শিরোনাম
বাংলাদেশে কারখানায়
দুই মডেলের ফোন দিয়ে উৎপাদন শুরু করছে নকিয়া
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২১, ১৮:২৫
দুই মডেলের ফোন দিয়ে উৎপাদন শুরু করছে নকিয়া
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে কারখানার অবকাঠামোগত স্থাপনা এগিয়ে রাখলেও নানা জটিলতায় এতোদিন হ্যান্ডসেট উৎপাদনে যেতে পারেনি ফিনল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নকিয়া।


অবশেষে দেশের কারখানায় মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজন শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্বে মোবাইল ফোন বাজারের এক সময়ের শীর্ষ কোম্পানি নকিয়া এইচএমডি গ্লোবাল বাংলাদেশ।


আগামী শনিবার (২৬ জুন) থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজলায় বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির নকিয়ার কারখানায় উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। দেশে উৎপাদিত এসব ফোনে লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’।


শুরুতে নকিয়া ৪.২ এবং জি১০ এই দুই মডেলের স্মার্টফোন সংযোজন করে ঈদুল আজহা’র আগে বাজারেও ছাড়তে চায় প্রতিষ্ঠানটি।


আর এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন করতে যাচ্ছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে কারখানা স্থাপনের জন্য ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি থেকে প্রভিশনাল অ্যাপ্রুভাল পেয়েছে।


প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল কবীর বলেন, একই সঙ্গে ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড অনুমতি পেয়েছে নকিয়া ব্র্যান্ডের ফোন অ্যাসেম্বিলিং বা উৎপাদনের।


এইচএমডি গ্লোবাল বাংলাদেশের বিজনেস প্রধান ফারহান রশিদ জানান, দুটি মডেল দিয়ে ২৬ জুন আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে যাচ্ছেন তারা। শুরুতে স্মার্টফোন তৈরি করা হবে। ৬টি প্রডাকশন লাইনে প্রতিদিন ৮০০ ইউনিট হ্যান্ডসেট সংযোজনের সক্ষমতা রয়েছে। এখান হতে শুরুতে নকিয়া ৪.২ এবং জি১০ এই দুই মডেলের ৩০ হাজার স্মার্টফোন বাজারে আসবে এবং চেষ্টা করা হচ্ছে ঈদের আগেই আনতে। দেশের কারখানায় সংযোজনের ফলে গ্রাহকরা সাশ্রয়ী দামে মানসম্মত হ্যান্ডসেট পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


২০১৭ সালের ২৪ মে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজলায় বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির ৫ নম্বর ব্লকে ৫ একর জায়গা বরাদ্ধ নেয় ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড। সেই সময় ভাইব্র্যান্ট ৪৫ মিলিয়ন ডলার বা বর্তমান হিসেবে ৩৮২ কোটি টাকা বিনিয়োগের উল্লেখ করেছিল। যেখানে সাইবার সিটি, ডেটা সেন্টার, মোবাইল এবং স্মার্ট ডিভাইসসহ এটিএম কার্ড, স্মার্টকার্ডসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কথা জানিয়েছিল।


কারখানার অবকাঠামোগত স্থাপনা এগিয়ে রাখলেও এতদিন নানা জটিলতায় হ্যান্ডসেট উৎপাদনে যেতে পারেনি তারা। আমদানি করা যায়নি কারখানার যন্ত্রপাতিসহ হ্যান্ডসেটের যন্ত্রাংশও। চলতি বছরের মার্চে সব জটিলতা কাটিয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় তিন মাসের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করার জন্য তৈরি হয়ে যায় তারা।


নকিয়া মোবাইল প্রযুক্তির রূপান্তরের প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান হারিয়ে ২০১৪ সালে মাইক্রোসফটের কাছে বিক্রি হয়ে যায়। বছর দু’য়েকের মধ্যে ফিনল্যান্ডের কোম্পানি এইচএমডি গ্লোবাল নকিয়া হতে ব্র্যান্ড লাইসেন্স ও মাইক্রোসফট হতে ব্যবসা কিনে নেয়।


২০১৬ সালের শেষ দিকে নকিয়ার নামে ফিচার ফোন এবং এক বছর পরে স্মার্টফোনও আনতে শুরু করে তারা। আর সেই হতে হারানো বাজার ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন না হলেও মোবাইল ফোন বিশ্বে শক্ত অবস্থান তৈরিতে তাদের চেষ্টা লক্ষণীয়।


বাংলাদেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্প ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করে। সরকার দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদনে এবং মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে ব্যাপক শুল্ক ছাড়সহ নানা সুবিধা দেয়ার বিপরীতে হ্যান্ডসেট আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোয় স্থানীয়ভাবে দেশী-বিদেশী কোম্পানিগুলো কারখানার করার উদ্যোগ নেয়।


২০১৮ সালে দেশে কারখানা স্থাপন করে সেখানে সংযোজিত হ্যান্ডসেট বাজারে এনেছে ওয়ালটন, সিম্ফনি, স্যামসাং, আইটেল-ট্র্যানসান ও ফাইভস্টার। এই পাঁচ কোম্পানির পরে লাভা, ওকে মোবাইল, উইনস্টার, ভিভো দেশে কারখানা করে। এর মধ্যে সবশেষ কারখানা করে অপো, ব্র্যান্ডটি গত বছরের নভেম্বরে দেশে সংযোজিত স্মার্টফোন বাজারে ছেড়েছে।


এসবের বাইরে উই ও ফরমি নামে দুটি ব্র্যান্ড কারখানা স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করলেও তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। এছাড়া শাওমিসহ কয়েকটি ব্র্যান্ড দেশে কারখানার করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।


বিবার্তা/গমেজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com