বৃষ্টিই যেন বারংবার ভিলেন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে। সেই হাইভোল্টেজ ম্যাচে শেষমেশ পাকিস্তানকে ৮৯ রানে হারাল বিরাট কোহলি বাহিনী। ভারতের বিপক্ষে এবারও বিশ্বকাপের গেরো কাটাতে পারল না পাকিস্তান।
ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে রবিবার ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৮৯ রানে জিতেছে ভারত। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাত ম্যাচের সবগুলোতেই জিতল দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।
এদিন প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৬ রান বানায় ভারত। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধিতে রান কমিয়ে পাকিস্তানের সামনে ৩০২ রানের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। পরে আবার বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় ২১২ রানেই থামানো হয় পাক বাহিনীকে।
শিখর ধাওয়ান চোট পাওয়ার পর ভারতের ওপেনিং লাইন আপ নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। কিন্তু সেই পরীক্ষায় রোহিত শর্মার পার্টনার হিসেবে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন লোকেশ রাহুল। ৭৮ বল খেলে লোকেশ এদিন ৫৭ রান করেছেন। মেরেছেন তিনটি চার ও দুটি ছক্কা। ১৩৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েছিলেন রোহিত ও রাহুল।
আর হিটম্যানের তো জবাবই নেই। রাজার হালে সেঞ্চুরি করেছেন এদিন। ১১৩ বলে ১৪০ রানের একটি নায়কোচিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন রোহিত। ১৪টি চার এবং তিনটি ছক্কা দিয়ে সাজানো তার এই ইনিংস।
৪৬ ওভার ৪ বলে ফের একবার বৃষ্টি শুরু হওয়ার কারণে মাঝপথে খেলা থেমে যায়।
ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন। ৬৫ বলে ৭৭ রান করে আমিরের বলে আউট হয়ে যান বিরাট। যদিও সেটি আউট ছিল না। কিন্তু ব্যাটে বল লাগার শব্দভ্রমে প্যাভিলিয়নের দিকে এগিয়ে যান বিরাট।
ধোনি এদিন ভক্তদের কিছুটা নিরাশই করেছেন। মাত্র ১ রান করেই তিনি আউট হয়ে যান। ১৯ বলে ২৬ রানের একটি ঝড়ঝড়ে ইনিংস উপহার দিয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। বিজয় শংকর ১৫ রান এবং কেদার যাদব ৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষমেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৬ রান করে বিরাট বাহিনী।
বোলিংয়ে একমাত্র মোহাম্মদ আমিরই পাকিস্তানের হয়ে বড় চমক দেখান। ১০ ওভার বল করে ৪৭ রান দিয়ে আমির তিনটি উইকেট তুলে নেন। আমির ছাড়া হাসান আলি এবং ওয়াহাব রিয়াজ একটি করে উইকেট তুলে নেন।
ব্যাট শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান। বিজয় শংকরের বলে আউট হয়ে যান ওপেনার ইমাম-উল-হক। ১৮ বল খেলে ৭ রান করেন ইমাম। আর তারপরই পার্টনারশিপ জমিয়ে দিয়েছিলেন ফকর জামান এবং বাবর আজম। ৭৫ বল খেলে ফকর করেন ৬২ রান এবং বাবরের ব্যাট থেকে উঠে আসে ৪৮ রান।
ফকর ও বাবর আউট হতেই একের পর এক উইকেট হারাতে শুরু করে পাকিস্তান। অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ মাত্র ১২ রান করেই আউট হয়ে যান। তারপরে ইমাদ ওয়াসিম ও শাদাব খান ম্যাচের হাল কিছুটা ফেরাতে শুরু করলেও ততক্ষণে ফয়সালা হয়ে গিয়েছে ম্যাচের। ইমাদ ওয়াসিম করেন ৪৬ রান এবং শাদাব খানের ব্যাটে ২০ রান উঠে আসে।
পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে রান তখন ২১২। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস অনুযায়ী ভারত ম্যাচ তখন পকেটে পুড়ে নিয়েছে।
২ ওভার ৪ বল করার পরই ভুবনেশ্বর কুমারের পায়ে চোট লাগে। পরের ম্যাচগুলোয় ভুবি প্রায় অনিশ্চয় বললেই চলে! ৮ ওভার বল করে কোনো উইকেট নিতে পারেননি বুমরা। তবে দাপটের সঙ্গে বোলিং করে গিয়েছেন বিজয় শংকর, হার্দিক পান্ডিয়া ও কুলদীপ যাদব। তিনজনেই দুটি করে উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের পরাজয় একরকম নিশ্চিতই করে দিয়েছিলেন এই তিন তরুণ তুর্কি।
সেই ১৯৯২ সালের পর থেকে আজ অবধি পর পর সাত বার পাকিস্তানকে হারাল ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ৩৩৬/৫ (রাহুল ৫৭, রোহিত ১৪০, কোহলি ৭৭, পান্ডিয়া ২৬, ধোনি ১, শঙ্কর ১৫*, কেদার ৯*; আমির ১০-১-৪৭-৩, হাসান ৯-০-৮৪-১, ওয়াহাব ১০-০-৭১-১, ওয়াসিম ১০-০-৪৯-০, শাদাব ৯-০-৬১-০, মালিক ১-০-১১-০, হাফিজ ১-০-১১-০)
পাকিস্তান: (লক্ষ্য ৪০ ওভারে ৩০২) ৪০ ওভারে ২১২/৬ (ইমাম ৭, ফখর ৬২, বাবর ৪৮, হাফিজ ৯, সরফরাজ ১২, মালিক ০, ওয়াসিম ৪৬*, শাদাব ২০*; ভুবনশ্বের ২.৪-০-৮-০, বুমরাহ ৮-০-৫২-০, শঙ্কর ৫.২-০-২২-২, পান্ডিয়া ৮-০-৪৪-২, কুলদীপ ৯-১-৩২-২, চেহেল ৭-০-৫৩-০)
ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ভারত ৮৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা
সূত্র: এই সময়
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]