শিরোনাম
জুড়িতে বন্যার অবনতি, অন্তহীন দুর্ভোগ
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০১৭, ১৮:২২
জুড়িতে বন্যার অবনতি, অন্তহীন দুর্ভোগ
তানভীর আঞ্জুম আরিফ, মৌলভীবাজার
প্রিন্ট অ-অ+

দীর্ঘস্থায়ী পানিবন্দী হয়ে মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার মানুষ এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গত কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। বন্যার ফলে, উপজেলার প্রায় ২৩ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবনযাপন করছেন।


মানুষজন গরু-ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ অন্যান্য প্রাণী নিয়ে দুর্ভোগের সাথে দিনাতিপাত করছেন। অত্রঞ্চলের বন্যার পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে।


বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষ অসহায় ও দুর্ভোগের সাথে যুদ্ধ করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু ত্রাণ সহায়তার দরকার তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।


বন্যার্তদের জন্য প্রসাশনের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন তা তাদের পক্ষ থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না বলে অভিযোগ বন্যার্তদের।


বন্যার পানি দিন দিন এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, এলাকার বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর, রাস্থা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। বন্যায় শত শত খামারের মাছ ভেসে গেছে। আর খামারিসহ অন্যান্য মানুষের গরু, ছাগল নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।



এর আগেও অকাল বন্যায় হাকালুকি হাওরাঞ্চলের ধান, মাছ ও জলজ প্রাণীসহ অন্যান্য জীব তলিয়ে গিয়ে ও পানি দূষিত হয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে যায় কৃষকদের।


বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় যাদের নৌকা কিংবা কলার ভেলা আছে তারা কোনো রকমে অন্যত্র যাতায়াত করতে পারলেও যাদের নেই তাদের কষ্টের অন্ত নেই। বন্যায় উপজেলার প্রায় সব সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরপরেও মানুষজন বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য অধিক টাকা খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্য স্থানে চলাচল করছেন।


শুক্রবার সরজেমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে- জাঙ্গিরাই, নয়াগ্রাম, শিমুলতলা, ইউসুফনগর, পশ্চিম জুড়ি ইউনিয়নের বাছিরপুর, আমতৈল, খালেরমুখ, খাগটেকা, তালতলা, কালনিগড়, হরিরামপুর, কৃষ্ণনগরসহ প্রায় ২৩ টি গ্রামের মানুষ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও, সোনাপুর, শাহাপুর, রাজাপুর, নিশ্চিন্তপুর, গোবিন্দপুরও প্লাবিত।


হাকালুকির উত্তাল ঢেউয়ে মানুষ ঘর-বাড়িতে থাকতে পারছে না। তারপরও জীবন বাজি রেখে মাচার উপর ঠাঁই নিয়েছে অনেকে।


যারা বাড়ি-ঘরে থাকতে পারছে না তারা তাদের গবাদিপশু ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বন্যা দুর্গতদের জন্য প্রসাশনিকভাবে যে সংখ্যক আশ্রয় কেন্দ্র ও ত্রাণ সামগ্রী ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।


জুড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার দেবল সরকার বিবার্তাকে জানান, ত্রবারের বন্যায় প্রায় ৪৫০ হেক্টর আউস ধান নিমজ্জিত হয়েছে।



জুড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিন্টু চৌধুরী বিবার্তাকে জানান, পাহাড়ি ঢলে জায়ফরনগ ও পশ্চিম জুড়ি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে জায়ফরনগর ইউনিয়ন বেশি। প্রায় ২৩টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী। আমরা সর্বশেষ ৫০ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ বিশ হাজার টাকা পেয়েছি, যা থেকে ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানিও কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


বিবার্তা/আরিফ/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com