শিরোনাম
কাশ্মীরে মুসলিমদের ‘পণ্ডিত’ উপাধির কারণ
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০১৭, ১২:১৭
কাশ্মীরে মুসলিমদের ‘পণ্ডিত’ উপাধির কারণ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতশাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের জামিয়া মসজিদের সামনে যে পুলিশ অফিসারকে উত্তেজিত জনতা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে, তাঁর নাম ছিল মুহম্মদ আয়ুব পণ্ডিত।


তাঁর মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার পরে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন তিনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে নামের সঙ্গে হিন্দু পদবি কেন? অনেকেই বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে মন্তব্য করেছিলেন যে তাঁর নাম হয় ভুল করে লেখা হয়েছে, অথবা তিনি আসলে একজন হিন্দু ছিলেন।


এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে অকাশ্মীরিদের কাছে অজানা বেশ কিছু তথ্য।


‘পণ্ডিত’ পদবিযুক্ত সব কাশ্মীরিদেরই হিন্দু বলে ভুল করে থাকেন ওই রাজ্যের বাইরের অনেক মানুষ।


আসলে মুসলমান নাম আর পদবির শেষে ‘পণ্ডিত’ ব্যবহার করেন যে সব কাশ্মীরি, তাঁরা আসলে ব্রাহ্মণ ছিলেন। কোনও এক সময়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এঁদের পূর্বপুরুষরা।


উল্লেখ্য, মুহম্মদ দেন ফৌক তাঁর বিখ্যাত কাশ্মীরি জাতির ইতিহাসে ‘পণ্ডিত শেখ’ নামে একটা গোটা পরিচ্ছেদই রেখেছেন ।


ওই পরিচ্ছেদে বলঅ হয়েছে ‘কাশ্মীরে ইসলাম আসার আগে সবাই হিন্দু ছিলেন। এঁদের মধ্যে হিন্দু ব্রাহ্মণরাও ছিলেন। অন্যান্য জাতিরও বাস ছিল কাশ্মীরে। ব্রাহ্মণদের একটা অংশ শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আদিকাল থেকে। মূলত শিক্ষা দিতেন এঁরা।’


মুহম্মদ দেন ফৌক লিখেছেন, ‘ব্রাহ্মণদের ওই অংশ, যাঁরা শিক্ষা দিতেন, তাঁরাই যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখনও শিক্ষাদানের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে নিজেদের ‘পণ্ডিত’ পদবিটা ব্যবহার করতে থাকেন। এখনও ওই অংশের মানুষ নিজেদের পণ্ডিত পদবিটা ব্যবহার করেন। এঁদের শেখ-ও বলা হয়ে থাকে। মুসলমান পণ্ডিতদের বাস মূলত গ্রামীণ এলাকাগুলোতে।’


কাশ্মীরের বর্ষীয়ান লেখক ও ইতিহাসবিদ মুহম্মদ ইউসুফ টেঙ বলেন, এখন মুসলমান পণ্ডিতদের সংখ্যাটা হাজার পঞ্চাশেকের মতো হবে। তাঁর কথায়, ‘কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হিন্দু বলা হত না- তাঁদের শুধুই পণ্ডিত বলে সম্বোধিত করা হত। পণ্ডিত শব্দের অর্থ ব্রাহ্মণ, বিশেষ করে ব্রাহ্মণ শিক্ষক। এঁরা কাশ্মীরের মূল বাসিন্দা, বহিরাগত নন। কাশ্মীরি মুসলমানদের অনেকের পদবি ভাট বা বাট। এরাও ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলমান হয়েছেন। অনেক পণ্ডিতও ভাট পদবি ব্যবহার করেন।’


টেঙ আরও বলেন, কিছু ধর্মান্তরিত মুসলমানের নামে ‘পণ্ডিত’ পদবি ব্যবহার করা নিয়ে কাশ্মীরের অন্যান্য মুসলমান কখনই কিন্তু কোনও ধরনের আপত্তি তোলেননি।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com