শিরোনাম
ফুরফুরে মেজাজে এরশাদ
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৯:১৪
ফুরফুরে মেজাজে এরশাদ
জাহিদ বিপ্লব
প্রিন্ট অ-অ+

দলের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লাখের ঘর ছাড়িয়ে যাওয়ায় এবং পরবর্তীতে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রশংসা করায় ফুরফুরে মেজাজে আছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।


দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝেও চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি সফল মহাসমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে নিজের শক্তিশালী অবস্থানের বার্তা পৌছে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির শীর্ষনেতারা।


এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বিবার্তাকে বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করতে অনেকে নানা অপচেষ্টা চালিয়েছেন, কিন্তু পারেননি। ভবিষ্যতেও কেউ এ পার্টিকে ধ্বংস করতে পারবেন না।


তিনি বলেন, রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি একটি বড় ফ্যাক্টর। মহাসমাবেশে লাখো নেতাকর্মীর উপস্থিতির মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বার্তা দিয়েছে। পল্লীবন্ধু এরশাদের নেতৃত্বে সারাদেশে আবার ঘুরে দাঁড়াবে জাতীয় পার্টি।


জাপা মহাসচিব বলেন, এরশাদের হাতের ছোঁয়ায় সারাদেশে সোনা ফলাতে চাই। আজ আমরা দুর্বল নই। এরশাদের যে কোনো নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে সারাদেশের লাখ লাখ নেতাকর্মী প্রস্তুত আছে। মানুষ এরশাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এরশাদকেই তারা ক্ষমতায় দেখতে চায়।


জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এর সফলতা নিয়ে শংকিত ছিলেন দলটির নেতারা। এর আগে ২০১৫ সালে দলের তৎকালীন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মহাসমাবেশে দশ লক্ষ লোকের শোডাউনের কথা বলে বিশ হাজার লোকও জড়ো করতে পারেননি। সেই ব্যর্থতাকে স্মরণে রেখে দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ শীর্ষ নেতারা গুরুত্বসহকারে জেলা, উপজেলা এবং দলীয় সংসদ সদস্যের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন। মহাসচিব নিজেও নিজ জেলা থেকে মহাসমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটিয়ে বড় ধরনের শোডাউন করেছেন।


এছাড়া দলীয় এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার বিশাল মিছিল সেদিন সবার দৃষ্টি কেড়েছে। দলের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, ইয়াহিয়া চৌধুরী, সালমা ইসলাম, আমির হোসেন ভ’ইয়া, মুনিম চৌধুরী বাবু, সালাউদ্দিন মুক্তি নিজ নিজ এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটিয়ে বড় ধরনের শোডাউন করেছেন। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, হাজী সাইফুদ্দিন মিলন, কুমিল্লা দক্ষিণ থেকে এএইচএন শফিকুর রহমানও বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হন।


দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও দীর্ঘদিন পর সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের একসাথে করতে পেরে খুশি। বিশেষ করে জাতীয় যুব সংহতি, জাতীয় ছাত্র সমাজ ও মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্যণীয়।


ওই মহাসমাবেশের পরদিন ২ জানুয়ারি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সভায় এরশাদ সম্পর্কে বলেন, দেশে গণতন্ত্র আজ বন্দী। আপনি (এরশাদ) আমাদের সাথে রাজপথে আসুন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনি। অথচ ডিসেম্বরের ১৭ তারিখেও এরশাদের সমালোচনায় মুখর ছিলেন মির্জা ফখরুলসহ ২০দলীয় জোটের নেতারা।


৪ জানুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সভায় এরশাদের পক্ষ অবলম্বন করে সরকারকে এক হাত নিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার এরশাদের সাথে প্রতারণা করছে। এরশাদকে চাপে রাখতে মৃতপ্রায় মামলাগুলো জাগ্রত করা হচ্ছে।


বিএনপির হঠাৎ এই এরশাদপ্রীতি নিয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বিবার্তাকে বলেন, জাতীয় পার্টি যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি, আমরা তা পহেলা জানুয়ারি প্রমান করেছি। অনেকে মনে করেছিলো জাতীয় পার্টি ঝিমিয়ে পড়েছে। এই লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখে বিএনপিসহ দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এরশাদকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে।


বিবার্তা/বিপ্লব/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com