শিরোনাম
এ কি সেই খাদিজা !
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:৩০
এ কি সেই খাদিজা !
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

শনিবার দুপুর ১২টা। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিচ তলায় নিয়ে আসা হয় বখাটে বদরুলের চাপাতির আঘাতে আহত খাদিজা আক্তার নাগির্সকে। এ সময় খাদিজাকে দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। কারণ একটাই - খাদিজার এতো দ্রুত সুস্থ হওয়া।


‘এ কি সেই খাদিজা? যাকে সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছিল? সে কি সুস্থ হয়ে গেছে?’


প্রশ্ন করছিলেন স্কয়ার হাসপাতালে আসা কবির নামের এক ব্যক্তি। কেন এমন প্রশ্ন করছেন জানতে চাইলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, ‘আসলে খাদিজা এতো তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে, কল্পনাও করতে পারিনি। তবে আল্লাহ ওকে সুস্থ করেছেন, সেটাই বড় কথা।’


শুধু কবির নন, হাসপাতালে আসা আরো অনেকেই খাদিজার শারীরিক অবস্থার উন্নতি দেখে অবাক হয়েছেন। নাসরিন নামের এক নারী বলেন, ‘খাদিজাকে কেবিন থেকে আনার সময় আমি চেয়ে ছিলাম। এক পর্যায়ে জানতে পারি তাকে নিয়ে নিচ তলায় যাওয়া হচ্ছে। সেখানে গিয়ে দেখি সাংবাদিকরা তার জন্য অপেক্ষা করছে। সব দেখে আসলেই আমি অবাক হয়েছি।’


অবাক হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খাদিজা এতো দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে, ভাবতেও পারিনি।’


এদিকে খাদিজা বেগম নার্গিসের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের অভ্যর্থনাকক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলন চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি খাদিজা ও তারা বাবা মাসুক মিয়া উপস্থিত ছিলেন।


গত ৩ অক্টোবর দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে জখম হয় সিলেটের কলেজ ছাত্রী খাদিজা। পরদিন মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় স্কয়ার হাসপাতালে। এ সময় তার জিসিএস ছিল মাত্র ৫। সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থা ছিল তার। বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল। পরে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে তাকে নিবিড় পরিচার্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পাঠানো হয়। সেখানে সি.টি. স্ক্যান করে দেখা যায়, ব্রেনের বিভিন্ন অংশ গুরুতর আক্রান্ত এবং মিডলাইন থেকে সরে গেছে। এ অবস্থায় তাকে সাথে সাথেই অপারেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিউরোসার্জারী বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. এ এম রেজাউল সাত্তারের নেতৃত্বে মস্তিস্কে ডিকমপ্রেসিভ সার্জারি করা হয়। পরে আইসিইউতে ধীর গতিতে তার অবস্থার উন্নতি হয়।


গত ১৭ অক্টোবর অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে খাদিজার ডান হাতে মাল্টিপল ফ্লিক্সার টেনটন রিপেয়ার করা হয়। এছাড়াও ওই সময় ট্রেথসটমি করা হয়, যা ১৯ অক্টোবর ক্লোজ করা হয় এবং তাকে এইচডিইউতে স্থানান্তর করা হয়।


৭ নভেম্বর একসাথে অর্থোপেডিক ও নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসরা আবার অপারেশন করেন। সর্বশেষ ৮ নভেম্বর সার্বিক অবস্থা উন্নতি হওয়া খাদিজাক কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে খাদিজার জিসিএস ১৫ রয়েছে। এটা মানুষের স্বাভাবিক জিসিএস বলে জানান ডাক্তাররা।


উল্লেখ্য, খাদিজা আক্তার নার্গিস সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে। সে সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী। গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বখাটে বদরুলের চাপাতির আঘাতে আহত হয় সে।


বিবার্তা/খলিল/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com