শিরোনাম
তিনটি ধাপে নিবন্ধন হবে হ্যান্ডসেট
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৩৮
তিনটি ধাপে নিবন্ধন হবে হ্যান্ডসেট
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি হ্যান্ডসেটকে নিবন্ধনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি)।


বাংলাদেশে বছরে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ মোবাইল হ্যান্ডসেট নানা অসাধু উপায়ে সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে দেশের বাজারে চলে আসছে। এতে প্রতিবছর ৮শ থেকে এক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।


তাই অবৈধভাবে আমদানি ও নকল মোবাইল হ্যান্ডসেট চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে যতোগুলো রেডিও ডিভাইস অর্থাৎ মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহৃত হবে সেই সেটগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানায় সংস্থাটি।


এতে গ্রাহকদের সিমের মতো হ্যান্ড-সেটটিও নিবন্ধিত থাকবে।


বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক জানান, গ্রাহকদের হ্যান্ডসেটের গুনগত মান নিশ্চিতের পাশাপাশি সকলের সুবিধার্থে আইএমইআই ডেটাবেস চালু করা হচ্ছে। এটি চালু হলে দেশে অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট প্রবেশ বন্ধ হবে। সেই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। তবে অনেকের আত্মীয়-স্বজন দেশের বাইরে থাকেন তাদের কথা মাথায় রেখে আমরা ইতিমধ্যে ৫টি থেকে বাড়িয়ে ৮টি হ্যান্ডসেট নিয়ে আসার সুবিধা দিয়েছি। কেবল যারা বৈধভাবে হ্যান্ডসেট নিয়ে আসবেন তাদের সুবিধা চিন্তা করেই এটি বাস্তবায়ন করেছি। যাতে কারো কোনো অভিযোগ না থাকে।


আইএমইআই ডেটাবেস চালু হলে দেশে গ্রে মার্কেটের (অবৈধ হ্যান্ডসেট বিক্রির বাজার) সংখ্যা কমে যাবে। পাশাপাশি হ্যান্ডসেটের গুনগত মান নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।


তিনি জানান মূলত তিনটি ধাপে এই প্রক্রিয়াটি শুরু করা হবে।


প্রথম ধাপ : বৈধ ফোন চিনে রাখুন
প্রথমত, বাংলাদেশে যতোগুলো হ্যান্ডসেট বৈধভাবে আমদানি হচ্ছে এবং স্থানীয়ভাবে যে মোবাইলগুলো অ্যাসেমব্লিং করা হচ্ছে বা উৎপাদিত হচ্ছে সেগুলোর ১৫ ডিজিটের স্বতন্ত্র আইএমইআই নম্বর নিয়ে একটি বৈধ ফোনের ডাটাবেজ তৈরি করা হবে।


এতে মানুষ যখন মোবাইল ফোন কিনতে যাবেন তখন তারা সেই সেটটির আইএমইআই নম্বর দিয়ে জানতে পারবেন যে তাদের সেটটি বৈধ নাকি অবৈধ। ইআইআর এর মাধ্যমে দেশের প্রতিটি সক্রিয় সেটকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।


দ্বিতীয় ধাপ : হ্যান্ডসেট কিভাবে নিবন্ধন করবেন
দ্বিতীয় ধাপে বিটিআরসি তাদের ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (ইআইআর) খসড়া নির্দেশনা- ইআইআর তৈরি করবে। যার আওতায় দেশের প্রতিটি সক্রিয় সেটকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এরিমধ্যে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির ইআইআর যাচাই করে বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য ২৪ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিটিআরসি।


প্রতিবেদনটি যাচাইয়ের জন্য মোবাইল অপারেটরগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখানে যদি কোন সংশোধনের প্রয়োজন তাহলে সেটা সম্পন্ন করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রতিবেদনটি বিটিআরসির কমিশনে পাঠানো হবে।


ফোনের আইএমইআই নম্বর যাচাই করে দেখুন আপনার সেটটি বৈধ কিনা। খসড়া নির্দেশনাটিকে চূড়ান্ত হলে প্রত্যেক অপারেটরকে তাদের নেটওয়ার্কের আওতায় থাকা প্রতিটি সক্রিয় হ্যান্ড-সেটের ডাটাবেজ তৈরির সময় বেঁধে দেয়া হবে।


এখানে গ্রাহকদের হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য কোথাও যেতে হবেনা। তারা নিজেদের নিবন্ধিত সিমটি সেটে সক্রিয় করলেই সেটটি ওই নামে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হয়ে যাবে।


ওই সেটে যদি দ্বিতীয় সিম ব্যবহার করতে হয় তাহলে সেটাও অবশ্যই একই নামে নিবন্ধিত সিম হতে হবে। এছাড়া কারও যদি একাধিক সেট থাকে তাহলে তিনি দ্বিতীয় সেটটিতে যে নামের সিমটি সক্রিয় করবেন, সেই নামেই সেটটি নিবন্ধিত হয়ে যাবে। তখন ওই সেটে অন্য নামের কোন সিম চলবেনা। অর্থাৎ একটি সেট একজনের নামেই নিবন্ধিত হবে। এভাবে একেকটি অপারেটরের আলাদা ডাটাবেজ সম্পন্ন হবে।


তৃতীয় ধাপ : কমন সার্ভার
তৃতীয় ধাপে সরকার একটি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করবে যারা বিটিআরসির জন্য এই কেন্দ্রীয় প্লাটফর্ম বা কমন সার্ভার তৈরি করবে। যেখানে প্রত্যেকটি অপারেটরের ডাটাবেজগুলো সিঙ্ক্রোনাইজ হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশে সক্রিয় প্রতিটি হ্যান্ডসেট কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হবে।


তখন এর নাম হবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার- এনইআইআর। এতে ইআইআর এ নতুন কোন ডেটা সংযুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা এনইআইআরে চলে আসবে।


বিবার্তা/উজ্জ্বল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com