শিরোনাম
দুর্গম পাহাড়ে শিক্ষার আলো !
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৩:৩৪
দুর্গম পাহাড়ে শিক্ষার আলো !
লামা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদ আব্দুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও মূলত ২০১৪ সাল থেকে ঈর্শনীয় অগ্রগতি ও শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে এ জনপদে।


ইতোমধ্যে শিক্ষা ও ক্রীড়াসহ বিভিন্নসহ পাঠ্য ক্রমিক ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে এ বিদ্যালয়। বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার দিক থেকে এটি একটি সক্রিয় বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তবে বিদ্যালয়টিতে শ্রেণি কক্ষের সংকট। নেই একাডেমিক ভবনও। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে।


এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নির্মিত টিনশেড ঘরগুলো ইতোমধ্যে জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকির মধ্যেই চলছে পাঠদান। সরকার কর্তৃক অনুমোদিত চারতলা ফাউন্ডেশনের একাডেমিক ভবনটির নিমার্ণ কার্যক্রম সম্পূর্ন হলে শিক্ষা বিস্তারে এলাকায় সম্পদে পরিণত হবে প্রতিষ্ঠানটি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফা দায়িত্ব নেয়ার পর বিদ্যালয়টির এ অগ্রযাত্রা হয় বলে মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।


জানা যায়, ১৯৯৭ সালে ইউনিয়নের বুমরকুল এলাকার কয়েকজন শিক্ষানুরাগী প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ আবদুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টির কার্যক্রম বমুরকুলে শুরু হওয়ার পর নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ২০০৩ সালে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সাল থেকে বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এলাকার চেয়ারম্যান আবদুল মতলবসহ কিছু শিক্ষানুরাগীর প্রচেষ্ঠায় পুনরায় চালু হয় বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম। এ বিদ্যালয়ের জন্য পানিস্যাবিল এলাকার মরহুম ছিদ্দিক আহমদ ও শহীদ আবদুল হামিদের ভাই এজাহার হোছাইন ১০০শতক জমি দান করেন। পরবর্তীতে বর্তমান প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফার প্রচেষ্ঠায় ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের পাঠদান কার্যক্রম অনুমোদন পায়।


২০১৭ সালে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভের পর ২০১৮ সালে মাধ্যমিকে উন্নতিকরণ হয় বিদ্যালয়টি। একই বছরে প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফার একান্ত প্রচেষ্ঠায় দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট ডিজিটাল বিদ্যালয় ভবন স্থাপনের অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৪০০জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। এতে আটজন শিক্ষক, একজন অফিস সহকারি ও একজন দফতরী কর্মরত আছেন।


বর্তমানে বিদ্যালয়টির সেমিপাকা টিনসেট ভবনে রয়েছে সাতটি শ্রেণি কক্ষ। এতে কোনো মতে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব ও সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব পালন করেছেন।


বিদ্যালয়টি জে.এস.সি ও এস.এস.সিতে প্রতি বছর সন্তোষজনক ফলাফলের পাশাপাশি গৌরব অর্জণ করে। অথচ নামে মাত্র প্রতিষ্ঠানিক বেতনে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।


এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর নিম্ন মাধ্যমিক পাঠদান অনুমোতি, একাডেমিক স্বীকৃতি, মাধ্যমিক স্তর পাঠদান অনুমতি লাভ ও একই বছর চার তলা বিশিষ্ট ডিজিটাল ভবন শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হয়।


চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রতন বিশ্বাস বলেন, এ রকম একটি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে ভবন পাওয়া বিশাল ব্যাপার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল মোস্তফার প্রচেষ্টাই এনে দিয়েছে এ সাফল্য। এক্ষেত্রে আমরা আশা করছি অত্র অঞ্চলে বিদ্যালয়টি শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক অবদান রাখবে।


বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব জানান, ম্যানেজিং কমিটি, অভিভাবক, শিক্ষক ও এলাকার শিক্ষানুরাগীদের সহযোগিতায় শিক্ষার বাতিঘর হিসেবে বিদ্যালয়টি ইউনিয়নে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।


বিবার্তা/আরমান/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com