হ্যালিও সিরিজের ‘হেলিও এস১০’ মডেলের সেলফি স্পেশালিস্ট একটা নতুন ফোন দেশের বাজারে নিয়ে এলো এডিসন গ্রুপ। অ্যান্ড্রয়েড নুগাট ৭.০ অপারেটিং সিস্টেমে চালিত হ্যালিও সিরিজের এটাই প্রথম স্মার্টফোন।
ডিজাইন
হেলিও এস১০ খুবই প্রিমিয়াম বিল্ট এবং স্লিম। ব্যাকপার্টের মেইন প্যানেল মেটাল এবং সাধারণভাবেই সাইড প্যানেল প্লাস্টিক খুব সম্ভবত। মাঝখানে ছোট একটি ক্যামেরা বাম্প আছে যা ব্যাক ডিজাইনে নতুনত্ব দিয়েছে। বডি খুব রাফ ও টাফ। যদিও ডিসপ্লে বেজেলখানি আরেকটু চিকন হলে বেশি সুন্দর লাগতো।
আর সিম কার্ড স্লট হিসেবে আছে হাইব্রিড স্লট যাতে দুটি সিম অথবা, একটি সিম এবং একটি মেমরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
ডিসপ্লে
হেলিও এস১০ এ ৫.৫ ইঞ্চি বড় এবং কালারফুল আইপিএস ফুল এইচডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। ডিসপ্লে কন্টেন্ট উপভোগ্য ছিলো সবসময় এর কালার একুরেসির কারণে। কোনো এক্সেসিভ কালার হিউ দেখতে পাওয়া যায়নি এবং সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে গেলেও ওভার এক্সপোজড হয়ে যাচ্ছিলোনা। ডিসপ্লে তে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৩ ব্যবহার হয়েছে প্রটেকশনের জন্য। তাই স্ক্র্যাচ নিয়ে তেমন চিন্তা নেই তবুও এক্সট্রা গ্লাস প্রটেকশন লাগানো ভালো। তাছাড়া ২.৫ডি গ্লাসের ডিসপ্লেতে ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছিলো না।
ক্যামেরা
প্রথমে থাকছে ১৩ মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা নিয়ে। এর কোয়ালিটি ভালোই ছিলো ডে লাইটে। কিছুসময় অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ইমেজ বিরক্তি লাগতে পারে অনেকের কাছে আবার অনেকের কাছে ভালো ও লাগতে পারে। ইমেজ শার্পনেস, কন্ট্র্যাস্ট নিয়ে কোনো অবজেকশন থাকছেনা তবে লো লাইটে এই ক্যামেরা দিয়ে অতটা ভালো ছবি তোলা একটু কষ্টকরই হবে। তবে মজা পাবেন এর ফ্রন্ট ক্যামেরাতে। এর ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরাতে সামনে ফ্রন্ট ফ্ল্যাশে আছে ‘সেলফি ফ্ল্যাশ ল্যাম্প’। রেগুলার ফ্ল্যাশ এর চাইতে এই সেলফি ফ্ল্যাশ ল্যাম্প অনেক বেশি পাওয়ারফুল। কারণ এর ফ্রন্ট ক্যাম বেশ ভালো পরিমানের ওয়াইড। খুব সহজেই সেলফি এবং গ্রুপফির জন্য মানিয়ে নেওয়া যায়।
ব্যাটারি
৪০১০ মিলিএ্যাম্পিয়ার আওয়ারের শক্তিশালী লি-পলিমার ব্যাটারি দিয়েছেলম্বা সময় ধরে ব্যাটারি ব্যাকআপ সুবিধা এর সাথে যুক্ত হয়েছে ফাস্ট চারজিং সুবিধা। গোটাদিন চালিয়ে ব্যাটারি শেষ করা খুব কস্টসাধ্য ব্যাপার। প্রায় ৮ ঘন্টার মত স্ক্রিণ অন টাইম পাওয়া গেছে। তাছাড়া এটি ফাস্ট চার্জিং এনাবল্ড। চেক করে দেখলাম বক্সের সাথে দেওয়া চার্জারে ২০% চার্জ থেকে একদম কারেক্ট ৩০ মিনিট সময়ে ৭০ পার্সেন্ট চার্জ হয়েছে। তাই ব্যাটারি ব্যাকাপ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
হার্ডওয়্যার
হেলিও এস১০ স্মার্টফোনটিতে মিডিয়াটেক এমটি৬৭৫৫ চিপসেট প্রসেসর ক্লকস্পিড ১.৯৫ গিগাহার্জ। এন্ট্রি টু মিড লেভেল এর চিপ মোটামুটি পাওয়ারফুল। ডে টু ডে টাস্কে ভালো হ্যান্ডেল করবে। ৪ জিবি র্যামের কারনে মাল্টিটাস্কিং এও ভালো করেছে।
স্টোরেজ
ডিভাইসের রম থাকছে ৩২ জিবি এবং এসডি কার্ড দিয়ে তা ২৫৬ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
স্পেশাল ফিচার
তাছাড়া এর টাচ অনলি ফিজিক্যাল হোম বাটনে ইম্বেডেড ফিংগারপ্রিন্ট বেশ ফাস্ট এবং একুরেট ছিলো। তবে মাঝে মাঝে কিছুটা মিসরিডিং ও হয়েছে। কিন্তু অসাধারণ লেগেছে এর লাউডস্পিকার কোয়ালিটি। প্রায় ডিস্টরশন ফ্রিসহ ভালো পরিমাণ লাউড ছিলো এর স্পিকার।
সাউন্ড
এতে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির স্পিকার এ নতুন একটি ইনবিল্ট সাউন্ড সিস্টেম থাকায় ইকুইলাইজার সেট করে হারিয়ে যাওয়া যাবে মিউজিকের চমৎকার ভুবনে।
ইউজার ইন্টারফেস
ফোনটির মূল আকর্ষণ মনে হয়েছে এর ইউজার ইন্টারফেস। এমিগো ইউয়াই রমের ডিভাইসটি অ্যান্ড্রয়েড নুগাট ৭.০ অপারেটিং সিস্টেমে চালিত। সো এর রম একদম নতুন এমিগো ইউয়াই। নতুন অনেক ফিচার এড করা হয়েছে, ট্রাঞ্জিশন ইফেক্টগুলোর মধ্যে এসেছে পরিবর্তন। নুগাট হওয়ায় মাল্টি ইউন্ডো ফিচার তো আছেই এবং হোম বাটনে আংগুল স্লাইড করলে পাশে একটি এজ বার আশে যাতে ফ্রিকুয়েন্ট ইউজড অ্যাপগুলো দেখা যায়।
এর সেটিং মেনুতেও পরিবর্তন এসেছে। রেগুলার সেটিং এবং এক্সট্রা টুইকস আলাদা বারে পাওয়া যাবে এখন আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে ইন্টারফেস এর মধ্যে হেলিও এস১০ নামেই একটি অ্যাপ আচ্ছে যার ভেতরে ঢুকলে হেলিও এর হটলাইন নাম্বারসহ সকল কাস্টমার কেয়ারের তথ্য পাওয়া যায়। ওভারল ইউয়াই নিয়ে স্যাটিস্ফাইড। অন্যদের মতো ল্যাগি ইউয়াই না অন্তত। তবে হেভি রম হওয়ায় ভালো পরিমাণ র্যাম ফ্রি থাকলে সুবিধা হবে। তাছাড়া আরেক ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এতে এমন প্রযুক্তি সুবিধা আছে যা দিয়ে স্মার্ট টিভি, এসি এসব কন্ট্রোল করতে পারবেন মোবাইল দিয়ে।
বিবার্তা/রুপক/উজ্জ্বল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]