রাশিয়া বিশ্বকাপকে পেনাল্টি প্রসবা বললেও কম বলা হবে। ইতোমধ্যে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পেনাল্টির সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে রাশিয়া। এ পর্যন্ত পেনাল্টির সংখ্যা ১৯টি। যার ১৫টি থেকে গোল দিয়েছেন খেলোয়াড়রা। আর চারটি থেকে গোল করতে পারেননি কেউই। গোল না করতে পারার তালিকায় সর্ব প্রথমে রয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি এরপর যথাক্রমে ক্রিশ্চিয়ান চুয়েভা, জিলফি সিডার্সন, আলো দাওসারি ছিলেন। এবার সে তালিকায় নাম লেখালেন আরেক তারকা ফুটবলার পর্তুগাল অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
যাকে বলা হয়ে থাকে পেনাল্টি স্পেশালিস্ট। তার মতো এমন পারদর্শী খেলোয়াড় দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অথচ তিনিই কিনা পেনাল্টি থেকে গোল করতে অক্ষম হলেন। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপের পর এই প্রথম কোনো পর্তুগিজ খেলোয়াড় বিশ্বকাপে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন। এছাড়া বিশ্বকাপে কোনো পর্তুগিজ খেলোয়াড়ের পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দেয়া প্রথম গোলরক্ষক ইরানের আলিরেজা বেইরানভান্দ।
বিশ্বকাপের পয়ত্রিশতম ম্যাচে সারানস্ক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মুখোমুখি হয়েছিল এশিয়ার পরাশক্তি ইরান ও পর্তুগাল। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে এই ম্যাচে ড্র করলেই চলতো পর্তুগালের। অন্যদিকে, জিততেই হতো এশিয়ান জায়ান্ট ইরানের। এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে পর্তুগালের সঙ্গে সমান পাল্লা দিয়ে লড়াই করেছে ইরান।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও শুরুতেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু তিন মিনিটের মাথায় ডি বক্সের ভেতর তার নেয়া শট রুখে দেন ইরানিয়ান গোলরক্ষক। ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি আসেন নয় মিনিটি। হোয়াও মারিও ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়েও বল গোলবারের বাইরে মারেন।
২৩ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইরানও। জাহানবাখশের বাড়ানো বল আজমাউনের পা ছোঁয়ার আগেই বলকে তালুবন্দী করেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও। ৪০ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে রোনালদো দারুণ এক শট নিলেও সেটি রুখে দেন বেইরানভান্দ।
রেফারি যখন বিরতির বাঁশি বাজাবেন ঠিক তার আগ মুহূর্তেই ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন কারেজমা। ডান পাশে থেকে বল নিয়ে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ডান পায়ের উল্টো দিক দিয়ে দুর্দান্ত শটে অসাধারণ গোল করে দলকে প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন বেসিকতাসে খেলা এই ফুটবলার। এক গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় পর্তুগিজরা।
বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচের ৫০তম মিনিটে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করেন ইরানের সাঈদ এজাতোলাহি। পর্তুগালের খেলোয়াড়রা রেফারির কাছে পেনাল্টির আবেদন জানান। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সহায়তা নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। কিন্তু গোল করতে ব্যর্থ হন রোনালদো। রোনালদোর শট ঝাপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন ইরানের গোলরক্ষক আলী ভেইরানল্যান্ড।
৮০ মিনিটের সময় ইরানের রক্ষণভাগের ফুটবলারকে কনুই দিয়ে আঘাত করার কারণে লাল কার্ডের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। ভিএআরের মাধ্যমে রেফারি ফাউল নিশ্চিত করে রোনালদোকে লাল কার্ড না দিয়ে হলুদ কার্ড দিয়ে সাবধান করেন। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে পর্তুগালের ডিফেন্ডার সেডরিকের হাতে বল লাগলেও রেফারি এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে ভিএআরের মাধ্যমে হ্যান্ডবল নিশ্চিত হয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
স্পট কিক থেকে ডান কর্নারের দুর্দান্ত শট করে ইরানের হয়ে বিশ্বকাপে প্রথম গোলটি করেন আনসারিফার্দ। সমতায় ফিরে ইরান সুযোগ পেয়েছিল ম্যাচটি জিতে যাওয়ার কিন্তু ৯৪ মিনিটে তারেমি পর্তুগিজ গোলরক্ষককে ফাঁকা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হলে ড্র নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় ইরানকে। অন্যদিকে, গ্রুপের দ্বিতীয় হয়ে পরবর্তী রাউন্ডে উরুগুয়ের সঙ্গে লড়াই করবে রোনালদোর পর্তুগাল।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]