ভারতীয় উপমহাদেশের নারীদের মধ্যে চুড়ি পরার রীতি বহুদিন থেকেই প্রচলিত। প্রাচীন হিন্দু সমাজেও যে এই প্রথা প্রচলিত ছিল এমন প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু কেন চুড়ি পরেন নারীরা? এই প্রশ্নের কোনও সুস্পষ্ট উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে ভারতীয় সমাজ-সংস্কৃতির অন্দরে প্রচলিত বিশ্বাস এবং কিছু কিছু শাস্ত্রোক্ত নির্দেশ বিশ্লেষণ করলে এই প্রথা সম্পর্কে নানা চমকপ্রদ তথ্য উঠে আসে। এখানে তেমনই কয়েকটির হদিশ রইল:
১. প্রথমেই বলে রাখা ভাল, এই রীতির সঙ্গে মহিলাদের বিবাহ বা তাঁদের ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই, অন্তত আধুনিক সমাজে তো নেই-ই। যাঁরা বিবাহিত নন, তাঁরাও চুড়ি পরেন। অহিন্দু নারীরাও চুড়ি পরতে ভালবাসেন। এখনকার দিনে চুড়ি একটি অলঙ্কার হিসেবেই মূলত গ্রাহ্য।
২. অনেকে বলেন, যেহেতু মেয়েরা দৈহিক দিক থেকে কিছুটা দুর্বল সেহেতু চুড়ি নাকি তাঁদের শারীরিক শক্তি প্রদান করে। এবং বর্তমান সমাজে অনেক মেয়ে যেহেতু চুড়ি পরতে অভ্যস্ত নন, সেহেতু তাঁরা নাকি নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। বলা বাহুল্য, এই বিশ্বাসের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
৩. বলা হয়, একই সঙ্গে রুপো আর সোনার চুড়ি যদি পরা যায়, তা হলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। রুপোর সঙ্গে সোনার ঘর্ষণে যে শক্তি উৎপন্ন হয়, সেই শক্তি নাকি শরীরে প্রবেশ করে এবং নারীদের হাড় শক্ত হতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এই স্বর্ণ ও রূপার ভস্মকে শরীরের পক্ষে উপকারী বলে মনে করা হয়।
৪. এছাড়া এমন বিশ্বাসও ভারতীয় সমাজে প্রচলিত রয়েছে, বিবাহিত নারীরা চুড়ি পরলে তাঁদের স্বামীদের আয়ু বৃদ্ধি পায়।
৫. কাঁচের চুড়ির অন্য ধরনের উপকারিতার কথা বলা হয়। বলা হয়, কাঁচের চুড়ির যে টুংটাং শব্দ তা নাকি নেতিবাচক শক্তিকে বাড়ি থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।
৬. এছাড়া এই শব্দ বাড়িতে ঈশ্বরের কৃপা আকর্ষণ করতেও সাহায্য করে, এমনটাও প্রচলিত বিশ্বাস।
৭. চুড়ির টুংটাং শব্দ নাকি নারীদের কুনজর থেকে রক্ষা করে।
৮. প্লাস্টিকের চুড়িতে এই জাতীয় শব্দ হয় না বলেই বয়স্কা নারীরা অনেক সময়ে তরুণীদের প্লাস্টিকের চুড়ি পরতে বারণ করেন।
৯. প্রাচীন ভারতীয় সমাজে যখন পুরুষ ও নারীদের প্রকাশ্য মেলামেশা তেমন ছিল না, তখন চুড়ির টুংটাং শব্দই বাড়িতে নারীদের উপস্থিতি জানান দিত।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]