শিরোনাম
মোবাইলের কারণে যা ব্যবহার করছি না
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৫৫
মোবাইলের কারণে যা ব্যবহার করছি না
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফোনটা কাছে নেই, কেমন লাগবে? অস্থির, মনে হবে কেউ কাছে নেই, কাউকে খুঁছে পাচ্ছি না, কোন কাজ করতে পারছি না, কোথাও যেতে পারছি না, নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়-ইত্যাদি। আমার, আপনার, আমাদের সবার মোবাইল ফোনটি কিছু কিছু জিনিসের বিকল্প হয়ে উঠেছে। কি জানি হয়তো একদিন আসবে যখন এসব জিনিস আর মানুষ ব্যবহার করবে না। হতে পারে তা জাদুঘরে ঠাঁই হবে। এর মধ্যে অনেক জিনিসের সঙ্গে হয়তো আপনার, আমার, আমাদের সবার পুরনো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।


মোবাইল ব্যবহারের কারণে আমরা কিছু জিনিস ব্যবহার করছি না, বা এসব ব্যবহার করা আমরা প্রয়োজন মনে করছি না। আসলে মোবাইল যেহেতু হাতে আছে সেহেতু বাড়তি কিছু দরকার নেই। আসলেই দরকার হয় না। মোবাইলই সেসবের প্রয়োজন মেটাচ্ছে।


● মানুষ আগে কেন চিঠি লিখতো তা আমাদের জানা আছে, মনের ভাব প্রকাশের জন্য। চিঠি যে কবে লিখলাম তা ভুলে গেছি। আমার মতো অনেকে। মোবাইলে সরাসরি যখন কথা বলা যায় সেখানে চিঠি লেখার দরকারটা কি? তাই বুঝি চিঠি লেখাও বন্ধ হয়ে গেছে।


● অফিস, কাছারিতে অবশ্য এখনও ল্যান্ডফোনের প্রয়োজনীয়তা পুরোপুরি ফুরিয়ে যায়নি। একটা ল্যান্ডফোন কোন পরিবারে থাকা মানে বিরাট কিছু। মানুষের সাথে যোগাযোগের জন্য এর গুরুত্ব আছে বৈকি। কিন্তু মোবাইল হাতে আসায় এখন আর ল্যান্ডফোনের দিকে মোটেও ঝুঁকছে না মানুষ। যে কোন খবর দ্রুত যার যার কাছে চলে যাচ্ছে। আগে তা ছুটতে হতো খবরের জন্য। বাড়ির কমবেশি প্রত্যেক সদস্যের হাতেই এখন মোবাইল। ফলে, ল্যান্ডফোন অনেকের বাড়ি থেকেই বিদায় নিয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে তা এখন শুধুই স্মৃতি।



● অনেক আগে হাতঘড়ি ছাড়া চলতো না, ঘড়ি ব্যবহার করা অনেকের শখ, হাতে একটা ঘড়ি থাকা মানে বিরাট কিছু। ঘড়ি উপহার পাওয়া তো আরো আনন্দের ছিল। আর মোবাইল হাতে আসায় সেসবের পরিবর্তন হয়েছে। সময় জানতে চাইলে হাতে আছে মোবাইল। সুতরাং ঘড়ির প্রয়োজন নেই। এখন ঘড়ি উপহার পাওয়া মানে (হয়তো) হাস্যকর। মানষে তেমন খুশি হবে না। কিন্তু শুধু সময় দেখার জন্য কি আর এখন সত্যিই ঘড়ির প্রয়োজন আছে? সময় দেখার প্রয়োজনীয়তাও তো মোবাইল মিটিয়েছে। সুতরাং হাতঘড়ি বিদায়।


● মনে হয় কথাটি বলে পাঠককে দুঃখ দিচ্ছি। সেটি হলো মোবাইল আসায় মিথ্যা কথা বলা শুরু হয়েছে। সত্য কথা বলা আর হয়ে উঠে না। যেমন-আপনি কাউকে জিজ্ঞেস করলেন কোথায় আছেন? উত্তর যেটা পাবেন সেটা কতটা বিশ্বাস করবেন বুঝতেই পারছেন! এমন ঘটনা কি ঘটেনি?


● স্মার্ট ফোন থাকলে আয়নার দরকার হয় না। আগে মহিলাদের ব্যাগে থাকত এই ধরনের ছোট আয়না। এখন স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনে নিজের মুখ দেখে নিয়েই অনেকে সেই কাজ সারেন। আর না হলে ফ্রন্ট ক্যামেরাটা অন করে নিজের মুখটা দেখে নিলেই হল। এটা সবাই করতে পারেন। সুতরাং ছোট আয়না দরকার কি?


● বাজারে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? রিক্সা, ভ্যান, অটোর জন্য তো। মোবাইলে সেভ করেন ওদের মোবাইল নম্বর। কারণ তাদের হাতেও মোবাইল আছে। সুতরাং সময় অপচয়, অপেক্ষার দিন শেষ।


● মনে হয় মোবাইলের কারণে টিভি দেখা অনেকটা কমে গেছে। কেন টিভি দেখি? উত্তরটা সবার জানা। আর টিভিতে যা কিছু পাওয়া যায় তা তো মোবাইলেই পাচ্ছি ভাই। সুতরাং টিভি দেখার দরকার কি। হয়তো কেউ আমার সাথে একমত হতে সময় নেবেন। তাহলে আমি বলছি, অপেক্ষা করুন একদিন আপনার বাসায় টিভির দরকার হবে না। কারণ কেউ টিভি দেখবে না। মোবাইল যে আছে কাছে।


● ইচ্ছে করলে মোবাইলেই লোড করে রাখতে পারবেন কয়েকশো গান। বাড়তি পয়সা খরচ করে ওয়াকম্যান, আইপডের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তাই অনেকেই অনুভব করেন না। আর এখন তো নানারকমের মিউজিক ফোনও বেরিয়ে গিয়েছে। তার উপর রয়েছে এফএম রেডিও। সুতরাং রেডিওর দরকার নাই।আবার ক্যাসেট প্লেযারও তো অনেক আগে হারিয়ে গেছে। এখন শুধু স্মৃতি।


● হাজার দশেক টাকার মোবাইলেই এখন যে ধরনের উন্নত ক্যামেরা থাকছে, তার ছবি অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ ডিজিটাল ক্যামেরার থেকেও ঝকঝকে। সুতরাং ক্যামেরার দরকার পরে না। অতএব, আমরা বলতে পারি কবে জানি ক্যামোও হারিয়ে যাবে-সেদিন বুঝি বেশি দূরে নেই।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com