শিরোনাম
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:৫৪
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৩৭ রানের ব্যবধানে অসাধারণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে এশিয়া কাপের শুভ সূচনা হলো টাইগারদের।


শনিবার দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে মুশফিকের সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৬১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ দল। টার্গেট তাড়া করতে নামা শ্রীলংকা ৩৫.২ ওভারে ১২৪ রান তুলতেই অলআউট হয়ে যায়। বাংলাদেশ দলের হয়ে দুটি করে উইকেট ভাগাভাগি করেন মাশরাফি, মোস্তাফিজ ও মেহেদী হাসান মিরাজ।


ইনিংসের শুরু থেকেই শ্রীলংকাকে চেপে ধরে বাংলাদেশ দল। সময়ের ব্যবধানে লংকানদের উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ, মাশরাফি, মিরাজ ও রুবেল হোসেনরা। একের পর এক উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় হাথুরুসিংহের শীষ্যরা।


থিসেরা প্যারেরার উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জয় প্রায় নিশ্চিত করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতাই বাকি আছে। মিরাজের বলে পয়েন্টে থাকা রুবেলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন লংকান অলরাউন্ডা থিসেরা প্যারেরা। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে নিজেদের শেষ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারায় হাথুরুসিংহের শীষ্যরা।


বাদ রইলেন না রুবেল হোসেনও। মোস্তাফিজ, মাশরাফি, মিরাজের পর উইকেট শিকার করলেন রুবেল হোসেন। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই লংকান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের উইকেট তুলে নেন রুবেল। ম্যাথিউসকে এলবিডবিব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রুবেল। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৪ বল খেলে মাত্র ১৬ রান করেন লংকান অধিনায়ক।


মাত্র ৫ রানেই সাজঘরে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল দাসুন শানাকার। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তামিম ইকবালের ইনুজরির কারণে বদলি ফিল্ডার হিসেবে নামা নাজমুল ইসলাম অপু এবং মাশরাফির মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারণে শেষ পর্যন্ত ক্যাচটি আর নেয়া হয়নি। ৫ রানের জীবন পাওয়া শানাকা পানি পান বিরতির পর রান আউটের ফাঁদে পড়েন। তার আগে ২২ বলে মাত্র ৭ রান করতে পেরেছেন।


৩৮ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলংকাকে চরম বিপযর্য়য়ে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। মোস্তাফিজুর রহমানের পর মাশরাফি নেন পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে কুশল প্যারেরাকে সাজঘরে পাঠান অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে শ্রীলংকার মারমুখী ব্যাটসম্যান ফেরেন মাত্র ২৪ বলে ১১ রান করে।


শ্রীলংকাকে চেপে ধরেছে বাংলাদেশ দল। ৩২ রানে লংকান তিন ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলে নিয়েছেন মোস্তাফিজ-মাশরাফিরা। শুরুটা করেন মোস্তাফিজ। এরপর দুই ওভারে উপল থারাঙ্গা এবং ডি সিলভাকে ফেরান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।


ইনিংসের শুরু থেকে একেরপর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া থারাঙ্গার উইকেট উড়িয়ে দেন মাশরাফি। ঠিক পরের ওভারে নতুন ব্যাটসম্যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মাশরাফি। ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে গেছে শ্রীলংকা।


কুশাল মেন্ডিসকে সাজঘরে পাঠিয়ে বাংলাদেশ দলেকে ব্রেক থ্রু এনে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের করা ২৬১ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে শ্রীলংকা ক্রিকেট দল। মাশরাফিদের বোলিং লাইনআপ ভেঙে দেয়ার জন্যই শুরুতে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন লংকান ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ওভারে ১৩ রান তুলে নেয়া শ্রীলংকা, দ্বিতীয় ওভারেও মোস্তাফিজকে একেরপর এক বাউন্ডার ছাড়া করে। ওভারের শেষ বলে কুশাল ম্যান্ডিসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন কাটার মাস্টার।


এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বোলিংয়ের তোপে এভাবেই শ্রীলঙ্কান ব্যাটিংয়ে ধস নামে।


এর আগে মুশফিকুর রহিমের দারুণ শতকে বাংলাদেশ ২৬১ রান করে। মুশফিক ১৪৪ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন, বল খেলেছেন ১৫০টি। আর ১১টি চার ও চারটি ছক্কার মার দিয়ে ইনিংসটাকে সাজান তিনি।


অবশ্য ইনিংসের প্রথম ওভারেই লঙ্কান বোলিং তোপে পড়েছিল বাংলাদেশ। লাসিথ মালিঙ্গার সে ওভারের চতুর্থ বলে ওপেনার লিটন দাস স্লিপে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান কোনো রান না নিয়েই। ওয়ানডাউনে নামা সাকিব আল হাসান পরের বলেই আউট হন শূন্য রানে।


হাতে ব্যথা পেয়ে ওপেনার তামিম ইকবালও ফিরে যান সাজঘরে। পেসার সুরাঙ্গা লাকমলের বল তাঁর গ্লাভসে লাগে। ব্যথা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়ছিল এই বাঁহাতি ওপেনারকে। কিন্তু বিস্ময় ছড়িয়ে ইনিংসের শেষ মুহূর্তে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। তাঁর সহযোগিতার কারণে বাংলাদেশের পক্ষে গড়া সম্ভব হয়েছিল এই চ্যালেঞ্জং সংগ্রহ।


এরআগে দলীয় ১৩৪ রানের মাথায় ৬৮ বলে ৬৩ রান করে মিঠুন সাজঘরে ফিরেছিলেন। আর মাহমুদউল্লাহ চার বলে ১ রান করে আউট হন। সৈকতও আউট হন ১ রান করে।


এর পরই দলের বিপর্যয় এড়াতে দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন মুশফিকুর রহিম। তরুণ মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে দারুণ একটি জুটি গড়েন। পরে তামিমকে সঙ্গে নিয়ে শেষ মুহূর্তে ঝড় তুলে দলের ইনিংসটাকে এই পর্যায়ে নিয়ে যেতে মূল ভূমিকা রাখেন।


মুশফিকের এটি ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আর ওয়ানডেতে এটি তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসও।


দীর্ঘদিন পর শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমে পেসার লাসিথ মালিঙ্গা ছিলেন দারুণ উজ্জ্বল। ১০ ওভারে মাত্র ২৩ রান দিয়ে চার উইকেট তুলে নেন তিনি।


বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষ), মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান।


শ্রীলংকা একাদশ: উপুল থারাঙ্গা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, কুশাল পেরেরা (উইকেটরক্ষক), কুশাল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (অধিনায়ক), থিসারা পেরেরা, দাসুন শানাকা, লাসিথ মালিঙ্গা, সুরাঙ্গা লাকমাল, আমিলা আপোনসো,দিলরুয়ান পেরেরা।


বিবার্তা/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com