শিরোনাম
ইন্টারনেট দুনিয়া আসলেই অরক্ষিত
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০১৬, ১১:২৩
ইন্টারনেট দুনিয়া আসলেই অরক্ষিত
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অনলাইন গোপনীয়তা কীভাবে হাট-খোলা হয়ে রয়েছে। অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেয়া গোপন তথ্য যতই নিরাপদ বলে দাবি করা হোক না কেন আসলে তা অরক্ষিত।


গবেষকেরা বলছেন, অনলাইনে নিজের নাম আর ব্রাউজারে প্রাইভেট মোড ব্যবহার করে কেউ যদি নিজেকে নিরাপদ মনে করেন তবে তিনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কারণ প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন নতুন হ্যাকার।


সাইবার বিশেষজ্ঞদের এই সতর্কতা, যাঁরা অ্যাশলি ম্যাডিসন নামের সাইটটি ব্যবহার করছিলেন তাঁদের দুর্দশার কথা ভেবেই বলেছেন। অ্যাশলি ম্যাডিসন সাইটটি মূলত কানাডাভিত্তিক পরকীয়ার ওয়েবসাইট। সম্প্রতি এই সাইটটি হ্যাকড হয়ে গেছে এবং হ্যাকাররা সাইট ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত করে দেয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছে। এই সাইটটিতে তিন কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছে।


গবেষকেরা বলছেন, যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ব্যবহারের জন্য যদি নাম, ক্রেডিট কার্ড নম্বর ও ছবি দেন তবে তা চিরতরে গোপন থাকবে তা আশা করাও ভুল। কোনো ওয়েবসাইট প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার নিশ্চয়তা দিতে সক্ষম নয়। প্রতিটি কম্পিউটার হ্যাক করা সম্ভব আর এটাই হচ্ছে এখনকার বাস্তবতা।


শুধু অ্যাশলি ম্যাডিসন নয় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের সাইট হ্যাকড করে সেখান থেকে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। এ ছাড়াও অ্যাডাল্ট ফ্রেন্ড ফাইন্ডার, অ্যানথেম, কমিউনিটি হেলথ সিস্টেম, প্রিমেরা, ইউসিএলএ হেলথসহ নানা সাইট হ্যাক হয়ে গেছে।


গবেষকেরা বলেন, কম্পিউটার বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করতে বাধ্য ইন্টারনেটে যেকোনো তথ্যই গোপন রাখা সম্ভব নয়। ইন্টারনেট যেভাবে তৈরি করা হয়েছে এটি মজ্জাগতভাবে অরক্ষিত। এটা ঠিক যুদ্ধক্ষেত্র এলাকায় হাইওয়ের ওপরে গাড়িতে করে কাগুজে নোট পাঠানোর মতো বিষয়। এই নোট ব্যক্তিগত ও নিরাপদ রাখতে গণিতবিদেরা জটিল অ্যালগরিদম ব্যবহার করে এনক্রিপশনভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরিতে কাজ করছেন।


তথ্য আদান-প্রদানে তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে কোডিং ব্যবহার করার প্রক্রিয়াই হলো এনক্রিপশন। এটা যেন বিপদসংকুল পথে চলমান ওই গাড়িতে সামরিকবাহিনীর বর্ম লাগানোর মতো একটি বিষয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, শত্রুরা সর্বদাই ওই গোপন তথ্য বের করে আনার সুযোগ খুঁজে ঠিকই বের করে ফেলে।


গবেষকেরা বলেন, অনেক সময় কোনো ওয়েবসাইটে এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না। এটা যেন ব্যবহারকারীকে নগ্ন করে সাইকেলে চড়তে বাধ্য করার মতো বিষয়। কিছু ওয়েবসাইটে পুরোনো এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এটা যেন মরিচা ধরা বলম ব্যবহার করে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর মতো।


গবেষকেরা বলেন, অনেক শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করছে এখনকার যুগের হ্যাকাররা। এখনকার যে অস্ত্র দিয়ে সুরক্ষার কথা বলা হয় তা আগামী প্রজন্মের এই অস্ত্রের কাছে খেলনার মতো। যত সতর্ক হয়েই অনলাইন ব্যবহার করা হোক না কেন অনেক সময় যন্ত্রে ম্যালওয়্যার আক্রমণ করে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। তাই অনলাইনে গোপনীয়তা ঠেকাতে যতই অস্ত্র মজুত থাক না কেন তা নিয়েও গোয়েন্দা তথ্য ঠিকই পেয়ে যায় সাইবার দুর্বৃত্তরা।


গবেষকেরা বলছেন, একুশ শতকে এই সত্যটি মেনে নিয়েই চলতে হবে যে অনলাইনে যেহেতু কোনো কিছু গোপন করা যায় না। মনে রাখতে হবে তিনটি সত্য— সবকিছু কেউ না কেউ দেখছে, ইন্টারনেটের দুনিয়া অরক্ষিত ও স্থায়ীভাবে তথ্য নেটের দুনিয়ায় থেকে যাবে।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com