
ভারতের রাজস্থানের জয়সলমীরের ঢোলিয়া গ্রামের বিষ্ণোই সমাজের বাসিন্দা শিব সুভাগ মঞ্জু’র পরিবার একটি হরিণের শাবককে নিজের সন্তানস্নেহে বড় করে তুলেছিল। মা হরিণের মৃত্যুর পর তার শাবকে ৯ মাস লালন-পালন করেছে তারা। তারপর, অনুষ্ঠান করে নিজের কন্যার মতো দিলেন বিদায়ও। হরিণটি বড় হওয়ার পর, পরিবারের তরফে একটি রাত জাগরণের পাশাপাশি ভোজনের ব্যবস্থাও করা হয়। তারপরই সেই হরিণটিকে রেসকিউ সেন্টারে পাঠান তাঁরা। আয়োজন করে হরিণটিকে অন্যারূপে বিয়ে দিয়ে বিদায় করেছেন সেই পরিবারটি।
প্রায় নয় মাস আগে সানভাদা গ্রামের কাছে এক হরিণ একটি বাচ্চার জন্ম দেয়। কিন্তু, প্রসবের ১৫ দিন পরেই, ওই হরিণটিকে কুকুর আক্রমণ করে। তারপরেই সেটি মারা যায়। এমতাবস্থায়, ঢোলিয়ার বাসিন্দা শিব সুভাগ ওই শিশু হরিণটিকে বাঁচাতে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন। নাম রাখা হয় “লরেন্স”। শিব সুভাগ এবং তাঁর স্ত্রী শিব সোনিয়া হরিণের শাবকটিকে নিজেদের সন্তানস্নেহে পালন করতে থাকেন। এমনকি, সেটিকে গরুর দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি কাজুবাদামও খাওয়ানো হত। শিব সুভাগ এবং সোনিয়া হরিণের এই শাবকের নাম রেখেছিলেন “লরেন্স”। শিব সুভাগের পরিবারের প্রতি হরিণটি খুব অনুরক্ত হয়ে পড়েছিল। সারাদিন পরিবারের সঙ্গেই থাকত সে। পাশাপাশি, তার নাম ধরে ডাকলেই ছুটে আসত শাবকটি। লরেন্স সারাদিন খেলত শিব সুভাগের সন্তান শিবসুচি, শিব সাবিত্রী, শিব শিল্প এবং শিব শৈলেন্দ্রের সঙ্গে।
লরেন্সের বিয়ে প্রসঙ্গে শিব সুভাগ জানান, “হরিণের শাবকটি আর মানুষকে ভয় পায় না। শিশু থেকে শুরু করে বড়দের হাতেও দুধ পান করত সে। একই সঙ্গে প্রায় নয় মাস পরিচর্যার পর সুস্থ রয়েছে শাবকটি। সে বাড়ি থেকে বেরোলেই কুকুরের আতঙ্ক কাজ করত আমাদের মনে। এমতাবস্থায়, আমরা বাড়িতেই রাত জাগরণের আয়োজন করে লরেন্সকে কন্যারূপে বিদায় করি। লরেন্সকে যোধপুরের লোহাওয়াতের রেসকিউ সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজস্থানের বিষ্ণোই সমাজের অধিবাসীরা পশু-পাখিদের সাথে পরিবারের সদস্যের মতো আচরণ করেন । বিষ্ণোই সমাজের গ্রামে হরিণকেও পরিবারের সন্তানের মত লালন-পালন করা হয়। তাই, বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের প্রতি বিষ্ণোই সমাজের অবদান কার্যত তুলনাহীন।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]