শিরোনাম
অজ্ঞতাই পাপের বড় কারণ
প্রকাশ : ১১ মে ২০১৮, ১০:২৩
অজ্ঞতাই পাপের বড় কারণ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পাপের একটি বড় কারণ হল অজ্ঞতা। তাই অজ্ঞতা দূর করার জন্য জ্ঞান অর্জন জরুরি। গোনাহ’র রয়েছে নানা ধরন। ব্যক্তিগত পাপের চেয়ে সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক পর্যায়ের পাপ বেশি মারাত্মক।


সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পাপ ও কুপ্রথা চালু করা হলে তার প্রভাব হয় অনেক সুদূর-প্রসারী। কোনো কোনো পাপ এমন যে তার প্রভাব হাজার হাজার বছর ধরে অব্যাহত থাকে। যেমন, ইহুদি ও খ্রিস্ট ধর্ম এক সময় একটি ঐশী তথা সত্য ধর্ম হওয়া সত্ত্বেও একদল জ্ঞানপাপী এই ধর্ম দু’টির মধ্যে এমন বিকৃতি এনেছে যে হাজার হাজার বছর ধরে শত শত কোটি মানুষ সেই বিচ্যুতি হতে মুক্ত হতে পারছে না। এ ধরনের পাপের হোতা ওই জ্ঞানপাপীরা ছিল মূলত শয়তানেরই সাগরেদ। তারা প্রকৃত ধর্মীয় নেতাদের আসন দখল করেছিল ছলে-বলে কৌশলে।


ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্র এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে যোগ্য নেতা নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে জনগণকে সেই পাপের দায় ও কুফল বহন করতে হয় যুগ যুগ ধরে কিংবা শত শত ও এমনকি হাজার হাজার বছর ধরে। তাই যোগ্য নেতা ও সৎ আর ধার্মিক বন্ধু নির্বাচন পাপ থেকে মুক্ত থাকার ও আত্ম-উন্নয়নের এক মোক্ষম উপায়।


বলা হয় সৎ-সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে সর্বনাশ। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ নানা প্রতিষ্ঠানের নেতা নির্বাচনের সময় অনেকে ইচ্ছে করে এমন ব্যক্তিকে ভোট দেন যে মিথ্যা কথা বলে কর্মীদের জন্য অবৈধ স্বার্থ আদায় করে দিতে পারবে, কিংবা স্কুল বা কলেজের ছাত্রদের জন্য অবাধ নকলের ব্যবস্থা করে দিতে পারবে! আসলে এগুলো সবই শয়তানেরই কুমন্ত্রণা।


শয়তান সরলমনা মানুষকে অনেক সময় কুমন্ত্রণা দেয় এই বলে যে, নবী-রাসূল ও নিষ্পাপ ইমামদের হুবহু অনুসরণ করা তো তোমার মত সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়! সমাজের সাথে কিছুটা হলেও তো তাল মিলিয়ে চলতে হবে! অত বেশি ভালো মানুষ হতে গেলে তো এই যুগে টিকে থাকা সম্ভব নয়! তাই এক-আধটু মিথ্যাচার, স্বার্থপরতা ও সুবিধাবাদের আশ্রয় নেয়া তেমন দোষের কিছু নয়, পরে তওবা করে নিলেই তো ল্যাঠা চুকে যাবে!


আসলে মহান আল্লাহ দেখবেন যে, আমরা পাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য যথাসাধ্য ও আন্তরিক চেষ্টা করছি কিনা। যথাসাধ্য ও আন্তরিক চেষ্টার পরও যদি কিছু অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি বা ভুল হয়ে থাকে আল্লাহ তা ক্ষমা করবেন। আর সে জন্য নবী-রাসূল ও নিষ্পাপ ইমামদের আদর্শকে যথাসাধ্য অনুসরণের চেষ্টা করতে হবে।


আমরা যদি সর্বোত্তম আদর্শ বা পরিপূর্ণ মানবদের অনুসরণের চেষ্টা করি তাহলে পরকালে তাদের সঙ্গেই আমাদের থাকতে দেয়া হবে। এটা কি কম সাফল্য? তা ছাড়া মৃত্যু কখন যে আমাদের গ্রাস করবে তা তো আমরা কেউ জানি না। তাই পরে তওবা করার তো কোনো গ্যারান্টি নেই যে যার ভিত্তিতে এখন ইচ্ছা করেই পাপ করব!


শয়তান আমাদেরকে দারিদ্রের ও ক্ষমতাসীনদের হাতে কঠোর শাস্তি ভোগের ভয় দেখায় এবং ক্ষমতা ও সুবিধা হারানোর ভয় দেখিয়ে পাপে জড়ানোর কুমন্ত্রণা দেয়। অথচ পরিপূর্ণ মু’মিন ব্যক্তি কেবল আল্লাহকেই ভয় করে।


মু’মিন মনে করেন যে, তিনি যদি ন্যায়ের পথে অবিচল থাকেন তাহলে আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন, তাকে রিজিক দেবেন অকল্পনীয় পন্থায় ও এমনকি শেষ পর্যন্ত তাকেই বিজয়ী করবেন যদিও তা অকল্পনীয় মনে হয়!


মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, যারা বা যে আল্লাহর পথে চলার জন্য (যথাসাধ্য) কঠোর চেষ্টা-সাধনা করে আল্লাহ তাকে অবশ্যই পথ দেখান।


মহান আল্লাহর প্রতিশ্রুতি তো ঠুনকো কোনো বিষয় নয়! আল্লাহ তো ঠাট্টা-মশকরা করে কোনো প্রতিশ্রুতি দেন না। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে ধৈর্য ধরার ওপর গুরুত্ব দিয়ে মহান আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, তোমরা দুঃখিত ও মনভাঙ্গা হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও।


মহান আল্লাহ সুরা মুহাম্মাদের সপ্তম আয়াতে বলেছেন - হে ঈমানদাররা! তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য কর তাহলে তিনি তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদক্ষেপগুলোকে সুদৃঢ় করবেন।


অন্যদিকে যারা আল্লাহর এই ওয়াদায় বিশ্বাসী নয় আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ দেন এবং তাদের স্থান জাহান্নামে হবে বলে উল্লেখ করেছেন। সুরা ফাতহ্‌র ষষ্ঠ আয়াতে এসেছে - তিনি কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসী নারী এবং অংশীবাদী পুরুষ ও অংশীবাদিনী নারীদেরকে শাস্তি দেন, যারা আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষণ করে। তাদের জন্য মন্দ পরিণাম। আল্লাহ তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাহাদের জন্যে জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন। তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল অত্যন্ত মন্দ।


বিবার্তা/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com