ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার আন্তর্জাতিক পুরুষ সপ্তাহ উপলক্ষে তরুণ ও যুবকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেছেন।
তিনি লেখেছেন, নিজের কান্নাকে দেখানোর মধ্যে কোনো লজ্জা নেই। কেন নিজের সেই অংশটা দেখাব না, যেটা আমাকে আরো শক্তিশালী করে তুলেছে? কেন আপনার কান্না লুকাবেন?
শচীন টেন্ডুলকার লেখেছেন, আপনারা শিগগিরই বাবা ও স্বামী হবেন। ভাই ও বন্ধু হবেন। মেন্টর ও শিক্ষক হবেন। আপনারা সাহসী ও শক্তিশালী হবেন। নির্ভীক ও স্থিতিস্থাপক হবেন। আপনারা ভয়, সন্দেহ ও বিপুল যন্ত্রণার মুখোমুখি হবেন। নিঃসন্দেহে এমন সময় আসবে, যখন আপনি ব্যর্থ হবেন। তখন আপনার কাঁদতে ইচ্ছে করবে। ইচ্ছে করবে সবটা বাইরে বের করে দিতে। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই আপনি কান্নাকে চেপে রেখে শক্ত হওয়ার ভান করবেন। কেননা তেমনটাই পুরুষরা করে থাকেন। কেননা এটাই আমাদের বিশ্বাস করানো হয় যে, পুরুষদের কাঁদতে নেই। কান্না পুরুষকে দুর্বল করে দেয়। আমিও এটা বিশ্বাস করেই বড় হয়েছি।
এরপরই শচীন লেখেন, যে কারণে আমি এই চিঠি লিখছি তা হল আমি অনুভব করেছি এটা ভুল। আমার লড়াই ও আমার যন্ত্রণা আমাকে তৈরি করেছে যা আমি হয়েছি। একজন উন্নত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ দিন তিনি বিদায়ী ভাষণ দেয়ার সময় আবেগ সংবরণ করতে না পেরে কেঁদে ফেলেন। শচীন লেখছেন, ১৬.১১.২০১৩। আমি এখনও সেদিন মাঠে থাকার কথাটা মনে করতে পারি। আমি এর আগেও এটা নিয়ে ভেবেছি বহু বার। কিন্তু কোনোভাবেই শেষবার প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার মানসিকতাটার ব্যাপারে তৈরি হতে পারিনি। ফেরার সময় প্রতিটা পদক্ষেপে ডুবে যাচ্ছিলাম। গলার কাছে ব্যথা করছিল। সব শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় পাচ্ছিলাম। সেই মুহূর্তে আমার মনের মধ্যে কতো কিছু যে চলছিল! আমি ব্যাপারটা মানতে পারছিলাম না। লড়তে পারছিলাম না।
তিনি লেখেন, আমি পৃথিবীর সামনে এসে দাঁড়ালাম। আর আশ্চর্যজনকভাবে আমি শান্তি পেলাম। আমি শক্তি পেলাম নিজেকে বের করে আনার। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ যা আমি পেয়েছিলাম। অনুভব করেছিলাম আমি যথার্থ পুরুষ।
চিঠির শেষে লিটল মাস্টার আরো লেখেন, নিজের যন্ত্রণা ও দুর্বলতাকে প্রকাশ করতে সাহস লাগে। কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই এটা আপনাকে কঠিন ও আরো উন্নত করে তুলবে।
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]