শিরোনাম
আলমডাঙ্গা জিকে খালের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:১৪
আলমডাঙ্গা জিকে খালের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ খালের (জিকে প্রকল্প) দুই পাশে প্রকাশ্যে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। কয়েকবার এসব স্থাপনা উচ্ছেদে মাইকিং ও নোটিশ দেয়া হলেও তা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।


অভিযোগ আছে, স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা এ অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া দিয়েছে। বর্তমানে খালের দুই পাশে চার শতাধিক স্থাপনা গড়ে উঠলেও উপজেলা প্রশাসন বা জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নীরব ভূমিকা পালন করছে।


সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে থেকেই আলমডাঙ্গার জিকে খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পাঁকা স্থাপনা। পাউবো কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি।
জানা যায়- খাল পাড়ের এসব স্থাপনা নির্মাণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েক প্রভাবশালী নেতা। এসব স্থাপনা থেকে তারা প্রতিমাসে ভাড়াও তোলেন। অনেকে আবার রাতারাতি আওয়ামী লীগ নেতা বলে খালের পাশে দোতালা পাকা বাড়ি ও নিচতলায় মুদির দোকান দিয়ে বসেছেন। প্রতি মাসেই চার-পাঁচটি স্থাপনা গড়ে ওঠায় বর্তমানে তা উচ্ছেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।


এলাকাবাসী জানান, একযুগ আগে কুমার নদ ও সংযুক্ত খালের দুই পাড় দখল হতে থাকে। ধীরে ধীরে দখল ছড়িয়ে পড়ে খালের মধ্যেও। অনেকে খালের ভেতর থেকে পিলার তুলে পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন।


চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রান্তিক কৃষকদের কথা চিন্তা করে চাষাবাদে সেচ সুবিধার জন্য জিকে সেচ প্রকল্পটি চালু করা হয়। এই সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গাসহ কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার প্রান্তিক চাষিরা তাদের আবাদি জমিতে সেচ দেন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় জিকে প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৩৭ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি। নিয়মিত সংস্কার না করায় সেচখাল ভরাট হয়ে গেছে। অন্যদিকে অবৈধ দখলদারদের কারণে জিকে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রান্তিক চাষিরা সেচের পানি পাচ্ছেন না।


আলমডাঙ্গার উপজেলার গণমাধ্যম-কর্মী খন্দকার শাহ আলম মন্টু জানান, অনেকে ধীরে ধীরে জিকে খালে প্রথমে মাটি ভরাট ও পরে পাকা স্থাপনা তৈরি করেন। তাছাড়া প্রতিনিয়ত এই খালে ফেলা হচ্ছে শহরের আবর্জনা। ফলে দূষিত হচ্ছে খালটি। তবে খালটি উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা গেলে চাষিরা সেচ সুবিধা পাবেন এবং ফসল উৎপাদন বাড়বে।


কৃষক রতন বিশ্বাস জানান, জিকে খালের পানি নিয়ে তার মতো অনেক কৃষক জমিতে চাষ করেন। কিন্তু অবৈধ স্থাপনার মাটি ভরাটের জন্য আজ এই খাল নাব্যতা হারাতে বসেছে।


আলমডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন আলী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে কোনো সহযোগিতা চায় তাহলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা করা হবে।


চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম বলেন, জিকে খালের পাশে অবৈধ গড়ে ওঠা ২৮৪টি স্থাপনাকে চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।


বিবার্তা/সালেকিন/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com