শিরোনাম
‘এক্স-রে গার্ল’
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৭, ১৩:১৫
‘এক্স-রে গার্ল’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে এক্স রশ্মি ব্যবহার করে রোগীর শরীরের অভ্যন্তরের ছবি তোলা হয় এক্স-রে মেশিনে। কিন্তু রাশিয়ার ৩০ বছর বয়সী নাতাশা (প্রকৃত নাম নাতালিয়া) ডেমকিনার দাবি, এক্স-রে মেশিন ছাড়াই তিনি মানুষের শরীরের অভ্যন্তরের অবস্থা দেখে নিতে পারেন। অর্থাৎ ঠিক এক্স-রে মেশিনের মতোই কাজ করে তার চোখ।

 

মস্কোর স্টেট স্টেমাটোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির ডাক্তারির শিক্ষার্থী নাতাশা জানান, ১০ বছর বয়সে তিনি প্রথম আবিষ্কার করেন তার এই অদ্ভুত ক্ষমতা। একদিন তার সামনে তার মা তাতিয়ানা দাঁড়িয়েছিলেন, হঠাৎই ছোট্ট নাতাশার ঘোর এসে যায়। সে খেয়াল করে, মায়ের শরীরের অভ্যন্তরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে।

 

পাড়া-প্রতিবেশীরা এই অলৌকিক ক্ষমতার খবর শুনে ভিড় জমাতে থাকেন নাতাশাদের বাড়িতে। ক্রমশ নাতাশার খবর ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৩ সালে রাশিয়ার সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনের কল্যাণে পুরো দেশ জেনে যায় 'এক্স-রে গার্ল' নাতাশার কথা।

 

আন্তর্জাতিক মিডিয়ারও নজর পড়ে তার দিকে। তিনি পাড়ি জমান ব্রিটেন। বিভিন্ন টেলিভিশন শো’তে নিয়ে যাওয়া হয় নাতাশাকে। ক্যামেরার সামনে বারবার পরীক্ষা দিতে হয় তাকে। প্রায় সব পরীক্ষাই নির্বিঘ্নে পাস করেন নাতাশা। একটি টেলি-শো’তে গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত এক নারীর দিকে তাকিয়েই নাতাশা বলে দেন, তার শরীরের কোন কোন হাড় ভেঙেছে এবং শরীরের ভেতরে কোথায় কোথায় আটকে রয়েছে ধাতব।

 

ব্রিটেন সফর শেষে নাতাশাকে নেয়া হয় যুক্তরাষ্ট্র। সেখানেও নিজের ক্ষমতার পরীক্ষা দেন নাতাশা।  

 

এদিকে নাতাশার এই অলৌকিক ক্ষমতার কারণ সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা নেই নাতাশার কাছে। বিজ্ঞানীরাও পরীক্ষা করে তার শরীরে আর পাঁচটা মানুষের চেয়ে অতিরিক্ত ক্ষমতার কোনো লক্ষণ পাননি।

 

তবে নাতাশা যে ব্যর্থও হননি, তা নয়। আর সেসব বিষয়কে কেন্দ্র করেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। ব্রিটেন-সফরের সময় টেলি-ফিজিশিয়ান ক্রিস স্টিলের দিকে তাকিয়ে নাতাশা বলেছিলেন, ক্রিসের কিডনিতে পাথর জমেছে, এবং তার বর্ধিত লিভারের সমস্যা রয়েছে। পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায়, ক্রিস সম্পূর্ণ সুস্থ। যুক্তরাষ্ট্রে করা নাতাশার কিছু ডায়েগনোসিসও পরবর্তীতে ভুল বলে প্রমাণিত হয়।  

 

অবশ্য নাতাশার দাবি, তার যেসব ডায়গনোসিস ভুল বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে তিনি রোগীকে পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাননি।  

 

যাই হোক, এসব বিতর্ক নাতাশার খ্যাতিকে কলঙ্কিত করতে পারেনি। বর্তমানে তিনি মস্কোয় ‘সেন্টার অফ স্পেশাল ডায়গনিস্টিকস অফ নাতালিয়া ডেমনিকা’ নামরে একটি ডায়গনস্টিক চালাচ্ছেন। সেখানে তিনি এবং তার মতো অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষদের দ্বারা রোগীদের পরীক্ষা ও চিকিৎসা করা হয়। সেই চিকিৎসা কেন্দ্রের ওপর যথেষ্ট আস্থা রয়েছে সাধারণ মানুষের। প্রতিদিন বহু মানুষ সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।  

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com