শিরোনাম
ভারতকে হারিয়ে এবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৪৪
ভারতকে হারিয়ে এবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফাইনালের একদিন আগে সংবাদ সম্মেলনেই মালদ্বীপের কোচ পিটার সেগার্ট বলেছিলেন, ফাইনালে একটি সেনসেশন অপেক্ষা করছে। সত্যিই তার দল সেনসেশনটা দেখিয়ে দিলো।


দক্ষিণ এশিয়ার ফটুবল পরাশক্তি হয়ে উঠা ভারতের দম্ভ চূর্ণ করে দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে মালদ্বীপ।


রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি। ২-১ গোলের দারুন এক জয় তুলে নিয়ে এক দশক পর সাফের শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করলো তারা। প্রথমবার তারা সাফের শিরোপা জয় করেছিল ২০০৮ সালে। সেবারও ফাইনালে এই ভারতকেই পরাজিত করেছিল ১-০ গোলে।


সাফের শুরুতে মালদ্বীপের পথচলা মোটেও মসৃণ ছিল না। তাদের পারফর্ম্যান্স দেখে হতাশ ছিলেন খোদ সমর্থকরাই। কেউ বিশ্বাসই করেননি মালদ্বীপ সাফের ফাইনাল খেলবে। কারণ গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল। এরপর ভারতের কাছেই ২-০ গোলে হারের লজ্জা পেতে হয় তাদের। শ্রীলংকার সঙ্গে পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান সমান হওয়ায় টস ভাগ্যের সহায়তা নিয়ে শেষ চারে নাম লেখায় তারা।
এমন দল নিয়ে কে বাজি ধরতে চায়? অথচ সেই দলটিই কি না সেমি ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঠিকই জ্বলে উঠেছিল। নিজেদের খোলস থেকে বেরিয়ে শিরোপা প্রত্যাশী নেপালকে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ফাইনালের মহারণে নাম লেখায় মালদ্বীপ।


খেলার শুরুতে কোনো দলকেই দেখা যায়নি উল্লেখ করার মতো আক্রমণ রচনা করতে। ম্যাচটি ফাইনাল বিধায় হয়তো উভয় দলই কিছুটা সময় নিয়েছে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে একে অপরের অবস্থান বুঝে নেয়ার জন্য। যে কারণে প্রথম ১৫ মিনিটে কোনো আক্রমণই করতে পারেনি প্রতিদ্বন্দ্বী দল দুটি।


ম্যাচের ১৯তম মিনিটে প্রথম আক্রমণেই সফল হয় মালদ্বীপ। বাঁপ্রান্ত দিয়ে হাসান নিয়াজের বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে ডি বক্সে গিয়ে ভারতীয় গোলরক্ষক বিশাল কাইতের মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়ান মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড মাহুদি হাসান (১-০)।


তিন মিনিট পর ফের আক্রমণে যায় মালদ্বীপ। তবে এবার সতর্ক ভারতীয় ডিফেন্ডাররা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই প্রতিহত করে মালদ্বীপের সংঘবদ্ধ আক্রমণটি। ২ মিনিট পর ডি বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রী কিক থেকে মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড আলী ফাসির চমৎকার বাঁকানো শট নিলেও বলটি অল্পের জন্য ক্রসবার ঘেষে বাইরে চলে যায়। এরপর আবারো মধ্যমাঠে চলে যায় খেলা।


ভারত গোল পরিশোধের জন্য এ সময় বেশ কয়েকটি কর্নার আদায় করলেও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়।


ম্যাচের ৩৯তম মিনিটে মালদ্বীপের অধিনায়ক আকরাম আবদুল ঘানি গুরুতর আহত হওযায় তাকে মাঠ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে পরিবর্তিত হিসেবে নামানো হয় আহমেদ নোমানকে। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে বিপজ্জনক ফাউলের কারণে বরং হলুদ কার্ড দেখতে হয় ভারতীয় অধিনায়ক সুবাশিষ বোসকে।


দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ভারত। শুরুতেই আক্রমণে যায় তারা। তবে এসব আক্রমণ ছিল বিচ্ছিন্ন। পরিকল্পনার কোনো ছাপ ছিল না আক্রমণে। ফলে গোলও আসেনি। একপর্যায়ে লড়াইয়ে ফেরার মানষে অল আউট খেলতে শুরু করে ভারত। আর ওই সুযোগে প্রতি আক্রমণ থেকে ব্যবধান দ্বিগুণে নিয়ে যায় মালদ্বীপ।


ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে মধ্য মাঠ থেকে হামজাদ মোহাম্মেদের বাড়িয়ে দেয়া বল ফাঁকায় পেয়ে ক্ষীপ্র গতিতে সেটি নিয়ে ভারতীয় গোল বক্সে ঢুকে পড়েন আলি ফাসির। এ সময় ভারতীয় গোলরক্ষক এগিয়ে এলে কিছুটা আড়াআড়িভাবে চলন্ত বলে মাটি কামড়ানো শটে এগিয়ে দেন তিনি। বলের গতির সঙ্গে দৌঁড়ে সেটি আটকানোর আপ্রাণ চেস্টা করেছেন ডিফেন্ডার শার্থাক গুলুই। কিন্তু এর আগেই জালে ঠাঁই পেয়ে যায় বলটি (২-০)।


এ সময় আগ্রাসী উদযাপনের জন্য হলদু কার্ড দেখতে হয় মালদ্বীপের ওই ফরোয়ার্ডকে।


ম্যাচের ইনজুরি টাইমে (৯০+২) সুমিত পাসির গোলে ব্যবধান কমায় ভারত। বাঁ প্রান্ত থেকে নিখিলের ক্রসের বলটি একেবারেই মালদ্বীপের গোলপোস্টের সামনে পেয়ে আলতো শটে গোল করেন পাসি (২-১)। এতে ব্যবধান কমলেও হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ভারতকে।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com