উদ্যোক্তারাই একটি দেশের মেরুদণ্ড ও মূল চালিকাশক্তি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল প্রতিটি দেশের স্টার্টআপরাই অর্থনীতিকে পরিচালনা ও সমৃদ্ধ করছে।
মঙ্গলবার (২২ জুন) বিইয়া (B’Yeah)র লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘উদ্যোক্তার পাঠশালা’এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
পলক বলেন,উদ্যোক্তারাই পারে কারো অধীনস্থ না হয়ে আরো ১০০ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করতে। তাই দেশে উদ্যোক্তা বৃদ্ধিতে ৪৩ জেলায় আরো ৫০ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
পলক আরো বলেন, চাকরি প্রার্থী না হয়ে চাকরি দাতা হওয়ার জন্য তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মজীবনে প্রবেশের উপযোগী হচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের পক্ষে চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নিজেরা চাকরি প্রার্থী না হয়ে উদ্যোক্তা হয়ে যেন চাকরি দাতায় রূপান্তরিত হতে পারে সে লক্ষ্যে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত আইসিটি বিষয়কে বাধ্যতামূলক করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, উদ্যোক্তা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে শুধু অর্থায়ন ও বিনিয়োগই যথাযথ নয়। এক্ষেত্রে তাদের সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে পুরো ট্রেনিং, ফান্ডিং, মেন্টরিং ও কোচিং এর মাধ্যমে পুরো ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া ও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হলে তারা ভবিষ্যতে আরো সফলতা লাভ করবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি সেবাকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিতে ই-গভারমেন্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে। প্রান্ত থেকে কেন্দ্র (বটম আপ অ্যাপ্রোচ) পদ্ধতিতে সেবা প্রদান শুরু করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ২০১০ সালে ভোলার প্রত্যন্ত অঞ্চল চর কুকরি-মুকরিতে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) উদ্বোধন করা হয়।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সার্ভিস জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার মূল চালিকাশক্তি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তাগণ। বর্তমানে ১৩ হাজারের বেশি নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ করছে। তাদের মাধ্যমে স্বল্প খরচে, স্বল্প সময়ে, দুর্নীতি মুক্ত উপায় প্রতি মাসে ৬০ লক্ষ মানুষ কম্পিউটার ও ইন্টারনেটনির্ভর সকল সেবা পাচ্ছেন।
ইন্টারনেট জীবিকার মূল উপাদান উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সকলের জন্য স্বল্প মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ফলে জনগণ শিক্ষা-স্বাস্থ্য ,বাণিজ্য, বিনোদনসহ পৃথিবীর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা হাতের মুঠোয় পাচ্ছেন। দেশের সাড়ে ৬ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার গ্রামে বসেই ব্যবসা এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারছে। ফ্রিল্যান্সাররা বর্তমানে বছরে ৫ মিলিয়ন ডলার আয় করছে।
অনুষ্ঠানে বিইয়া (B’Yeah)র লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘উদ্যোক্তার পাঠশালা’ প্লাটফর্ম উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের একটি কার্যকর প্লাটফর্মের নাম বি’ইয়া।বি’ইয়ার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন আব্দুল মুহিদ চৌধুরী জানান, এটি তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরামর্শ, প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে ব্যবসা শুরু, সম্প্রসারণে এবং অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে।
ইয়ুথ বিজনেস ইন্টারন্যাশনালের সিইও আনিতা তাইসিন তার বক্তব্যে উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মোফিজুর রহমান বি’ইয়াকে এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বি’ইয়ার নির্বাহী পরিচালক আশফাহ হকসহ সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা।
বিবার্তা/গমেজ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]