শিরোনাম
সাগরের ওপর বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুর উদ্বোধন
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৫১
সাগরের ওপর বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুর উদ্বোধন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সমুদ্রের ওপর বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নয় বছর আগে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।


চীনের মুল ভূখণ্ডের গুয়াংডং প্রদেশের ঝুহাই শহরের সাথে ৫৫ কিলোমিটার বা ৩৪ মাইল দীর্ঘ এ সেতু সংযুক্ত করবে হংকং ও ম্যাকাওকে। সেতুটি মঙ্গলবার উদ্বোধন হলেও যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বুধবার।


কর্তৃপক্ষ বলেছে, এ পথ পাড়ি দিতে চার ঘণ্টার মতো সময় ব্যয় হতো, সেক্ষেত্রে এ সেতু নির্মাণে এখন লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা।


তবে প্রকৌশলী ও স্থাপত্যের দিক থেকে দুর্দান্ত হলে সেতুটি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে বিস্তর এবং একে সমালোচকরা ইতোমধ্যে ‘শ্বেতহস্তী’ আখ্যায়িত করছে। কারণ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার কোটি ডলার।



আর নির্মাণকালীণ নিরাপত্তা নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। কারণ নির্মাণ কাজ চলার সময় নিহত হয়েছে ১৮ জন শ্রমিক।


চালু হওয়ার পরই সেতুটি যাতায়াতের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এই সেতু দিয়ে ম্যাকাও ও হংকংয়ের যাত্রী ও যানবাহনগুলো সরাসরি এক অঞ্চল থেকে আরেকটিতে যাওয়া–আসা করতে পারবে। চীনের নদী পার্ল রিভারের ওপর দিয়ে সেতুটি বিস্তৃত হয়ে সমুদ্র পার হয়ে গেছে সেতুটি।


শক্তিশালী মাত্রার টাইফুন কিংবা ভূমিকম্প প্রতিরোধী এ সেতুটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে চার লাখ টন স্টিল। যা দিয়ে ৬০টি আইফেল টাওয়ার নির্মাণ করা সম্ভব।


সেতুটির প্রায় ৩০ কিলোমিটার পার্ল নদীর ওপর দিয়ে গেছে আর জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখার সুবিধার্থে ছয় দশমিক সাত কিলোমিটার রাখা হয়েছে সাগরের নীচে টানেলে এবং এর দু অংশের মধ্যে সংযোগস্থলে তৈরি করা হয়েছে একটি কৃত্রিম দ্বীপ। বাকী অংশ সংযোগ সড়ক, ভায়াডাক্ট আর ভূমিতে টানেল যা ঝুহাই ও হংকংকে মূল সেতুর সাথে যুক্ত করেছে।



এটি আসলে হংকং, ম্যাকাও ও আরো নয়টি শহরকে যুক্ত করে একটি বৃহত্তর সাগর এলাকা তৈরি প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ সেতু নির্মাণ করেছে চীন। এর আগে ঝুহাই থেকে হংকং যেতে সময় লাগতো চার ঘণ্টার মতো। সেখানে নতুন এ সেতুর কারণে সেখানে লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা। এ এলাকায় এখন প্রায় ছয় কোটি ৮০ লাখ মানুষ বসবাস করে।


যারা সেতু পাড়ি দিতে চান তাদের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে আর সব যানবাহনকেই টোল দিতে হবে। এ সেতুতে কোনো গণপরিবহণ থাকবে না। তবে যাত্রী ও পর্যটকদের জন্য দুই ধরনের সরকারি যানবহন থাকবে। এর মধ্যে একটি নিয়মিত বাস সার্ভিস। অন্যটি শাটল সার্ভিস। এক চেক পয়েন্ট থেকে আরেক চেক পয়েন্টে যেতে-আসতে এই শাটল সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন পর্যটকেরা। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, দিনে প্রায় নয় হাজার ২০০ যানবাহন এ সেতু দিয়ে চলাচল করবে।


ইংরেজি বর্ণমালার ‘ওয়াই’ আকৃতির মতো দেখতে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রায় সাত বছর ধরে সেতুর কাজ চলার পর বুধবার তা সবার জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। ৮ মাত্রার ভূমিকম্পরোধক এই সেতু তৈরির একটি রাজনৈতিক গুরুত্বও আছে। হংকংয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনকে পাশ কাটানোও লক্ষ্য।



এছাড়া সেতু তৈরির খরচ নিয়েও বিতর্ক আছে। সংযোগ সড়ক ও কৃত্রিম দ্বীপসহ সেতুটি নির্মাণে মোট খরচ হয়েছে দুই হাজার কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধুমাত্র সেতুর মূল অংশ নির্মাণেই খরচ হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার।


কর্মকর্তারা বলেছে, দেশটির অর্থনীতিতে এটি প্রায় ১ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবে। যদিও এ ব্যাখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বিবিসি চাইনিজের হিসেবে টোল থেকে বছরে আসবে মাত্র আট কোটি ৬০ লাখ ডলার। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com