শিরোনাম
ব্যতিক্রমী নানা উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রশংসিত কাউন্সিলর আসাদ
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:১২
ব্যতিক্রমী নানা উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রশংসিত কাউন্সিলর আসাদ
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের শুরুতে মানুষ আতঙ্কে ঘরবন্দী হলেও তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিনামূল্যে শাক-সবজি বিতরণ করেছেন। আবার কঠোর লকডাউনের মাঝে অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ। কখনো রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন। আবার শীতকালে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বলও বিতরণ করেছেন। নিজ এলাকায় ডেঙ্গু মোকাবেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জীবানু নাশক স্প্রে কর্মসূচি করেছেন। এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে বোতল আকৃতির ওয়েস্ট বিন, আইসক্রিম বিনও স্থাপন করেছেন। তার এমন সব উদ্যোগ ইতোমধ্যে কুড়িয়েছে প্রশংসা।


এমনই একজন জনপ্রতিনিধি হলেন কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচিতদের শপথ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৭ মে দায়িত্ব নেন নানামুখী ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বাস্তবায়নের নায়ক কাউন্সিলর আসাদ।


এ দায়িত্ব নেয়ার আগ থেকে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন এ জনপ্রতিনিধি। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা শনাক্ত হলে মাঠ পর্যায়ে নেমে মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ শুরু করেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে মাস্ক, হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন।



দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রামণ বেড়ে গেলে সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণা করলে অনেক মানুষ ঘরবন্দি হয়ে কর্মহীন কর্মহীন হয়ে পরেন। অনেকেই অর্থ সংকট ও খাদ্যের সঙ্কটে পরেন। বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে এ জনপ্রতিনিধিকে। সাথে সাথে উদ্যোগ নিন তিনি। অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। লকডাউনের সময়ে বিনামূল্যে শাক-সবজি বিতরণ করার মতো অভিনব কর্মসূচি পালন করেছেন। পিকআপ ভরে সবজি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঘুরেছেন। হ্যান্ডমাইক নিয়ে নিজে ছুটেছেন এ কার্যক্রমে। বিভিন্ন সময়ে লকডাউনের মাঝে দফায় দফায় চলেছে তার এ কার্যক্রম। সর্বশেষ তার এ কার্যক্রম চলতি বছরের এপ্রিলে সর্বাত্মক লকডাউন সময়ে করা হয়েছিল।


শুধু সবজি বিতরণ কর্মসূচি নয়, চলমান কোভিড সঙ্কটের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়ে এলাকার অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন কমিশনার আসাদ। কখনো তাদের দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা, কখনো দিয়েছেন ঈদ উপহার, আবার কখনো তাদের মাঝে রান্না করে ভ্রাম্যমাণ ভাবে তা বিতরণ করেছেন। শীত মৌসুমে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বলও বিতরণ করেছেন।


নিজ এলাকার ভাঙা ও নাজুক রাস্তা মেরামতেও জুড়ি নেই তার। নিজে নেমে সরাসরি অংশগ্রহণ করে এ কাজ করছেন।


ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২১ নম্বর ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর নিজ ওয়ার্ডকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নিলেন অভিনব আরেক উদ্যোগ। এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্থাপন করেছেন বোতল আকৃতির ওয়েস্ট বিন। বোতলের ভিতর বোতল বন্দির এ অভিনব উদ্যোগের সুফলও দেখা যাচ্ছে। এ এলাকায় জনগণ ও আগতরা বোতলসহ উচ্ছিষ্ট এখানে ফেলছেন। এরপর তিনি আইসক্রিমের বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আইসক্রিমের বিন বসালেন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ বিন বসানো হয়। এরপর আরো বিভিন্ন জায়গায় এ বিন বসানো হয়। আইসক্রিম সদৃশ এই বিনে আইসিক্রিমের ময়লা ফেলানোর কার্যক্রম ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়াও ফেলেছে।



এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২১ নং ওয়ার্ডের এই এলাকায় ডেঙ্গু মোকাবেলায় 'ভলেন্টিয়ার অফ শেখ তাপস' টিম গঠন করেছেন কাউন্সিলর আসাদ। ডিএনসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের অনুপ্রেরণায় স্বেচ্ছায় এই কাজ করছে ১১ সদস্যের এই স্বেচ্ছাসেবক টিমটি। এর সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ। আসাদের গঠিত এ টিম ২১ নং ওয়ার্ডের অলিগলিতে গিয়ে ডেঙ্গুর লার্ভা ধ্বংস করে কীটনাশক ছিটানোর কাজ করছেন।


কাউন্সিলর আসাদের কার্যক্রম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, কাউন্সিলর আসাদ ভাইয়ের কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। জনতার দ্বারে দ্বারে ঘুরে তাদের কল্যাণের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম করে যাচ্ছেন তিনি। কখনো কঠোর লকডাউনের মাঝে মানুষের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে শাক-সবজি নিয়ে ছুটেছেন, কখনো ত্রাণ বিতরণ, কখনো রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন। আবার শীতকালে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বলও বিতরণ করেছেন। নিজ এলাকায় ডেঙ্গু মোকাবেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জীবানু নাশক স্প্রে কর্মসূচি করেছেন তিনি নিজে।


ঢাবির এ শিক্ষার্থী বলেন, আসাদ ভাই সত্যিকারের জনপ্রতিনিধি। তার মতো লোক খুব দরকার।


শাহবাগে কথা হয় এ ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মোক্তার হোসেনের সাথে। আসাদের কার্যক্রম নিয়ে তিনি বিবার্তাকে বলেন, এই যে শাহবাগসহ এ এলাকায় বোতল আকৃতির ওয়েস্ট বিন, আইসক্রিম বিন দেখছেন এগুলো আসাদের বুদ্ধিমত্তায় স্থাপন করা হয়েছে। নিজ এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে তার এমন উদ্যোগে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে। উদাসীনভাবে অনেকে ইতোমধ্যে ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ফেললেও বোতল আকৃতির এসব বিন দেয়ার পর মানুষের মাঝে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।



তার কার্যক্রম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, আসাদ আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং একইসাথে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ এ এলাকায় তার কার্যক্রম দেখেছি এবং বেশ প্রশংসা শুনেছি। সত্যিকারের জনপ্রতিনিধি হিসেবে সে নিজেকে ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছে। আমি আশা করি সে তার বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা কাজে লাগিয়ে ২১ নং ওয়ার্ডকে পরিপূর্ণ আধুনিকায়ন করে গড়ে তুলবে।


সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ বিবার্তাকে বলেন, জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে কাউন্সিলর বানিয়েছে। তাই তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম করেছি।


শাকসবজি বিতরণের বিষয়ে তিনি বলেন, কঠোর লকডাউনের মাঝে মানুষ যখন ঘর থেকে বের হতে পারছিল না, তখন এ উদ্যোগ নিয়েছি। লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে যাওয়া অসহায়দের ত্রাণ দিয়েছি। এরপর দেখলাম লকডাউনের কারণে হোটেল বন্ধ থাকায় রাস্তায় থাকা অসহায়রা খাদ্য সঙ্কটে ভুগছেন। এ বিষয়টি মাথায় নিয়ে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছি।


রাস্তায় ওয়েস্ট ও আইসক্রিম বিন বসানোর বিষয়ে আসাদ বলেন, আমি গভীরভাবে লক্ষ্য করলাম মানুষ রাস্তার আশপাশে বোতলসহ যেসব উচ্ছিষ্ট ফেলে দেয় সেখানে অনেক সময় পানি জমে মশা জন্মায়। এ মশাই ডেঙ্গুর মতো ভয়াবহ রোগের কারণ। এ চিন্তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ওয়েস্ট ও আইসক্রিম বিন বসালাম। এখন এটা থেকে সুফলও আসছে। মানুষ যত্রতত্র ময়লা না ফেলে এখানে ফেলতে আগ্রহী হয়েছে।


ভলেন্টিয়ার অফ শেখ তাপস' টিম গঠনের বিষয়ে এ কাউন্সিলর বলেন, করোনা মহামারীতে আরেক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ডেঙ্গু। এ ডেঙ্গু থেকে এলাকার মানুষকে সচেতন করতে এবং ডেঙ্গুর লাভা ধ্বংস করতে এ টিম গঠন করেছি। এ টিম এলাকার অলিগলিসহ সব জায়গায় যেখানে ডেঙ্গু বংশ বিস্তারের সম্ভাবনা আছে সেখানে কাজ করছে। আমি নিজেও তাদের সাথে থাকছি এবং সার্বিক তত্ত্বাবধান করছি।


তিনি আরো বলেন, জনপ্রতিনিধির কাজই হলো জনগণের সেবা করা। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এসব করা আমার দায়িত্ব। যেকোনো সঙ্কটে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন বলে জানান তিনি।


বিবার্তা/রাসেল/গমেজ/শাহিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com