলা
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২০, ১১:৪৬
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে মারধর ও গরু লুটের মামলা
ফাইল ছবি
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মিথ্যা অপবাদে শারিরিক নির্যাতনসহ শ্লীলতাহানীর অভিযোগে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরামুল হকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ডোমার থানায় মামলা করেছে ঘটনার শিকার এক গৃহবধুর স্বামী বাচ্চা মিয়া। ওই মামলায় পুলিশ রতন (৩২) নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে।


সোমবার(৮ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার অনুসারি ও বাহিনীর সদস্যরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ইউনিয়নের চিলাহাটি বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিলেও পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় তারা। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু ডোমার উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান বাহিনীর এমন ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউপি চেয়ারম্যানসহ অপর আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে।


ডোমার থানার মামলা সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের গোসাইগঞ্জ ডাঙ্গা পাড়া গ্রামের বাচ্চা মিয়া (৫০) তার স্ত্রী রমিছা বেগম (৪৫) ও মেয়েকে রেখে ঢাকায় বড় জামাইয়ের বাড়ীতে যায়।


ঘটনার দিন শুক্রবার(৬ই মার্চ) সন্ধ্যায় রমিছা চাচাতো ভাই ডাঙ্গাপাড়া আদর্শ গ্রামের মৃত আব্দুলের ছেলে ইব্রাহীম (৭০)ওই ছোট বোনের বাড়িতে গিয়ে বাজার খরচ দিয়ে নিজবাড়িতে ফেরার পথে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানের বাহিনীর সদস্যরা ইব্রাহিমকে আটক করে রমিছার সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পকের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারধর করতে থাকে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনা স্থলে এসে ইব্রাহীমের সাথে রমিছার অবৈধ সম্পর্ক আছে মর্মে রমিছা ও তার চাচাতো ভাই বৃদ্ধ ইব্রাহীমের কাছে জোড়পূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে রমিছাকে বেধড়ক মারপিট ও মাটিতে থুতু ফেলে পূনরায় তা চেটে খেতে বাধ্য করেন। এরপর নন জুডিশিয়াল ১৫০ টাকা মূল্যের সাদা ষ্ট্যাম্পে জোর পূর্বক বৃদ্ধ ইব্রাহীম, রমিছা ও তার মেয়ে রানী’র কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয় ও এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।


টাকা দিতে অস্বীকার করলে ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল বৃদ্ধ ইব্রাহীমের বাড়ির পালিত ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু লুট করে নিয়ে যায়। পরদিন ইউপি চেয়ারম্যান আমবাড়ি হাটে গরুটি বিক্রি করেন।


রমিছার স্বামী বাচ্চা মিয়া খবর পেয়ে পরদিন ঢাকা থেকে বাড়ীতে এসে ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হককে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে নারী, শিশু আইনে ১০ ধারায় ডোমার থানায় মামলা দায়ের করেন।


এই মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত রবিবার রাতে আদর্শ গ্রামের মঙ্গলের ছেলে রতনকে (৩২) গ্রেফতার করে সোমবার (৯মার্চ) আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়। এতে মামলা গ্রহণসহ আসামি গ্রেফতারে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী পুলিশসহ মামলার বাদীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তার প্রেক্ষিতে সোমবার ইউপি চেয়ারম্যানের বাহিনীর লোকজন সোমবার দুপুরে চিলাহাটি বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা পালিয়ে যায়।


এ ব্যাপারে ভোগডাবুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ থাকায় কোনো মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে ডোমার থানার ওসি মোস্তফিজার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এজাহারভুক্ত ৭ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।


বিবার্তা/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com