শিরোনাম
বিপদসীমার ২৫ সে.মি. ওপরে তিস্তার পানি
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৪৫
বিপদসীমার ২৫ সে.মি. ওপরে তিস্তার পানি
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

হঠাৎ করেই উজানের ঢল নেমেছে তিস্তা নদীতে। বুধবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি পালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


ফলে শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা আবারো ফিরে পেলো চিরচেনা আপন রুপ। বাধ ভেঙ্গে শহরে পানি প্রবেশ করছে। তলিয়ে যেতে শুরু করেছে বাড়ি-ঘরসহ আবাদি জমি।


মঙ্গলবার(১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০সেঃ মি)।


এর আগে গত সপ্তাহ জুড়ে বিপদসীমার ৩৫/৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার ( ১৬ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে হঠাৎ বাড়তে থাকে তিস্তার পানি প্রবাহ। যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা আবারো ফুলে ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে তার চিরচেনা রুপ। হেঁটে পাড়ি দেয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝি মাল্লাদের। কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবার গুলোর মাঝেও।


এদিকে হঠাৎ তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি দেখে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের মানুষ বন্যার আশঙ্কা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি তিস্তায় নতুন করে বন্যার আশস্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউ ও এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ফলে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলেও বন্যার আশস্কা নেই। বৃষ্টি কমে গেলেই তিস্তার পানি প্রবাহ কমতে শুরু করবে।


তবে হঠাৎ তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে হাতীবান্ধা উপজেলা শহরে পানি প্রবেশ করছে। ফলে এখনই রাস্তা-ঘাট, বাসা-বাড়ি সব তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। চরাঞ্চলের সবজি চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা কৃষকরা ক্ষতি মুখে পড়েছেন। তাদেরকে পুনরায় জমি কর্ষণ দিয়ে ফসল বুনতে হবে। আগাম সবজি চাষিরা কৃষকরা সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের সবজি ক্ষেত ডুবে গিয়ে ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করেন কৃষকরা।


আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন পাসাইটারী তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক মানিক মিয়া জানান, নদীর কিনারে জেগে উঠা তিন দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপণ করেন। সেই আমন ক্ষেতে কিছু অংশ নদী ভাঙ্গনে বিলীন হলেও বাকি অংশ পানিতে ডুবে আছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ধান ক্ষেতের উপকার হবে। কিন্তু বেশি সময় ডুবে থাকলে ধানক্ষেত পচে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণেই তিস্তাপাড়ের কৃষকরা আতংকিত বলেও দাবি করেন তিনি।


হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের চর হলদিবাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমান ও আনেচ আলী জানান, তিস্তা শুকিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের জমিতে তামাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি তৈরি করে রেখেছেন তারা। কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে তারা সবজি বীজ বপন করেননি। এরই মধ্যে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমি ডুবে গেছে। তাই তাদের ব্যস্ততা কমে গেছে। পানি নেমে গেলে আবারো জমি কর্ষণ দিয়ে সবজি বীজ বপন করা হবে বলেও জানান তারা।


দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ সোমবার রাত থেকে বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার(১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টায় বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। তবে রাতে আবারো পানি প্রবাহ বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।


বিবার্তা/জিন্না/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com