শিরোনাম
ভারতের দুর্দান্ত সিরিজ জয়
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০১৭, ১৫:০২
ভারতের দুর্দান্ত সিরিজ জয়
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

অপেক্ষা ছিল ৮৭ রানের। তৈরি ছিল মঞ্চ। শুধু নেমে নিজেদের সেরাটা দেয়ার ছিল। সেরাটা না দিলেও যা লক্ষ্য ছিল তাতে তা পেড়িয়ে যাওয়াটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। দু’দলের সামনে আসলে ছিল না কোনো লক্ষ্যই। অস্ট্রেলিয়া জেনেই গিয়েছিল সিরিজ হার শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা। ভারতের সামনে আর কয়েকটা রান মাত্র।


সেই রানে পৌঁছতে ভারতকে হারাতে হল মুরলী বিজয় ও পূজারার উইকেট। কামিন্সের বলে ওয়েডকে ক্যাচ দিয়ে মাত্র আট রান করে ফিরলেন মুরলী। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোনো রান না করেই রান আউট হলেন পূজারা। বাকি কাজটা রাহানেকে সঙ্গে নিয়ে হেলায় করে ফেললেন লোকেশ রাহুল। লোকেশের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গেই জয়ের রান তুলে নিল ভারত। আট উইকেটে শেষ টেস্ট জিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-১এ সিরিজ জিতে নিল ভারত।


হাতে দু’দিন নিয়ে ৮৭ রানের লক্ষ্যে নামা ভারতীয় দল আগের রাতেই জেনে গিয়েছিল জয়টা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আবারও একটা সিরিজ। আবারও দেশের মাটি থেকে বিশ্ব ক্রিকেটের কোনও বড় নামকে হারিয়ে বাড়ি পাঠানো। নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের পর এবার অস্ট্রেলিয়া। যদিও সিরিজের শুরুটা তেমন বার্তা দিয়ে হয়নি। যে ফর্মে মৌসুম চলছিল অস্ট্রেলিয়াকে হারানোও ততটাই সহজ হবে ভেবে নিয়েছিল ভারত। কিন্তু তেমনটা হয়নি।


প্রথম ম্যাচেই পুণেতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল ভারত। যার ফল হেরে শুরু করেছিলেন বিরাট কোহলিরা। ১-০তে পিছিয়ে থেকে বেঙ্গালুরু ম্যাচে মরিয়া হয়েই নেমেছিলেন বিরাট কোহলিরা। পুণেতে পিচ বিতর্কের পর বেঙ্গালুরুর ডিআরএস বিতর্ক সঙ্গে থাকলে জিতে সিরিজে ফিরেছিল ভারত। সিরিজ যখন ১-১ তখন ধোনির শহরে দু’দলই নেমেছিল সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু শেষ ম্যাচের টেনশন বাড়িয়ে রাঁচির ম্যাচ শেষ হয়েছিল অমীমাংসিত ভাবেই। সিরিজ ১-১ নিয়ে দু’দল পৌঁছেছিল ধৌলাধারের শহরে।


কিন্তু তাতে বাঁধ সাধল বিরাট কোহলির চোট। ধর্মশালা টেস্টে ছিটকে গেলেন দেশের সফল অধিনায়ক। যার হাত ধরেই টানা সিরিজ জয় ভারতের। সেই বিরাটকে বাদ দিয়েই শেষ টেস্টে নামতে হয়েছিল টিম ইন্ডিয়াকে। অজিঙ্ক রাহানের অধিনায়কত্বে শুরু থেকে শেষ সবটাই ছিল ভারতের দখলে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট জিতে নিলেন রাহানেও। সঙ্গে ভারতের সিরিজ জয়।


টস জিতে শুরুটা করেছিল অস্ট্রেলিয়াই। প্রথম ইনিংসে ভারতের সামনে ৩০০ রানের লক্ষ্যমাত্র রেখেছিল। এর মধ্যেও স্টিভ স্মিথের ব্যাট থেকে এসেছিল সেঞ্চুরি। অশ্বিনের বলে রাহানের ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে স্মিথের ব্যাট থেকে এসেছিল ১১১ রানের ইনিংস। সেই ইনিংসে ডেভিড ওয়ার্নারের ৫৬ ও ওয়েডের ৫৭ রানের যোগ্য সঙ্গ থাকলেও এর থেকে বেশি দুর এগোতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। সেই ইনিংসে টেস্ট অভিষেকেই চার উইকেট নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন কুলদীপ যাদব।


ভারতের লক্ষ্য ছিল প্রথম ইনিংসেই বাজিমাত করার যাতে দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট করতে নামতে না হয়। কিন্তু তেমনটা হল না। কারও ব্যাট থেকেই এলো না বড় রান। যার ফল মাত্র ৩২ রানের লিড নিয়েই আবার অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। লোকেশ রাহুলরে ৬০, চেতেশ্বর পূজারার ৫৭, অজিঙ্ক রাহানের ৪৬ ছাড়া ভারতের ব্যাটিংয়ে বলার মতো আর কিছু ছিল না। বল হাতে আবার বাজিমাত করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার নাথান লিয়ন। তৃতীয়দিন লাঞ্চের আগেই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস।


দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষ হওয়ার আগেই পুরো অস্ট্রেলিয়া দলকেই প্যাভেলিয়নে পাঠিয়ে দেন ভারতের বোলাররা। এখনও পর্যন্ত সেরা উইকেট যে এটিই তা আবারও প্রমাণ হয়ে যায়। কারণ এই উইকেটেই ৩০০ রানের ওপর রান এসেছে। এই পিচেই সমানভাবে উইকেট পেয়েছেন উমেশ যাদব, অশ্বিনরা।


ধর্মশালায় দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৭ রানে প্যাভেলিয়নে পাঠানোর পিছনে যতটা রয়েছেন পেসার উমেশ যাদব ঠিক ততটাই রয়েছেন দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা। তিন জনেই তুলে নেন তিনটি করে উইকেট। যার ফল যখন অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে তখন ভারতের সামনে মাত্র ১০৬ রানের টার্গেট। হাতে রয়েছে পুরো দু’দিন।


তৃতীয় দিনের শেষে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও মুরলী বিজয় ১৯ রান যোগ করে দিয়েছেন। চতুর্থ দিন ভারতের দরকার ছিল মাত্র ৮৭। এই রান করতে ভারতের বেশি সময় লাগল না। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের সেলিব্রেশনটা পাহাড়ের কোলেই শুরু হয়ে গেল।


বিবার্তা/প্লাবন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com