হলুদ ছাড়া মাছের ঝোল, মাংস রাঁধা কঠিন। ডালেও হলুদ না দিলে নয়। দু’একটা নিরামিষ রান্না ছাড়া অন্য তরি-তরকারিতে হলুদ দেয়াটা আমাদের অভ্যেস। শুধু এই অভ্যেস যে স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা উপকারী, সেটা অনেকেরই অজানা। জেনে নেয়া যাক হলুদের উপকারগুলো।
হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন নামে এক উপাদান, যা একাই একশোর বেশি রোগ সারাতে পারে। হাজারেরও বেশি বছর ধরে এশিয়ায় হলুদের ব্যবহার শুধু মশলা হিসাবে নয়, ওষুধি হিসাবেও। ভিটামিন ই বা ভিটামিন সি-র তুলনায় পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি কার্যকরী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কারকিউমিন শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
আর্থ্রাইটিস, অ্যাজমা, হার্টের রোগ, অ্যালঝাইমার, ডায়াবেটিস এমনকী ক্যানসার প্রতিরোধেও কারকিউমিনের উপকারী গুণ কাজে আসে বলে দাবি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের।
কারকিউমিন আছে বলেই লিভারের রোগে হলুদ খেতে বলা হয়। কাঁচা হলুদের রস ৫ ফোঁটা থেকে শুরু করে বয়স অনুপাতে এক চা চামচ পর্যন্ত চিনি বা মধু মিশিয়ে খেলে লিভারের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
কাঁচা হলুদের রস সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালবেলা খালি পেটে খেলে কৃমি রোগ সারে।
কফ জমে থাকলে, গলা ফোলা বা গলা জ্বালায় গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খেয়ে দেখুন। উপকার পাবেনই।
কারকিউমিনের অ্যাস্পিরিনের গুণের জন্য মানসিক অবসাদ দূর করতে কাজে আসে। এর প্রয়োগে ভাস্কুলার থ্রম্বোসিস আক্রান্ত রোগীর রক্তের ঘনত্বের মাপ নিয়ন্ত্রণে আসে।
হলুদের অন্য এক উপাদান পলিফেনল চোখের ‘ক্রনিক অ্যান্টিরিয়ার ইউভেইটিস’সারাতে কর্টিকোস্টেরয়েডের কাজ করে।
তবে, আয়ুর্বেদে হলুদের গুণাগুণ নিয়ে এই উচ্ছ্বাসের সত্যতা কতটা, তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এখনও।
যদি এত গুণ না-ও থাকে, রান্নায় রং আনতে হলুদ গুঁড়োর কোনো জুড়ি আছে কী? বিভিন্ন জিনিস সংরক্ষণের জন্যও হলুদ ব্যবহার করা হয়। পনীরে হলুদ মাখিয়ে রাখলে অনেক দিন ভাল থাকে।
কীটনাশক হিসাবে হলুদ কাজে দেয়। অ্যান্টিসেপটিক গুণের জন্য কাটা বা পোড়া জায়গায় হলুদ বাটা লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
প্রসাধনী হিসাবে হলুদের ব্যবহার বহু প্রাচীন। সূর্যালোকে গায়ে পোড়া ভাব হলে কাঁচা হলুদ বাটার সঙ্গে দই মিশিয়ে লাগান। রাতে ঘুমনোর আগে হলুদ দেওয়া দুধ খেলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে। জীবনীশক্তি বাড়ানোর জন্য হলুদ চা খাওয়া যায়। চার কাপ জলে এক চা চামচ হলুদ দিয়ে মিনিট দশেক ফোটান। এবার মধু মিশিয়ে চুমুক দিন কাপে।
তাছাড়া পুজো-পার্বন হোক বা বিয়ের মতো শুভ অনুষ্ঠান—হলুদ লাগবেই।
বিবার্তা/অনামিকা/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]