সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও এ রোগে আঘাত করেছে। এ পর্যন্ত ১৭ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন রোগী মারা গেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে নেয়া হয়েছে বাড়তি সর্তকতা। বন্দিদের সাথে স্বজনদের স্বাক্ষত মাসে একবার করতে পারবেন। এছাড়াও কারাগারে ভাইরাসটি যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য প্রতিটি কারাগার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কারা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
কারা সূত্র জানায়, সম্প্রতি ইতালিফেরত একজন চেক জালিয়াতি মামলায় কারাগারে আসেন। তার সঙ্গে একসঙ্গে কারাগারে আসে আরো ৩৭ বন্দি। তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। পরে ওই বন্দির দুইবার কোভিড-১৯ টেস্ট করোনা হলে ফলাফল ‘নেগেটিভ’ আসে। তবে কয়েদিদের মধ্যে যেন প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য নানা পদক্ষেপ কারা কর্তৃপক্ষ।
সূত্রমতে, আগে একজন বন্দি ১৫ দিনে একবার তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। তবে সমাগম এড়াতে বর্তমানে মাসে একবার বন্দিদের এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও কারাগারের সব বন্দিদের হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি কোনো বন্দির জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে তাকে আলাদা ওয়ার্ডে রাখার জন্য নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, যারা কারাগারে আসছেন তাদেরকে প্রথম রাতে আলাদা রাখা হচ্ছে। পরদিন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে স্বাভাবিক থাকলে সেল বরাদ্দ করা হচ্ছে। এছাড়া যেকোনো জ্বর হলেই তাদের কারাগারের ভেতরের হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পৃথকভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবার হোসেন চৌধুরী বিবার্তাকে বলেন, কারাগারে বন্দিদের হাত ধোয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও কারাগারের ভেতরের সব জায়গা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী কারাগারে নেই। তবে এ রোগের লক্ষণও কোনো বন্দির মধ্যে নেই। এ রোগ থেকে বাঁচতে বন্দিরাও সহযোগিতা করছেন বলে জানান তিনি।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সর্তক রয়েছি। দেশের সকল কারাগারে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। সম্প্রতি সিলেট বিভাগে কারাগার পরির্দশন করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও সর্তক থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। কারাগারে বন্দিদের নিয়ে আমরা সর্তক রয়েছি এবং স্বজনদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরো তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী এবং তারা একই পরিবারের সদস্য। সবমিলিয়ে দেশে এখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জনে দাঁড়াল।
বিবার্তা/খলিল/জাহিদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]