শিরোনাম
সালতামামি: বিদ্রোহী-বহিষ্কারে আ.লীগে অস্বস্তি
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:৪৬
সালতামামি: বিদ্রোহী-বহিষ্কারে আ.লীগে অস্বস্তি
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। করোনা প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ার পর সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা বৃদ্ধি, ঢাকার দুই সিটির ইউনিট সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের উজ্জ্বীবিত করা, লাখো নেতাকর্মীকে নিয়ে রাজধানীতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিজয় র‍্যালি সংগঠনটিকে বছরের শেষ দিকে এসে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে রেখেছে। তবে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ বিতর্ক, দলের নেতাদের বেফাঁস মন্তব্য, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহীদের জয়জয়কার, সহিংসতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে বছর শেষ করছে আওয়ামী লীগ।


টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দলটি বেশ সফলভাবেই শেষ করেছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন অনুষ্ঠান। নানা আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও ইউপি নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতিতে বেশ সন্তুষ্ঠ আওয়ামী লীগ। বছরজুড়েই জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর খুনী উল্লেখ করে তার মরণোত্তর বিচারের দাবিতে সরব ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে শেষ করা বছরটিতে বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের সম্মেলন শুরু করেছে দলটি। করোনাকালে মানুষের পাশে থাকা দলের অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোও সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির তৎপরতা বেশ জোরেশোরেই চালিয়ে যাচ্ছে।


মানবিক কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ:


করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। করোনাকালে ১ কোটি ২৫ লাখেরও বেশি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, সাড়ে ১০ কোটি টাকা নগদ অর্থ সহায়তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছোসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। বছরের শুরুর দিকে করোনার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়লেও করোনা প্রাদুর্ভাব কমার সাথে সাথে চাঙ্গা হতে শুরু করে দলীয় কার্যক্রম। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউনিট সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূলের কর্মীদের জাগিয়ে তুলছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। দেশের সকল সাংগঠনিক বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সম্মেলন, বর্ধিত সভাও করেছে দলটি।



করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ৯ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা লিখিত রিপোর্টে তাদের এলাকা ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত বিস্তারিত রিপোর্ট দল প্রধানের সামনে উপস্থাপন করেন এবং প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানান। এসময় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া নির্বাচনের আগে দলের অভ্যন্তরীণ কলহ বিবাদ মীমাংসা করার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন। এরপর দলের সাংগঠনিক বিভাগীয় টিম কাজ শুরু করেন।


যুবলীগ:


করোনাকালে ত্রাণ সহায়তাসহ মানুষের পাশে থাকায় সর্বমহলে প্রশংসা কুঁড়িয়েছে যুবলীগ। করোনা সংক্রমণ কমার সাথে সাথে তৃণমূল সংগঠিত করতে মাঠে দেখা গেছে দলের নেতা-কর্মীদের। জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা করে নেতা-কর্মীদের সাংগঠনিকভাবে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে মনোযোগী ছিলো আওয়ামী লীগের এ সহযোগী সংগঠন।



আগস্ট মাসব্যাপী হতদরিদ্রদের পাশে থাকার কর্মসূচি ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। এছাড়া করোনায় ৪২ লাখ দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, বিভিন্ন দিবস পালন, কৃষকদের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণসহ নানামুখী কার্যক্রমে বছরজুড়েই যুক্ত ছিলেন দলটির নেতা-কর্মীরা।


ছাত্রলীগ:


করোনা মহামারিতে দেশজুড়ে অসহায়-দুস্থদের পাশে দেখা গেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের। লকডাউনে ছাত্রলীগের মানবিক কার্যক্রম সর্বমহলে প্রশংসাও কুঁড়িয়েছে। কৃষকদের ৯৬ হাজার শতাংশ জমির ধান কাটায় সহযোগিতা, প্রায় ১০ লাখ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, সাড়ে ৪ লাখ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, করোনায় মৃতদের লাশ দাফন, হ্যালো ছাত্রলীগ, টেলিমেডিসিন সেবা, ফ্রি অক্সিজেন ও অ্যাম্বুলেন্স সেবার মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে এ ছাত্র সংগঠনটি। তবে দেশের বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটি ‘প্রেস রিলিজ’ নির্ভর হওয়ায় বিস্তর সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে ছাত্রলীগকে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও উঠে। শেষদিকে এসে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্র সংগঠনটি।



মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী:


২০২০ সালে মুজিববর্ষ শুরু হলেও করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে অনুষ্ঠানমালা করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে চলতি বছরে স্বাধীনতার ৫০ বছর ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী নানা অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে দলটি। বছরের শুরুর দিকে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিব চিরন্তন’ ও ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ শীর্ষক ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।



এসব অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। বছরজুড়েই ছিলো আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নানা অনুষ্ঠান। গত ১৬ ডিসেম্বর মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সামরিক ও বেসামরিক প্রতিনিধিদল যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী শপথের ডায়াসে ‘মুজিববর্ষ’ বানান ভুল বিতর্ক বাদে বেশ সফলভাবেই মুজিববর্ষের আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানামালা শেষ করেছে আওয়ামী লীগ।


হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী বিতর্ক:


চলতি বছরের জুলাই মাসে এক ফেসবুক পোস্টে দেশ ও বিদেশে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠনের নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগে হাইব্রিড-অনুপ্রবেশকারী আলোচনাকে সামনে নিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য (বহিষ্কৃত) হেলেনা জাহাঙ্গীর। ফেসবুক পোস্টে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথেই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করে দলের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে দলটির মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পেয়ে যান তিনি। নানা আলোচনা-সমালোচনার পর উপকমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।



পরে বিতর্কিত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গুলশানের বাড়ি থেকে মদসহ গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় দলে অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিডদের নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আলোচনায় উঠে আসে ভূঁইফোড় এসব সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম। এরপর থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য-বিবৃতিতে ভূঁইফোড় সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও বছর শেষে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।


জাহাঙ্গীর-মুরাদ বিতর্ক ও বহিষ্কার:


বছরজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বেফাস মন্তব্য, অতিকথনে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে আওয়ামী লীগ। ঘটেছে বহিষ্কারের ঘটনাও। গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটূক্তি করে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। এরপর ৩ অক্টোবর দলের স্বার্থপরিপন্থী কর্মকান্ড ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ। জাহাঙ্গির দাবি করেছিলেন তার বক্তব্যকে ‘সুপার এডিট’ করে কণ্ঠ নকল করা হয়েছে। যদিও পরে শোকজের জবাব দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান মেয়র। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। গত ১৯ নভেম্বর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। এরপর ২৫ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মেয়র পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাহাঙ্গিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন ক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা।



এরপর অক্টোবর মাসে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া ও সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করে আলোচনায় উঠে আসেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। এনিয়ে আলোচনার শুরু হলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, এই মুহূর্তে সংবিধানে এ ধরণের পরিবর্তন করার কোনো পরিকল্পনা নেই। নভেম্বর মাসে ভার্চুয়াল এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি চেয়ারপারসনের নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী। এরপর এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে তার আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর কিছু অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। এতে করে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশনার পরদিনই পদত্যাগ করেন ডা. মুরাদ হাসান। এছাড়া জামালপুর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক থেকে বহিষ্কার করা হয় মুরাদকে। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলাও করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবিরা।



চলতি বছরের ২২ নভেম্বর রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ নিয়ে কটূক্তি করেন। এর দুটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর আব্বাস আলীকে নিয়ে শুুুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। এরপর ২৪ নভেম্বর পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ আব্বাস আলীকে পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করে। ২৬ নভেম্বর তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ। ওইদিন ফেসবুক লাইভে এসে আব্বাস আলী নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চান। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ আসার পর মেয়র আব্বাস আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো স্থানীয় সরকার বিভাগ। কিন্তু আব্বাস আলী তার জবাব দেননি। এরপর মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাকে। এরপর গত ১ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন তিনি।


ইউপি নির্বাচন ও আওয়ামী লীগ:


করোনা প্রাদুর্ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সেপ্টেম্বর মাস থেকে আবারো শুরু করে নির্বাচন কমিশন। দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হওয়া এসব ইউপি নির্বাচনে ধাপে ধাপে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এখন পর্যন্ত চারটি ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলীয় প্রতীক দেয়া হলেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে অভিযোগের স্তুপ জমা পড়েছে।



এসব অভিযোগের মধ্যে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সাবেক নেতা, রাজাকার পুত্রদের নৌকার মনোনয়ন দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। যার কারণে বেশ কিছু জায়গায় প্রার্থী পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে দলটি। ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নিজেদের বলয়ের আধিপত্য, আত্মীয়করণ করে পছন্দের প্রার্থীদের নৌকার মনোনয়ন দেয়ার অভিযোগ উঠার পাশাপাশি ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্যেরও অভিযোগ উঠেছে।


অন্যদিকে দলের কঠোর হুঁশিয়ারির পরও নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পদধারী নেতারা। প্রায় সব ইউপিতেই ছিলো নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী। বিভিন্ন জায়গায় বিদ্রোহীতে বিপাকে পড়েন নৌকার প্রার্থীরা। এ কারণে হাজারেরও বেশি বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। তবে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে প্রায় সমানতালে দেশের বিভিন্ন ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। বিদ্রোহীদের জয়জয়কার ও ইউপি নির্বাচনি সহিংসতা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে গত ১৯ নভেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।


বিবার্তা/সোহেল/গমেজ/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com