জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ২৮২ রানে আটকানো গেলেও ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে স্বাগতিকদের ১৯ রানে ৪ উইকেট সাজঘরে ফিরে যায়। তারপর ৪৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে পুরোপুরি ধুঁকছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শেষ খবর পর্যন্ত ৫৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে টাইগাররা।
নিজেদের প্রথম ইনিংসের শুরুতেই অশুভ ভূত চেপে বসে বাংলাদেশের ঘাড়ে। একের পর এক বেখেয়ালি শট খেলে ফেরেন টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। সূচনালগ্নেই ফিরে যান ইনফর্ম ইমরুল কায়েস। টেন্ডাই চাতারার অফস্টাম্পের বাইরের বল ব্যাট দিয়ে টেনে নিয়ে এসে নিজের স্ট্যাম্প ভাঙেন তিনি। খানিক বাদে কাইল জার্ভিসের বলটি অফস্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। তাতে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে রেজিস চাকাভাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন দাস। দলীয় ১৪ রানে ২ ওপেনার হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা।
সেই ধাক্কা আরও বড় হয়ে আসে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অযাচিত শট খেলতে গিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফিরলে। নিশ্চিতভাবেই চাতারার বলটি অফস্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের হয়ে যেত। তবে তর সয়নি শান্তর। সেই বলে ব্যাট ছুঁইয়ে চাকাভাকে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি। এরপর সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। তার আউটের ধরণটিও ভীষণ দৃষ্টিকটু এবং প্রায় ইমরুলের মতো। চাতারার অফস্টাম্পের বাইরের বল ব্যাট দিয়ে টেনে নিয়ে এসে নিজের স্টাম্প ভাঙেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
এর আগে আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। পিটার মুর ৩৭ ও রেজিস চাকাভা ২০ রান নিয়ে খেলা শুরু করেন। যত দ্রুত সম্ভব সফরকারীদের গুটিয়ে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। চেষ্টাও চালান টাইগাররা। কিন্তু শুরুতে সাফল্য আসছিল না। তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান মুর ও চাকাভা। ছন্দময় ব্যাটিং করেন তারা। বুক চিতিয়ে লড়তে থাকেন এ জুটি। তবে হঠাৎই ছন্দপতন। খেই হারান চাকাভা (২৮)। শর্ট লেগে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। দলীয় ২৬১ রানে তার বিদায়ে ভাঙে ৬০ রানের জমাট বেঁধে যাওয়া জুটি। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও স্বাগতিকদের প্রথম সাফল্য এনে দেন তাইজুল ইসলাম।
চাকাভা ফিরতেই পথ হারায় জিম্বাবুয়ে। যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেন একের পর এক ব্যাটসম্যান। খানিক পরই মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। আবারো শিকারী সেই তাইজুল। এরপর সাজঘরের পথ ধরেন ব্রেন্ডন মাভুতা। এবার প্রতিপক্ষ শিবিরে ছোবল মারেন নাগিনখ্যাত নাজমুল ইসলাম অপু। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে তাকে ফেরান তিনি। পরের দৃশ্যপটে ফের তাইজুল। মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে কাইল জার্ভিসকে ফেরান তিনি। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে চতুর্থবার ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন বাঁহাতি স্পিনার।
এদিন তাইজুলের স্পিন বিষে নীল হয়েছে জিম্বাবুয়ে। তার ঘূর্ণি কোনোভাবেই পড়তে পারেননি প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা। রোডেশিয়ানদের সবশেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরের পথ ধরেন টেন্ডাই চাতারা। সেটিও শিকার এ বাঁহাতি স্পিনারের। লিটন দাসের তালুবন্দি করে তাকে ফেরান তিনি। এতে পরীক্ষিত এ সৈনিকের শিকার দাঁড়ায় ৬ উইকেট। এ পথে তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন অপু। তিনি ঝুলিতে ভরেন ২ উইকেট।
শেষ পর্যন্ত ২৮২ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় লালচাঁদ রাজপুতের দল। সবাই এলে-গেলে শেষ পর্যন্ত থেকে যান মুর। এ পথে ক্যারিয়ারে চতুর্থ টেস্ট ফিফটি (৬৩) তুলে নেন তিনি। শেষদিকে তার লড়াকু ব্যাটেই এ সংগ্রহ পেয়েছে সফরকারীরা।
বিবার্তা/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]