শিরোনাম
মেডিকেল ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, ব্যবস্থা নেয়নি মন্ত্রণালয়
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০১৯, ১৭:২৩
মেডিকেল ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, ব্যবস্থা নেয়নি মন্ত্রণালয়
আকরাম হোসেন
প্রিন্ট অ-অ+

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ বিল্লাল আলমের বিরুদ্ধে।এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। ফলে প্রতিমুহূর্তে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে ওই ছাত্রী।পাশাপাশি ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরাও করতে পারছেন না ওই শিক্ষার্থী।


মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ডা. বিল্লাল আলমের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হোস্টেলে তার খাবার বন্ধ করে দেয়া হয়। হোস্টেল থেকে বহিষ্কারসহ শিক্ষা কার্যক্রম এক বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।


গত ৩০ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দেয়া লিখিত অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সে। ২০১৬ সালে ৩৯তম ব্যাচের অ্যাসেসমেন্ট পরীক্ষার পর হল থেকে বেরিয়ে হোস্টেলে যাওয়ার পথে শুনতে পান অধ্যক্ষ তাকে নিজ কক্ষে দেখা করতে বলেছেন। তিনি বিষয়টি ক্যাম্পাসের বড়ভাই তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ডা. জাবেদ ও ডা. মিজানকে জানান। এরপর অধ্যক্ষের রুমে গেলে কথাবার্তার এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ তার গায়ে হাত দেন ও জড়িয়ে ধরেন। পাশাপাশি ডা. বিল্লাল আলমের টঙ্গীর চেম্বারে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। এর প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ তাকে গালাগালি করেন।


এরপর মৌখিক পরীক্ষায় ওই ছাত্রীকে বার বার ফেল করিয়ে দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন। অবশেষে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সেকেন্ড প্রফেশনাল এম. বি. বি. এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ফাইনাল প্রফেশনাল এম. বি. বি. এস পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি আনতে গেলে ফের কু-প্রস্তাব দেন ওই অধ্যক্ষ। কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন নিয়ম-কানুন দেখিয়ে সে বছর তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়নি। তখন এর প্রতিবাদ করলে ওই ছাত্রীকে বেশি বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন বিল্লাল আলম। বেশি বাড়াবাড়ি করলে একাডেমিক কাউন্সিল ডেকে ওই ছাত্রীর ছাত্রত্ব বাতিল করার হুমকি দেন তিনি।


ভুক্তভোগী ছাত্রী বির্বাতাকে বলেন, আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা সমাধানের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছি। কেউ কোনো সমাধান করতে পারেনি।বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতির কাছে জানিয়েছি। আশা করেছিলাম তারা হয়তো একটা সমাধান দিতে পারবেন। কিন্তু তারা কিছু করছেন না। অবশেষে ৩০ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করি। আজ এক মাস হচ্ছে তারপরও অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।


অভিযোগ করে ওই শিক্ষার্থী বিবার্তাকে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সঙ্গে অধ্যক্ষ ডা. বিল্লাল আলমের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


ওই শিক্ষার্থী বিবার্তাকে বলেন, ব্যক্তিগত কারণে আমার দুই বছর গ্যাপ ছিল।কিন্তু পরে আমি যখন আবার ভালো মতো শুরু করলাম তখন স্যার আমাকে নানাভাবে হয়রানি করছে। আমার নামে বিভিন্ন মানুষের কাছে খারাপ কথা বলছে। যার কারণে আমি ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারি না।


অভিযোগের ব্যাপারে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ বিল্লাল আলমের সাথে মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বির্বাতাকে বলেন, আমি এখন রোগী দেখছি। কথা বলার জন্য তার অফিসে যেতে বলেনে তিনি।এরপর মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।


বিবার্তা/আকরাম/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com