দিনাজপুরের দিনার সাথে ফরিদপুরের ফরিদের বিয়ে হয়। বিয়েতে কিশোরগঞ্জের কিশোররা মিলে নেত্রকোণার কোণাতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ঠাকুরগাঁওয়ের ঠাকুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্রাহ্মণ পরিবার, রাজবাড়ির রাজ পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। তারা টাঙ্গাইল থেকে টাঙ্গাইল শাড়ী উপহার দেয়। এই বিয়েতে কাজী ছিল মুন্সিগঞ্জে মুন্সি। বিয়েতে সাতক্ষীরার সাত পরিবার, চাঁদপুরের চাঁদ মিয়া ও গোপালগঞ্জের গোপাল উপস্থিত ছিল। লালমণিরহাট বাজার থেকে বরপক্ষ লালশাড়ী কিনে এনেছিল। মৌলভীবাজারের মৌলভী ভোলা থেকে ভুল করে বরিশালের বড়ি নিয়ে এসেছিল।
হবিগঞ্জের নাম দেখে জামাইয়ের হবি (শখ) হয়েছিল, ঢাকা থেকে টাকা কামাই করে গাইবান্ধা থেকে গাই (গাভী) এবং বান্দরবান থেকে বান্দর (বানর) কিনে সুনামগঞ্জে সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছিল। সে জয়পুরহাটের মানুষের মন জয় করে কুমিল্লা থেকে কুমির নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিল।
পঞ্চগড়ের পঞ্চদানব ময়মনসিংহ থেকে সিংহ এনে রংপুরের রং দিয়ে সাজিয়ে বউকে ভয় দেখিয়েছিল। পরে বউ পাবনার পাগলা গারদে পাগল অবস্থায় ভর্তি হয়। পাগল হয়ে যাওয়ার পর সে সিলেটের শ্লেট এবং ঝালকাঠির কাঠি দিয়ে বাজনা বাজাচ্ছিল এবং খাগড়াছড়ির মতো হাত, পা ছড়াছড়ি করছিল। তা দেখে তার শ্বশুর মানিকগঞ্জে মানিককে নিয়ে পিরোজপুরের ডাক্তারকে খবর দিলেন।
ডাক্তার বললেন, তাকে ঝিনাইদের জ্বিনে ধরেছে। তাই ডাক্তর তাকে চুয়াডাঙ্গার কমিরের চুয়াল দিয়ে ওষুধ খাওয়াতে বললেন। পরে জামাই কুষ্টিয়া থেকে মুষ্টি ভিক্ষা করে বউয়ের অসুখ ভাল করল। বেশ কয়েকদিন পর তাদের ঘরে একটি মেয়ে জন্ম নেয়। নীলফামারীর নীলা ও জামালপুরের জামাল মেয়েটিকে নাম দেয় লক্ষ্ণীপুরের লক্ষ্ণী।
মেয়ের জন্য তার বাবা খুলনা থেকে দোলনা কিনে আনল। মেয়েটি প্রত্যেক দিন ফেনীর ফেন খাওয়াত। ফেন খেয়ে মেয়ে বলত, মায়ের হাতে যশোরের যশ আছে। মেয়ের ইচ্ছা হল মাগুরার মাগুর খাওয়ার। তার বাবা গাজীপুরের গাজীর কাছ থেকে মাগুর কিনে আনার জন্য গেল। গাজী বলল, সে শেরপুরের শের হিসেবে বিক্রি করবে।
কুড়িগ্রামের কুড়ি টাকা দিয়ে তার বাবা মাগুর কিনে আনল। মেয়ে বাগেরহাটে বাগ (বাগান) করার সময় তার হাত কেটে ফেলে। হাত থেকে রাঙ্গামাটির মত লাল রক্ত মাটিতে পড়তে থাকে। মেয়েকে তাড়াতাড়ি নোয়াখালীর খালি গাড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি নাটোরের নাট ঢিলে হয়ে যায়, ফলে সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে।
এতে ভৈরবে মানুষের রব পড়ে যায়। তাকে নারায়ণগেঞ্জের নারায়ণচন্দ্রের কাছে নিয়ে গেল, সে বলে তাকে কক্সবাজারের কক্স ইজারা দিতে হবে। এবং চট্রগ্রামের চটি জুতা পরাতে হবে। জুতার রং থাকবে মাদারীপুরের মাদ রং।
জুতা পরে মেয়ে নওগাঁ শহরের গাঁয়ে গেল। আল্লাহ ও মেহেরপুরের লোকদের মেহেরবানীতে তার পা ভাল হয়ে যায়। মা-বাবা শরীয়তপুরের শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বরগুনার এক বরের সাথে মেয়ের বিয়ে ঠিক করল। নরসিংদীর নরেরা আগে থেকে কথা দিয়েছিল, তারা বিয়ের সময় পটুয়াখালীর পটু নামে একটি ছাগল উপহার দিবে। সে ছাগলটিকে তার নড়াইল এর মতবেশি নড়াচড়া করতে দিবে না। ছাগলটিকে বগুড়া থেকে এনে চালের গুড়া খাওয়াবে। এসময় পটু সম্পর্কে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবদের মত চাপা মারছিল। এরপর তাদের বিয়ে কোন ঝামেলা ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছিল। বলতে পার? কার কার বিয়ে হল, বরযাত্রী কারা এল এবং উপহার কি কি দিল?
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]