শিরোনাম
সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ভাটার টান
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:৫৮
সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ভাটার টান
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

পাঁচ মাস টানা উল্লম্ফনের পর ভাটার টান লেগেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে। একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ৩,১০০ কোটি টাকা। আগের মাস নভেম্বরে বিক্রি হয় ৪,৪০২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। এক মাসের ব্যবধানে বিক্রি কমার পরিমাণ ১,৩০২ কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।


এ প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই তেজি অবস্থায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। তবে ষষ্ঠ মাস ডিসেম্বরে এসে বিক্রি কমে গেছে।


সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে চলে যেতে পারে দাবি করে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


জুলাই থেকে ডিসেম্বর - এই ছয় মাসে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ২৩,১০০ কোটি টাকা। তবে, চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৯,৬১০ কোটি টাকা। অর্থবছরের পাঁচ মাসেই ভেঙ্গে যায় লক্ষ্যমাত্রা। নভেম্বরে মোট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়ায় ২০,৩১৯ কোটি টাকা।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে নীট বিক্রি হয় ৩,৪৯৮ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় মাস আগস্টে বিক্রি আরো বেশি হয়ে ৪,২৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। সেপ্টেম্বরে নীট বিক্রি হয়েছিল ৩,৮৫৪ কোটি টাকা। আর একক মাস হিসেবে নভেম্বরে বিক্রি হয় ৪,৪০২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র।


লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রতি মাসে সঞ্চয়পত্রের গড় বিক্রির লক্ষ্য ধরা হয় ১,৬৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম পাঁচ মাসের (জুলাই-নভেম্বর)প্রায় প্রতি মাসেই বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় ধারণা করা হয়েছিল বিক্রির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে মোট বিক্রি দাঁড়াবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি।


অন্যদিকে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ৩৮,৯৩৮ কোটি টাকার ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর)সরকারের নীট ঋণ দাঁড়িয়েছে (-) ৩,৩০৩ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার কোনো ঋণ নেয়নি, উল্টো আগের ঋণের প্রায় ৩,৯১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ফলে সরকারের নীট ব্যাংকঋণ ঋণাত্মক ধারায় নেমে গেছে।


এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকের আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে সুদ এখনও বেশি। ফলে বিক্রি কমলেও সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেটা বলা যাবে না। আর কয়েক বছর পর সম্প্রতি পুঁজিবাজারে চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। গত ক’মাসে শেয়ারবাজারে লেনদেন বেড়েছে। পুঁজিবাজারের মন্দা হঠাৎ কেটে যাওয়ায় অনেকে সেখানে বিনিয়োগ করছেন। এসব কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি সামান্য কমেছে।


অন্যদিকে, গত কয়েকবছরে বিক্রি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালের ২৩ মে সবধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার গড়ে ২ শতাংশ করে কমানো হয়।


বর্তমানে ৫ বছর মেয়াদি পারিবারিক সঞ্চয়পত্র সুদহার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এছাড়া ৫ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, ৩ বছর মেয়াদি ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, ৩ বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ ও ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com