শিরোনাম
রেস্তোরাঁয় খাবারের শেষে মৌরি দেয়ার কারণ
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০১৭, ১৩:৩২
রেস্তোরাঁয় খাবারের শেষে মৌরি দেয়ার কারণ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রেস্তোরাঁয় বা খাবার হোটেলে গিয়ে আপনি ভরপেট খাওয়া-দাওয়া সেরে যখন ওয়েটারকে ডেকে বললেন বিল দিতে। দেখা গেল বিল দেয়ার সময়ে ওয়েটার বিলের সঙ্গে দিয়ে গেল মৌরিতে ভর্তি একটি প্লেট। আর তখন আপনি সহাস্যে বিল মিটিয়ে এক চিমটি মৌরি চিবোতে চিবোতে বেরিয়ে আসলেন রেস্তোরাঁ থেকে। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন রেস্তোরাঁয় খাবার শেষে মৌরি কেন দেয়া হয়?


যদি রেস্তোরাঁর কোনও কর্মচারীকে ডেকে জিজ্ঞাস করা হয় তাহলে এর উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আসলে বহুকাল থেকেই এ ভারতীয় উপমহাদেশে কিছু খাওয়ার পরে মৌরি চিবনোর রীতি প্রচলিত রয়েছে। প্রাচীন যুগেই ভারতীয় বৈদ্যরা আবিষ্কার করেছিলেন খাবারের পর মৌরি খাওয়ার বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে।


মৌরির উপকারিতা


মৌরি মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর। মৌরিতে এমন কিছু উপাদান থাকে যা নিজস্ব সুগন্ধের জোরে মুখ থেকে খাবারের গন্ধ (তা সে সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ যা-ই হোক না কেন) দূর করতে সক্ষম।


খাদ্য দ্রুত হজম ও কোষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণে মৌরী অত্যন্ত সহায়ক। মৌরি চিবোলে মুখ থেকে যে লালা ক্ষরিত হয় তা হজমে সাহায্য করে। পাশাপাশি মৌরিতে যে ফাইবার থাকে তা যেমন খাদ্যকে পাচন তন্ত্র বেয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে তেমনই তা কোষ্ঠবদ্ধতার ওষুধ হিসেবেও কার্যকর। আসলে মৌরির এই গুণের কথা জেনেই, খাওয়ার শেষে মৌরি মুখে দেয়ার রীতি চালু হয়েছিল।


মৌরির এই কার্যকারিতা আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানেও স্বীকৃত। যে কারণে এখনও ইসবগুল বা পেট পরিষ্কার রাখার ওষুধ তৈরিতে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মৌরি। হোটেল রেস্তোরাঁয় অবশ্য খাওয়ার শেষে মৌরি পরিবেশন করা হয় নিছক রীতি মেনে। কিন্তু এই রীতি অনুসরণের মাধ্যমেই রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ যে আমাদের সুস্থতার দিকে পরোক্ষে নজর রাখছেন এটা জেনে নিশ্চই আপনার ভালো লাগছে।


আসুন মৌরির আরো কিছু উপকারিতার কথা জেনে নেয়া যাক।


মৌরিতে থাকা খাদ্যআঁশ কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।


মৌরি পাতার নির্যাস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।


নিয়মিত মৌরি খেলে স্ট্রোক এবং হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।


খাওয়ার পর নিয়মিত এক চা চামচ মৌরি খেলে হজম শক্তি এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেও এটি কার্যকর।


শরীরের ওজন কমাতে এবং শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। মৌরির তেল মালিশ করলে হাঁড়ের গিরার ব্যথা কমে।


মৌরিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভনয়েড যা ক্যানসার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। তাই নিয়মিত খাবার প্রস্তুতে মৌরি ব্যবহার করতে পারেন।


রাতে ঘুমানোর আগে আধা চা চামচ মৌরি গুড়া কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যাবে।


মুখের ভেতরের ত্বকে জ্বালা এবং ঠাণ্ডা সারাতে সাহায্য করে।


মৌরির পাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করে এর ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সঙ্গে নিলে অ্যাজমা এবং ব্রঙ্কাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


সামান্য ঘি বা মাখন দিয়ে মৌরি ভেজে বোতলে ভরে রাখুন। যখন ধূমপানের ইচ্ছা জাগবে আধা চা চামচ চিবান, নেশা কমে যাবে।


সমপরিমাণ ভাজা মৌরি এবং চিনি গুঁড়া দুই চামচ ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার দুই ঘণ্টা পর পর খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়। পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং পেট কামড়ের জন্য এটি উপকারী।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com