শিরোনাম
সমস্যায় জর্জরিত ঢাবির কলা ভবন
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:০২
সমস্যায় জর্জরিত ঢাবির কলা ভবন
মহিউদ্দিন রাসেল, ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বিভিন্ন সঙ্কট ও সমস্যায় জর্জরিত দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ঐতিহ্যবাহী কলা অনুষদ। শ্রেণী কক্ষের সঙ্কট, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, অনুন্নত ল্যাব ও বিভিন্ন সমস্যায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীর সংখ্যানুপাতে শ্রেণী কক্ষে প্রশস্ততা অনেক কম ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা অন্যান্য অনুষদের চেয়ে বহুলাংশে দুর্লভ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।


সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কলা অনুষদের বেশীর ভাগ বিভাগে রয়েছে শ্রেণী কক্ষের সঙ্কট। এক বিভাগের ক্লাস অনেক সময় অন্য বিভাগের শ্রেণী কক্ষে করতে গিয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভেতর কথাকাটাকাটি ও মনোমালিন্যের ঘটনাও ঘটে।


এদিকে কলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় অবস্থিত সঙ্গীত ও নাট্যকলা বিভাগের শ্রেণী কক্ষগুলো অনেকটা আধুনিক ও মানসম্পন্ন পরিবেশ হলেও অন্যান্য বিভাগগুলোর অফিস ও শ্রেণী কক্ষের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। বেশীরভাগ শ্রেণী কক্ষের টেবিলগুলো এখনো প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষের মত জরাজীর্ণ।


অধিকাংশ বিভাগে নেই আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত নেট সংযোগ, এসি এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মচারী। কলাভবনে গিয়ে দেখা যায়, ইসলামের ইতিহাস, সংস্কৃত, পালি, বাংলা, ফারসি, ইসলামিক স্টাডিজ, উর্দু ও আরবি বিভাগের ল্যাবের বেশিরভাগ কম্পিউটারই ব্যবহারের অযোগ্য।


কলা ভবনের সামনের খোলা জায়গাটিও পড়ে আছে অযত্নে, আগের মতো নিয়মিত ফুল গাছ রোপণ করা হয় না। ফলে পরিবেশ অনেকটাই অসম্পূর্ণ। তাছাড়া কলা ভবনের মূল ফটকের পাশেই জমিয়ে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনা। শ্রেণী কক্ষগুলোর ভিতরে বাসা বেধেছে মাকড়সা, দেয়াল থেকে খসে পড়ে আবরণ।


কলা ভবনে শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হারে শৌচাগারের সংখ্যা অনেক কম। ওয়াশরুমগুলোতেও প্রবেশ করা কষ্টকর উৎকট দুর্গন্ধের কারণে। পানি জমে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকলেও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়না এসব প্রয়োজনীয় জায়গাগুলো।


বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ ফাহিম হাসান বলেন, আমরা অতি দ্রুত কলা ভবনের সংস্কার চাই। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের এ ঐতিহ্যবাহী ভবনটিতে।


আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, প্রতি বছর চারশো কোটিরও বেশি টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বাজেট করা হলেও তার বেশীরভাগ অর্থই খরচ হয় বেতন ও ভাতা আদায়ে। কাঠামোগত ও শিক্ষার উন্নয়নে বাজেট অনেক কম।


এসব বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু দেলওয়ার হোসেন বিবার্তাকে জানান, পর্যাপ্ত বাজেট ও উপাচার্যসহ কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণেই কলা ভবনের এ বেহাল দশা। আমরাও চাই কলা ভবনের উন্নয়ন। সম্ভবত সমন্বয়হীনতাই এর জন্য দায়ী। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখতে হলে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ইভেনিং কোর্স থাকায় দিন দিন তাদের ভবনগুলো উন্নত করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় কলাভবন স্পন্সরসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না বললেই চলে! পাশাপাশি নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা সম্পর্কে তিনি বলেন, অতি শীঘ্রই ক্যাম্পাসে যানবাহন প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। প্রবেশদ্বার নির্মাণের জন্য আলোচনা চলছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের যারা অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত প্রমাণ স্বাপেক্ষে আমরা নিয়মিত তাদের শাস্তির আওতায় আনছি।


ঢাবি কলা ভবনের এ সমস্যা সম্পর্কে ঢাবির নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বিবার্তাকে বলেন, পর্যাপ্ত বাজেটের অভাবই এ সমস্যার জন্য অনেকাংশে দায়ী। তারপরও তিনি প্রাপ্ত বাজেটের সমন্বয়সাধন করে সমস্যাগুলো দূরীকরণের সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও দ্রুতবাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।


বিবার্তা/রাসেল/শাহনেওয়াজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com