বিশ্বের বিখ্যাত শিল্পীদের আঁকা ছবি ও ভাষ্কর্যের জন্য সংগ্রাহকরা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকেন। ৪০ কোটি ডলারের বেশি দাম ওঠাও আশ্চর্যের কিছু নয়। নিম্নে এ ধরনের ১১ টি ছবি ও ভাস্কর্যের তালিকা দয়ো হলো:
সালভাতোর মুন্ডি:
কয়েকদিন আগেই রেকর্ড মূল্যে বিক্রি হয়েছে লেওনার্দো দা ভিঞ্চির চিত্রকর্ম সালভাতোর মুন্ডি। তার আঁকা ২০টি ছবি অক্ষত ছবির একটি এটি। ধারণা করা হয়, ১৫০৫ সালে এ ছবিটি আঁকা হয়। ১৯৫৮ সালে ছবিটিকে অনুলিপি ভেবে নিলামে মাত্র ৬০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। যিশুখ্রিষ্টের এ ছবিটি ১০ কোটি ডলারে বিক্রি হবে ধারণা করা হলেও অজ্ঞাত এক ক্রেতা ৪৫ কোটি ডলার দিয়ে কেনেন ছবিটি।
আলজিয়ার্সের মহিলারা:
স্পেনের চিত্রকর পাবলো পিকাসোর ১৯৫৫ সালে আঁকা এই ছবিটি নিলামে সালভাতোর মুন্ডির আগে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছিল। নিলাম সংস্থা ক্রিস্টি ২০১৫ সালে নিউইয়র্কে নিলামে তুলে। এক সংগ্রাহক ছবিটি ১৭ কোটি ৯৪ লাখ ডলার দিয়ে কেনেন।
নু কুশে:
ইতালির চিত্রকর আমেদেও মোদিগলিয়ানি ১৯১৭ সালে তার মৃত্যুর তিন বছর আগে এই ছবিটি আঁকেন। ২০১৫ সালে নিউইয়র্কে ক্রিস্টির নিলামে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামের ছবির মর্যাদা পায় নু কুশে। চীনের সাংহাইয়ের এক বিলিওনেয়ার লিউ ইকিয়ান ছবিটি ১৭ কোটি ৪ লাখ ডলার দিয়ে কেনেন।
লুসিয়ান ফ্রয়েডের তিনটি প্রতিকৃতি:
আইরিশ চিত্রকর ফ্রান্সিস বেকন এই তিন খণ্ডের ছবিটি আঁকেন ১৯৬৯ সালে। ছবিতে যার আলেখ্য, তিনি হলেন ব্রিটিশ চিত্রকর লুসিয়ান ফ্রয়েড, পক্ষান্তরে মনস্তত্বের জনক সিগমুন্ড ফ্রয়েডের পৌত্র। ২০১৩ সালে ক্রিস্টির নিলামে ছবিটির দাম ওঠে ১৪ কোটি ২৪ লাখ ডলার। রয়েছে মার্কিন শিল্পকলা সংগ্রাহক এলেইন ওয়াইনের সংগ্রহে।
অঙ্গুলি নির্দেশ:
সুইস ভাস্কর আলবের্তো জাকোমেত্তির সৃষ্টি এই মানুষ-সমান ব্রোঞ্জ মূর্তিটি নিউইয়র্কে ক্রিস্টি নিলামে তুলে ২০১৫ সালে। স্টিভ কোহেন নামের এক হেজফান্ড ম্যানেজার ১৪ কোটি ১৩ লাখ ডলারে এটি কেনেন। ভাস্কর্যটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্রয়যোগ্য ভাস্কর্য বলে গণ্য৷
সোনার আডেলে:
অস্ট্রিয়ার চিত্রকর গুস্তাফ ক্লিম্ট আডেলে ব্লখ-বাউয়ারের এই প্রতিকৃতিটি আঁকেন ১৯০৭ সালে৷ ম্যানহ্যাটানের ‘নয়ে গ্যালেরি’ নামের সংগ্রহশালার জন্য ২০০৬ সালে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারে চিত্রটি কেনেন মার্কিন ব্যবসায়ী রোনাল্ড লডার। এটি কেনার ব্যবস্থা করে ক্রিস্টি।
স্ক্রিম (চিৎকার):
নরওয়ের চিত্রকর এডভার্ড মুঞ্চ ‘স্ক্রিম বা চিৎকার’ চিত্রটি এঁকেছেন একাধিক বার। ভিঞ্চির মোনালিসা ও ফান গখ-এর সূর্যমুখি ফুলের পরেই মুঞ্চের এই ছবিটিকে বিশ্বের খ্যাততম চিত্রকর্ম বলে গণ্য করা হয়। ছবিটির প্যাস্টেল রঙে আঁকা এই সংস্করণ ২০১২ সালে। নিউইয়র্কে নিলামে তুলে নিলাম হাউস সোথবি। মার্কিন শিল্পপতি লিয়ন ব্ল্যাক ১১ কোটি ৯৯ লাখ ডলার দিয়ে এটি কিনেছেন।
নগ্নমূর্তি, সবুজ পাতা, আবক্ষ:
পাবলো পিকাসো এই তেলরঙের ছবিটি এঁকেছিলেন মাত্র একদিনে। দিনটা ছিল ৮ মার্চ, ১৯৩২। প্রায় অজ্ঞাত ছবিটি নিউইয়র্কে নিলামে বিক্রি হয় ১০ কোটি ৬৫ লাখ ডলারে। কেনেন এক অজ্ঞাত ক্রেতা। ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকলেও, ছবিটি লন্ডনের টেট মডার্ন গ্যালারিকে ধার দেয়া হয়েছে ২০১১ সালে।
রুপোলি গাড়ি দুর্ঘটনা:
মার্কিন চিত্রকর অ্যান্ডি ওয়ারহল ১৯৬৩ সালে এই সিল্ক স্ক্রিন প্রিন্টটি সৃষ্টি করেন। যার বিষয়বস্তু হল একটি গাড়ি দুর্ঘটনা। ২০ বছর ধরে ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকার পর ২০১৩ সালে সোথবি ছবিটি নিলামে তুলে৷ অজ্ঞাত এক ক্রেতা এটি ১০ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে কিনেছেন। ছবিটি পপ আর্ট শিল্পী ওয়ারহলের সবচেয়ে দামী ছবি বলে গণ্য করা হয়।
পাইপ হাতে কিশোর:
পাবলো পিকাসো এই তেলরঙের ছবিটি আঁকেন ১৯০৫ সালে। বর্তমানে দর্শকের কাছে ছবিটির মূল আকর্ষণ সম্ভবত এই যে, কিউবিজম-এর জনক এখানে সম্পূর্ণ বাস্তবধর্মীভাবে একেছেন চিত্রটি। ২০০৪ সালে ছবিটি নিউইয়র্কে সোথবি নিলামে তুলে এবং ১০ কোটি ৪২ লাখ ডলারে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহক সেটি কিনে নেন। সেই সংগ্রাহক ইটালির সুবিখ্যাত ব্যারিলা স্পাঘেট্টি কোম্পানির মালিক বলে কথিত আছে।
পদক্ষেপ:
আলবের্তো জাকোমেত্তির সৃষ্ট এই ব্রোঞ্জ মূর্তিটি লন্ডনে সথেবি সংস্থার নিলামে বিক্রি হয় ১০ কোটি ৩৭ লাখ ডলারে। এটি বর্তমানে ব্রাজিলের লিলি সাফ্রা-র সংগ্রহে রয়েছে। ১৯৬০ সালে সৃষ্ট এই মূর্তিটিকে বিংশ শতাব্দীর সুইশ শিল্পকলার শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলোর মধ্যে ধরা হয়ে থাকে। আজও ১০০ সুইস ফ্রার নোটে জাকোমেত্তির এই শিল্পকর্মের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]