মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইংয়ের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে ওএসডি করার ১৬ দিন অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখনো বিএনপি-জামায়াতের ওই সিন্ডিকেটের কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি। যেন কৌশলী বিএনপি-জামায়াতের ওই সিন্ডিকেটকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য এখনো সুখ-নিদ্রায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে শিক্ষা ভবনে গড়ে ওঠে বিএনপি-জামায়াত সিন্ডিকেট। আর ওই সিন্ডিকেটের মূলহোতা ছিলেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইংয়ের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণে হলুদ পাঞ্জাবি পরেন ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। পরে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এ সময় অনেকেই মন্তব্য করেন, ‘শোক দিবস পালন না করে মাউশির ওই কর্মকর্তা বসন্ত উৎসব পালন করছেন।’

শুধু তাই নয়, গত ২১ আগস্ট শিক্ষা ভবন সংলগ্ন সিরডাপ মিলনায়তনে একটি গোল টেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় ১৫ আগস্টে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনাকে ‘নিছক দুর্ঘটনা’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ ঘটনায় নিউজ পোর্টাল বিবার্তা২৪ডটনেটসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কলেজ-২) ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে ওএসডি করা হয়।

এরপর মাউশির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের সহযোগীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায় ছাত্রলীগ।

গত ২৫ আগস্ট মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুকের কাছে মৌখিকভাবে এ দাবি উপস্থাপন করা হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি অতিদ্রুত শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবকে জানাবেন বলে জানান মহাপরিচালক। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সঙ্গে শনিবার এবং রবিবার একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে তিনি বিবার্তাকে বলেছিলেন, `বিএনপি-জামায়াতের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি আমরা দেখছি। আমাদের এখানে যদি ক্ষতিকর কেউ থাকে, তাহলে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।'

উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াত সিন্ডিকেটের মূলহোতাড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের অন্যতম সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন- মাউশির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার সহকারী পরিচালক-১ সাবিনা বেগম, সহকারী পরিচালক-২ দিল আফরোজ বিনতে আছির, সহকারী পরিচালক মিনহাজ উদ্দীন আহম্মদ, গবেষণা কর্মকর্তা রোকসানা কণা, মো. আজিম কবীর ও গবেষণা কর্মকর্তা (একিউএইউ) মোছাম্মদ আয়শা সিদ্দিকা মৌসুমী।

বিবার্তা/খলিল/উজ্জ্বল/রবি

আরো পড়ুন...

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তৎপর বিএনপি-জামায়াত সিন্ডিকেট!

অবশেষে বিএনপি-জামায়াত সিন্ডিকেটের মূলহোতা সেই জাহাঙ্গীর ওএসডি

শিক্ষা ভবনে আতঙ্কে জাহাঙ্গীরের সহযোগীরা!

বিএনপি-জামায়াত সিন্ডিকেটমুক্ত শিক্ষা ভবন চায় ছাত্রলীগ