আফ্রিকার সাভানা তৃণভূমিতে দাড়িয়ে থাকা হাজার বছরের প্রাচীন গাছগুলো হঠাৎ করে রহস্যময় কারণে মরে যেতে শুরু করেছে। এ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বাওব্যাব নামের এসব গাছের বয়স এক হাজার থেকে আড়াই হাজার বছর এবং বিশাল আকারে বড় হয়ে থাকে। আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ জুড়ে এসব গাছ ছড়িয়ে রয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন আর আফ্রিকার সবচেয়ে বড় বাওব্যাব গাছগুলো গত ১২ বছর ধরে মরে যাচ্ছে। তাদের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এর সম্পর্ক থাকতে পারে, যদিও এখনো এ বিষয়ে তাদের কাছে সরাসরি কোনো প্রমাণ নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকা, রোমানিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বলেছেন, এসব গাছ হারানো মানে হচ্ছে যেন হঠাৎ করে বিশাল কিছু হারানোর মতো। আমরা সন্দেহ করছি যে, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে জলবায়ুর কারণে যেসব পরিবর্তন হয়েছে, এসব গাছের মরে যাওয়ার সাথে হয়তো তার সম্পর্ক আছে।
রোমানিয়ার বাবেস-বোলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও গবেষক দলের অ্যাড্রিয়ন প্যাটরুট বলেছেন, তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হলে আরো গবেষণা করতে হবে।
গবেষণাপত্রটি প্রকৃতি বিষয়ক জার্নাল ‘নেচার প্ল্যান্টসে’ প্রকাশিত হয়েছে।
২০০৫ সাল থেকে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলোর এসব প্রাচীন গাছগুলো পর্যবেক্ষণ করে আসছেন গবেষকরা। রেডিও কার্বন ব্যবহার করে তারা গাছগুলোর কাঠামো আর বয়স বের করেন। অনেকটা হঠাৎ করেই তারা সনাক্ত করেন যে, ১৩টি প্রাচীন বাওব্যাবস গাছের মধ্যে আটটি আর ছয়টি বৃহৎ গাছের পাঁচটি মারা গেছে অথবা তাদের পুরনো অংশটি নষ্ট হয়ে গেছে।
প্যাটরুট বলেন, আমরা সন্দেহ করছি, অতিরিক্ত তাপমাত্রা আর খরার কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এসব গাছের এভাবে মরে যাওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ব্যাপার।'
জিম্বাবুয়ে, নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা আর জাম্বিয়া জুড়ে এসব গাছ ছড়িয়ে রয়েছে। একেকটি গাছ ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার বছর পুরনো।
ফলের আকৃতির কারণে স্থানীয়ভাবে এসব গাছকে ‘মৃত ইঁদুর’ গাছ বলেও ডাকা হয়। গাছগুলো লম্বা আর ডালপালা বিহীন হয়ে থাকে। এসব গাছ তাদের শরীরের ভেতর অনেক পানি ধরে রাখে। ফলে রুক্ষ এলাকাতেও এসব গাছ নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারে।
বন্যপ্রাণীর জন্যও এসব গাছ সহায়ক হিসেবে কাজ করে। অনেক পাখির আশ্রয়স্থল এসব গাছ। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]