দুর্দান্ত জয় দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ ৮ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়রা ১৯৬ রানে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ডকে।
এই শুধু জয় বা জয়ের ব্যবধানই নয়, এই ম্যাচের প্রাপ্তি ব্যাটে-বলের পারফরম্যান্স ও শরীরী ভাষার দাপটও। আয়ারল্যান্ড সফর দিয়ে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ অভিযানের পথে হলো আত্মবিশ্বাসী শুরু।
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের ক্যাসল এভিনিউতে মঙ্গলবার টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৬৫ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছিলেন দুই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল ও শাই হোপ। দু’জনই সেঞ্চুরি করেছিলেন।
কিন্তু পিঠের ইনজুরির কারনে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার সুযোগ হাতছাড়া হয় ক্যাম্পবেলের। তাই হোপের সাথে ইনিংস শুরু করেন সুনীল অ্যামব্রিস।
ইনিংসের শুরুটা ভালোই করেন হোপ-অ্যামব্রিস। ৯৮ বলে ৮৯ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৭তম ওভারে অ্যামব্রিসকে ৩৮ রানে থামিয়ে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম উইকেট নেন বাংলাদেশের অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। পরের ওভারে অন্য প্রান্তে ক্যারিবীয় শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিন নম্বরে নামা ড্যারেন ব্রাভোকে ১ রানে থামিয়ে দেন সাকিব।
এরপর রোস্টান চেজকে নিয়ে ১১৫ রানের জুটি গড়েন হোপ। এই জুটিতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। তবে ৪১তম ওভারে এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দু’জনকেই শিকার করেন তিনি। ৫১ রান করা চেজকে প্রথমে এবং ১০৯ রান করা হোপকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান ম্যাশ। ১৩২ বল মোকাবেলা করে ১১টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন হোপ।
হোপ-চেজের ব্যাটিং-এ ভালো অবস্থায় পৌঁছালেও মাশরাফির জোড়া আঘাতে দলীয় ২০৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর বাংলাদেশ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং-এ ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬১ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ পরের দিকে দুই অংকের কোটা শুধুমাত্র স্পর্শ করতে পেরেছেন জনাথন কার্টার ও অ্যাশলে নার্স। নার্স ১৯ ও কার্টার ১১ রানে ফিরেন। বাংলাদেশের মাশরাফি ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত শুরু করেন বাংলাদেশের তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ২৫ ওভারে ১৪৪ রান যোগ করেন তারা। ৭৩ রান তুলে ফিরেন সৌম্য। তবে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন তামিম। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। ১১৬ বলে ৮০ রান করেন তামিম। তার ইনিংসে সাতটি চার ছিলো। সৌম্যর ৬৮ বলের ইনিংসে ছিলো নয়টি চার ও একটি ছক্কা।
দলীয় ১৯৬ রানে দুই ওপেনার ফিরলেও, পরবর্তীতে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব ও মুশফিকুর। সাকিব তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৬১ বলে অপরাজিত ৬১ রান করেন। মুশফিকুর ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন।
এদিকে এমন পারফরম্যান্সের পরেও ঠিক সন্তুষ্ট হতে রাজি নন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি বরং মনোযোগ দিতে চান পরের ম্যাচের দিকে। যাতে করে ফাইনালে খেলার পথ সহজ হয় তার দলের।
তাই তো ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ফাইনালে যেতে হলে আমাদের আরো ভালো এবং শক্তভাবে ক্রিকেট খেলতে হবে। তাই সামনের ম্যাচগুলোর দিকে চেয়ে আছি।
টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার (৯ মে)। প্রতিপক্ষ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৬১/৯ (হোপ ১০৯, আমব্রিস ৩৮, ব্রাভো ১, চেইস ৫১, কার্টার ১১, হোল্ডার ৪, ডাওরিচ ৬, নার্স ১৯, রোচ ১, কটরেল ৪*, গ্যাব্রিয়েল ০*; সাইফ ১০-১-৪৭-২, মাশরাফি ১০-০-৪৯-৩, মুস্তাফিজ ১০-০-৮৪-২, সাকিব ১০-০-৩৩-১, মিরাজ ১০-০-৩৮-১)।
বাংলাদেশ: ৪৫ ওভারে ২৬৪/২ (তামিম ৮০, সৌম্য ৭৩, সাকিব ৬১*, মুশফিক ৩২*; কটরেল ৭-০-৪৭-০, রোচ ৭-০-৩০-০, গ্যাব্রিয়েল ১০-০-৫৮-১, হোল্ডার ৪-০-২৭-০, নার্স ৭-০-৪৬-০, চেইস ১০-০-৫১-১)।
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শেই হোপ
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]