শিরোনাম
লটারিতে ২৬ লাখ টাকা পেলে...
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৮
লটারিতে ২৬ লাখ টাকা পেলে...
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সোমবার সারারাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি বছর একুশের যুবক শানু দাস। কারণ আর কিছু নয়, লটারিতে ২৬ লাখ টাকা পেয়ে যাওয়া। সরকারি কর বাদ দিয়েও হাতে যা পাওয়া যাবে সেটাও কম নয়। তবে টাকা হাতে না পেতেই তামাম এলাকায় ‘ভিআইপি’ হয়ে গিয়েছেন শানু দাস।


পশ্চিমবঙ্গের চাকদহের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিপাড়ায় ছোট্ট একটা টিনের ঘর। সেখানেই থাকেন শানু, তাঁর বছর পাঁচেকের ছোট বোন আর বাবা-মা। বাবা তপন দাস রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে। অভাবের সংসারে হাল ধরতে গিয়ে নবম শ্রেণির পরে শানুকে লেখাপড়ায় ইতি টানতে হয়। বাপ-ব্যাটা কাজ করে মাসে সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা আয় করে। তা দিয়েই টেনেটুনে চলে অভাবের সংসার। সেই সংসারে হঠাৎ করে এই প্রাপ্তিযোগ অস্থির করে তুলেছে শানুকে।


যে শানুকে ক'দিন আগেও কেউ পুঁছত না, তাকেই এখন বাজারে যাওয়ার পথে বীমাকর্মী সকাতর অনুরোধ জানায়, ‘‘তরুণবাবু, আমার কাছে কিন্তু একটা পলিসি করতেই হবে।’’ অনুরোধে নয়, বহু বছর পরে অন্যের মুখে নিজের ভালো নাম শুনে রীতিমতো ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান শানু। মাছের বাজারে গিয়েও একই অভিজ্ঞতা। মাছওয়ালা বলে, ‘‘বড় মাছ তো কী হয়েছে! নিয়ে যান। টাকা না হয় আমি বাড়ি থেকে নিয়ে আসব। এখন তো আপনি মশাই লাখপতি!’’


এদিকে ইয়ারদোস্তরা গোঁ ধরেছে, ‘‘শুধু চা-মিষ্টিতে কিন্তু আমরা ভুলছি না ভাই। বেশ বড় করে একটা পিকনিক করতে হবে।’’


শানুর কিন্তু সব কথার কোনোটিই মাথায় ঢুকছে না। হঠাৎ কী যে হয়ে গেল! এখনও তিনি ধাতস্থ হতে পারছেন না। সেই কবে একজন বলেছিলেন, ‘‘শানু, মাঝেমধ্যে লটারির টিকিট কিনবি। তোর প্রাপ্তিযোগ আছে।’’ কথাটা শানুর যে বিশ্বাস হয়েছিল, এমন নয়। তবে ফেলতেও পারেননি। তাই মাঝেমধ্যে লটারির টিকিট কাটতেন। কিন্তু নম্বর মিলতো না একদিনও।


গত সোমবার সকালে কাজে যাচ্ছিলেন পেশায় কাঠমিস্ত্রির জোগাড়ে শানু। পালপাড়া স্টেশনে ট্রেন ধরবেন বলে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছে দেখে তিনি ঢুঁ মারেন স্টেশনের পাশের একটি লটারির কাউন্টারে। ৩০ টাকা দিয়ে একটি টিকিটও কিনে ফেলেন। সেই টিকিট মেলানোর পরে শানু নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এ তো হুবহু এক নম্বর ! টিকিটবিক্রেতা হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘কী ভায়া, কেমন লাগছে এখন?’’


লটারি জিতে শানু বলছেন, ‘‘কেমন যেন ভয় করছে, জানেন! রাতে ঘুমোতে পারছি না।’’


শানুর পড়শি, প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী অশোক সরকার বলছেন, ‘‘শানু তো আমাদের বাড়িতেই বড় হয়েছে। লটারিতে টাকা বাধার পরে শানু আমার কাছে এসেছিল। ওকে বলেছি, টাকাটা নষ্ট না করে ভালো কাজে ব্যয় করতে।’’


শানু বলছেন, ‘‘বাবা-মাকে আর কাজ করতে দেব না। বোনকে খুব ভালো করে লেখাপড়া শেখাব। ওরা ভালো থাকলে আমিও ভালো থাকব।’’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com