দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অনেক সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন। কোনো তথ্য দরকার হলে হরহামেশাই গুগলে খোঁজ শুরু করেন অনেকেই। তবে অনেকেই জানে না, গুগল সার্চ ইঞ্জিনেই ফাঁদ পেতে আছে দুর্বৃত্তরা। এতে যে কোনো বিপদে পড়তে পারেন ব্যবহারকারীরা। এসব বিপদ এড়াতে গুগল সার্চে অন্তত ৭টি জিনিসের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
গুগলে অ্যাপ ও সফটওয়্যার খোঁজা
অনেকেই বিভিন্ন অ্যাপ ও সফটওয়্যার সরাসরি গুগল সার্চ করে খোঁজেন। এমন কিছু অ্যাপও থাকে যা গুগল প্লে স্টোরে থাকে না। কিন্তু এভাবে ডট এপিকে ফাইল ডাউনলোডের ক্ষেত্রে সবসময়েই ঝুঁকি থেকে যায়। অজানা সাইট থেকে অ্যাপের আকারে ডাউনলোড হতে পারে ম্যালওয়্যার। ইনস্টল করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার প্রাইভেসির দফারফা। স্মার্টফোনের বারোটাও বাজতে পারে।
ব্যাংকিং সংক্রান্ত যেকোনো লিংক
গুগল সার্চ করে কোনো ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে সাবধান। ডুপ্লিকেট ভুয়া ওয়েবসাইট থেকে সর্বস্বান্ত হতে পারেন। তাই ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই সরাসরি ওয়েব অ্যাড্রেস টাইপ করে খুলুন। অথবা সেই ব্যাংকেরই তৈরি অ্যাপ ব্যবহার করুন। অনলাইন লেনদেনের সময় থাকুন সতর্ক।
ওষুধ কিংবা চিকিৎসার জন্য গুগলে সার্চ করা
গুগল সার্চ ব্যবহার করে ডাক্তারি না করাই ভাল। টুকটাক শরীর খারাপের প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি দেখতেই পারেন। তবে শরীর খারাপের ক্ষেত্রে গুগল সার্চ করে কোনো ওয়েবসাইট দেখে ডাক্তারি করা মোটেও বিচক্ষণ কাজ নয়। গুগলে সার্চ করে হঠাৎ কোনো ওষুধ, সাপ্লিমেন্টও কেনা অনুচিত।
কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার খোঁজা
ধরুন আপনি অনলাইন কোনো জিনিস কিনেছিলেন। সেটি রিটার্ন করায় রিফান্ড পাবেন। কিন্তু ২ দিন পরেও টাকা ফেরত পাননি। এমন সময়ে কিন্তু ভুলেও গুগল করে সেই সংস্থার কাস্টমার কেয়ার নম্বর খুঁজতে যাবেন না। অনলাইন বিপণন সংস্থার আদলেই নকল ওয়েবসাইট খোলে প্রতারকরা। সেখানে থাকে ভুয়া নম্বর। সেই নম্বরে ফোন করলেই পড়তে হবে ফাঁদে।
গুগল সার্চ করে শেয়ারবাজার, ট্রেডিংয়ের বুদ্ধি নেয়া
গুগলে এ সম্বন্ধে সার্চ করলেই হাজারো ওয়েবসাইট ভরা পরামর্শ পাবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট ও নামী কিছু ওয়েবসাইট ছাড়া শেয়ারবাজার সংক্রান্ত বুদ্ধি না নেওয়াই শ্রেয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন ভুয়া সংস্থা 'ট্রেডিং'-এর নাম করে প্রতারণার ফাঁদ পেতে থাকে। তাই এই বিষয়ে গুগল সার্চের উপর বেশি নির্ভর না করাই ভালো।
সরকারি তথ্য কিংবা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট খোঁজা
ব্যাংক কিংবা বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইটের মতই দুর্বৃত্তরা সেসবের আদলেই ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। যেখানে সেই ওয়েবসাইটটির ডোমেইন এর মতই কাছাকাছি একটি নাম দিয়ে সেই ওয়েবসাইটের আদলে ওয়েবসাইট তৈরি করে। এখানে সেসব স্ক্যামারদের লক্ষ্য থাকে বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট কিংবা গুরত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট এর আদলে ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্যবহারকারীকে বোকা বানানো। গুগলের সার্চ করে এরকম অনেক ওয়েবসাইট প্রকৃত মনে হলেও সেগুলো পরবর্তীতে অনেক সময় প্রতারিত মূলক ওয়েবসাইট বলে প্রমাণিত হয়। স্ক্যামারেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে এই কাজটি করে থাকে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কোনো কিছু গুগলে সার্চ করা
আমাদের অনেক সময় কৌতূহলবশত বিভিন্ন অস্ত্রের প্রতি আগ্রহ হতে পারে। কিন্তু সেই আগ্রহের বসে যদি আপনি গুগলে সেটি লিখে সার্চ করেন তবে এটি করেও আপনি অনেক বিপদে পড়তে পারেন। যেটি আপনার জীবনকে একটি অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দিতে পারে। অনেকেরই কৌতূহল হতে পারে যে, 'বোমা কীভাবে তৈরি হয়' এ বিষয়টি আমি ইন্টারনেটে দেখব। ইন্টারনেটে যেহেতু সমস্ত বিষয়গুলো রয়েছে সেহেতু বোমা কীভাবে তৈরি করতে হয় এই বিষয়টিও নিশ্চয়ই থাকবে। যদি ইন্টারনেটে বোমা কীভাবে তৈরি করতে হয় এই বিষয়টির থেকেই থাকে এবং আপনি যদি বোমা কীভাবে তৈরি করতে হয় সেটা লিখে সার্চ করেন তবে আপনি কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে পড়ে যাবেন। দেশের নিরাপত্তা এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সবসময়ই এ ধরনের কিওয়ার্ডগুলোকে মনিটর করে থাকে।
আপনি যদি 'বোমা কীভাবে তৈরি করতে হয়' এ বিষয়টি লিখে গুগলে সার্চ করেন তবে আপনি সেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টার্গেট হয়ে যাবেন এতে করে কোনো সন্দেহ নেই।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]