শিরোনাম
ভবিষ্যতের স্মার্ট গাড়ি
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০১৮, ১৭:১১
ভবিষ্যতের স্মার্ট গাড়ি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গাড়ির ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট' বলতে আজকাল বোঝায়, যে গাড়ি নিজেই নিজেকে পার্ক করতে বা খোলা রাস্তায় চলতে পারে – চালকের হাত দেয়ার দরকারই পড়ে না। ‘ইন্টেলিজেন্ট ড্রাইভিং' নামের একটি ইউরোপীয় প্রকল্পের আওতায় এরকম নানা নতুন প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।


ইন্টেগ্রেটেড ভেহিকল সেফটি প্রকল্পের গবেষক মরিস কোয়াকের্নাট জানান, ‘‘এ গাড়িতে এমন সরঞ্জাম আছে, যা দিয়ে গাড়ি চালানো যায়, আবার অন্যান্য গাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়, এছাড়া এই সব তথ্য নথিবদ্ধ করা যায়। যোগাযোগ ও অবস্থান নির্ণয়ের জন্য গাড়ির ছাদে অ্যান্টেনা লাগানো আর গাড়ির সামনে ক্যামেরা ও র‍্যাডার বসানো আছে, যাতে আশপাশের যানবাহনের ওপর নজর রাখা যায়।''


গাড়িগুলো যদি রাস্তার অন্যসব গাড়ি, এমনকি ট্র্যাফিক লাইটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে, ‘কথা' বলতে পারে, তাহলে গাড়ি চালানোটা সত্যিই আরামদায়ক হয়ে উঠবে। হল্যান্ডের এক বিমানঘাঁটিতে বিভিন্ন ইইউ দেশের উদ্ভাবকরা তাদের এ প্রযুক্তি প্রদর্শন করছেন।


কোয়াকের্নাট বলেন, ‘‘আপনি দেখছেন যে, আমি পেডাল ছুঁচ্ছি না, গাড়ি রয়েছে স্বয়ংক্রিয় মোডে। আমি শুধু স্টিয়ারিং ঘোরাচ্ছি।''


আগের হাল যেদিকে যায়


এই প্রণালীতে গাড়িটা তার আগের গাড়ির স্পিড হুবহু নকল করে। ফলে দু'টি গাড়ির মধ্যে দূরত্ব সবসময় এক থাকে। কোয়াকের্নাটের ভাষ্যে, ‘‘আগের গাড়িটার গতি, গতিবেগ বৃদ্ধি বা ব্রেক কষা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই গাড়িটাকে জানিয়ে দেয়া হয়; সেই তথ্য আবার এই গাড়িটার বিভিন্ন সেন্সর, অর্থাৎ রাডার ও ক্যামেরা থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে যোগ করা হয়। এখন যেমন দেখছেন, আগের গাড়িটা ব্রেক কষলে, আমরাও ব্রেক কষছি। অর্থাৎ আমরা স্বয়ক্রিয়ভাবে আগের গাড়িটাকে অনুসরণ করে যাচ্ছি।''


রাস্তায় যানচলাচলের অবকাঠামো যদি আরো ‘স্মার্ট' হয়, তাহলে যানজটের শঙ্কা কমবে এবং লাল আলোয় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। কেননা গাড়ির কাছ থেকে সংকেত পেয়ে ট্র্যাফিক লাইট নিজের থেকেই সবুজ হয়ে যাবে; ওদিকে গাড়ির কম্পিউটার আগে থেকেই বলবে, ব্রেক কষার দরকার নেই।


ভারী ট্রাকগুলোয় একবার ব্রেক না কষলে, সব মিলিয়ে প্রায় এক লিটার করে তেল বাঁচে।


গাড়ির সঙ্গে গাড়ির আলাপ


ইমটেক ট্র্যাফিক অ্যান্ড ইনফ্রা কম্পানির রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর সিবে টুর্কস্মা বললেন, ‘‘কল্পনা করুন, প্রতিটি গাড়ি প্রতিটি গাড়ির সঙ্গে কথা বলতে পারছে; প্রতিটি গাড়ি প্রতিটি ট্র্যাফিক লাইটের সঙ্গে কথা বলতে পারছে; প্রতিটি গাড়ি রাস্তায় ট্র্যাফিক সাইনের সঙ্গে কথা বলতে পারছে, সেই ট্র্যাফিক সাইনও আবার আপনার গাড়ির সঙ্গে কথা বলছে। এই সমস্ত গাড়ি থেকে পাওয়া অনামা তথ্যের ভিত্তিতে গোটা নেটওয়ার্কটা অনেক ভালোভাবে ম্যানেজ করা সম্ভব হবে। কাজেই এই প্রণালীর ব্যবহার যতো ব্যাপক হবে, যানচলাচল ততোই বেশি কার্যকরী হবে।''


সাইকেলচালক অথবা পথচারীদের কাছে ওয়্যারলেস মার্কার থাকার ফলে অন্ধকারেও তাদের ‘দেখতে' পাওয়া যাবে। ফলে তাদের নিরাপত্তা বাড়বে।


মরিস কোয়াকের্নাট দেখালেন, ‘‘এই সাইকেলটায় একটা ব্ল্যাক বক্স লাগানো আছে। তথ্য পাঠানোর জন্য সেই ব্ল্যাক বক্সের যেমন অ্যান্টেনা আছে, সেরকম একটি জিপিএস রিসিভার আছে। মোড়ের দিকে যে গাড়িটি আসছে, ব্ল্যাক বক্স থেকে তার দিকে এই সমস্ত তথ্য পাঠানো হচ্ছে। কাজেই সাইকেলটা এবার এই ট্রাকটার পেছন থেকে এভাবে মোড়ের দিকে আসছে।''


প্রকল্পের সমন্বয়কারী গাব্রিয়েল সিমচিচ বললেন, ‘‘ভবিষ্যতে সেটাই হবে বলে আমার ধারণা : সমন্বয়কৃত যানবাহন আর আরো বেশি অটোমেশন। এবং আমরা সেটা সম্ভব করবো। অটোমেশন সহায়ক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বিমানযাত্রায় বা রেলযাত্রায় তা ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে, যার ফলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে। কিন্তু রাস্তার গাড়ি চলাচলে আজও বহু দুর্ঘটনা ঘটে, প্রধানত গাড়িচালকের ভুলে।''


সে প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবার মোটরনির্মাতা আর সরকারি নিয়ন্ত্রকদের তা প্রয়োগ করতে হবে আর সমাজকে মেনে নিতে হবে যে, নতুন প্রজন্মের গাড়িগুলো নিজেরাই নিজেদের চালাতে সক্ষম। সূত্র : ডিডাব্লিউ


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com