বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে মাত্র দু’দিন। এর মধ্যে ছোট দলগুলোর লড়াই দেখতে দেখতে হাপিয়ে উঠেছিল ফুটবল সমর্থকরা। অবশেষে দেখা মিললো হাইভোল্টেজ ম্যাচের। সঙ্গে রাত জেগে খেলা দেখার সার্থকতাও মিললো।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিনের শেষ ম্যাচে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, গোল, হ্যাটট্রিক...সব দেখা হয়ে গেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিন, চতুর্থ ম্যাচেই! পর্তুগাল-স্পেন ম্যাচটি মনে হচ্ছিল ফাইনাল। এমন ম্যাচে রেকর্ড না হলে কী হয়! হয়েছেও তাই। রেকর্ডের জন্য যাঁর জন্ম সেই রোনালদো গোল করলেন টানা চার বিশ্বকাপ। এটা একটা রেকর্ড।
কোনো পর্তুগিজ খেলোয়াড় চার বিশ্বকাপে গোল করতে পারেননি। ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমে এক গোল করেছিলেন। ২০১০ বিশ্বকাপেও একটি। দুঃস্বপ্নের ২০১৪ বিশ্বকাপটা গ্রুপ পর্বে শেষ হলেও নামের পাশে এক গোল লেখা হয়ে গিয়েছিল রোনালদোর।
অথচ বিশ্বকাপের মূলমঞ্চে নামার পূর্বেই জেল ও জরিমানার খবর শুনতে হয়েছিল রোনালদো কে। কর ফাঁকির দায়ে ২বছরের জেল ও ১৯ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে স্পেনের একটি আদালত। তাই সবাই তাকিয়ে ছিল তার দিকে।
শুক্রবার সোচিতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে পর্তুগালের তিনটি গোলই করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। আর স্পেনের তিনটি গোলের মধ্যে দিয়েগো কস্তা করেছেন দুইটি গোল। আর একটি গোল করেছেন নাচো।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই এগিয়ে যায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দল। ম্যাচের সময় যখন মাত্র তিন মিনিট তখন ডি-বক্সের মধ্যে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ফাউল করেন নাচো। রোনালদো মাটিতে পড়ে যান।
এটি রেফারির নজর এড়ায়নি। যার কারণে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। আর পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এরপর ২৪তম মিনিটে গোল করে ম্যাচে ১-১ সমতা আনেন স্পেনের দিয়েগো কস্তা। লং পাস পেয়ে পর্তুগালের ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে তিনি বল পৌঁছে দেন প্রতিপক্ষের জালে।
বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে তথা ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে গোল করে পর্তুগালকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে তিনি বাঁ পা দিয়ে শুট করেন। বল নীচু হয়ে গিয়ে গোলরক্ষক ডি গিয়ার হাত ফসকে পৌঁছে যায় ঠিকানায়। এই বলটি ডি গিয়ার ঠেকানো উচিৎ ছিল। কিন্তু তিনি পারেননি।
বিরতি থেকে ফেরার পরপরই নিজের জোড়া গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন দিয়েগো কস্তা। ৫৫তম মিনিটে ডেভিড সিলভার ফ্রি-কিক থেকে গোলের দিকে হেড করেন বাসকুয়েটস। আর গোলের সামনে থেকে পা বাড়িয়ে দিয়ে বল গোলে পাঠিয়ে দেন দিয়েগো কস্তা।
যেই নাচোর ফাউলের কারণে প্রথমার্ধে পেনাল্টি পেয়ে পর্তুগাল এগিয়ে গিয়েছিল ৫৮তম মিনিটে সেই নাচোর গোলে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্পেন। ডি-বক্সের মধ্য থেকে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন পর্তুগালের ডিফেন্ডাররা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পেনাল্টি বক্সের প্রান্ত থেকে জোরালো শটে গোল করেন নাচো।
৮৮তম মিনিটে হ্যাটট্রিক গোলটি করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ফ্রি-কিক থেকে এই গোলটি করেন তিনি। ফিফা বিশ্বকাপে এটি ৫১তম হ্যাটট্রিক। আর রাশিয়া বিশ্বকাপে এটি প্রথম হ্যাটট্রিক। তাছাড়া বিশ্বকাপে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এটি প্রথম হ্যাটট্রিক।
আগামী ২০ জুন পর্তুগালের প্রতিপক্ষ মরক্কো। এরপর ২৫ জুন ইরানের মুখোমুখি হবে তারা। অন্যদিকে, আগামী ২০ জুন ইরানের বিপক্ষে মাঠে নামবে স্পেন। এরপর ২৫ জুন মরক্কোর মুখোমুখি হবে স্প্যানিশরা।
বিবার্তা/শাহনাজ/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]