শিরোনাম
ইসলামে আংটি ও পাথর ব্যবহারের বিধান
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০১৭, ১২:৩৯
ইসলামে আংটি ও পাথর ব্যবহারের বিধান
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মানুষের ভাগ্যের বিধাতা আল্লাহ, আল্লাহই পারেন তা পরিবর্তন করতে; আর তিনি তা পরিবর্তন করেন বান্দার আমলের কারণে। যেমন নেক আমল বা সৎকর্ম, পিতামাতার ও গুরুজনের দোয়া বা শুভাশিষ, সদকাত বা দান খয়রাত ইত্যাদি দীর্ঘায়ু নেক হায়াত, সুখী সুন্দর নিরাপদ ও আনন্দময় জীবন লাভের কারণ। অনুরূপভাবে গুনাহ বা পাপকাজ ও অন্যায় অপরাধ-অপকর্ম দ্বারা আয়ু কমে, দুর্ভাগ্য আসে ও সঙ্কটে পতিত হতে হয়। কিছু মানুষ পর্যাপ্ত ধর্মীয় জ্ঞান না থাকায় ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নাজায়েজ ও অবৈজ্ঞানিক পন্থাবলম্বন করে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আংটি, বেসলেট, রাবার ব্যান্ড, মাজারের সুতা, কিলক, অষ্টধাতু (সোনা, রূপা, তামা, পিতল, কাসা, রাং, সিসা, লোহা)।


❏ পুরুষদের আংটি ব্যবহার: পুরুষের জন্য রুপার আংটি ব্যবহার করা জায়েজ; কারো কারো মতে তা সুন্নাত। কিন্তু রূপা ব্যতিত অন্য কোন ধাতু বা পাথর ব্যবহার করা নিষেধ; বিশেষ করে সোনার আংটি সম্পূর্ণরূপেই নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে পাথর ব্যবহার করাও অনুমোদিত নয়।


❏ বিশেষ উদ্দেশ্যে আংটি বা পাথর ব্যবহার: শনির দশা, রাহুর গ্রাস ও কালের দৃষ্টি থেকে রক্ষা; ফাড়া কাটানো, দুর্ভাগ্য দূর করা, সৌভাগ্য আনয়ন করা; রোগমুক্তি বা আরোগ্য লাভ এবং সুস্বাস্থ্য অর্জন ও নিরোগ থাকা- এসব উদ্দেশ্যে আংটি ও পাথর ব্যবহার করা একাধারে অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক, অপরিণামদর্শী, অজ্ঞতাপ্রসূত, হারাম ও শিরিক। কারণ এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়; বিশ্ব সাস্থ সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয়; কুরআন সুন্নাহ নির্দেশিত শরীয়াসম্মত পন্থাও নয়। বিশেষত রাশির সাথে মিল করে যে পাথর দেয়া হয়, ইসলামী বিধান মতো ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সে রাশিও বাস্তবসম্মত নয়; এবং তা বিশ্বাস করাও অজ্ঞতা ও শিরিক।


❏ মূর্খতার প্রতীক বিভিন্ন প্রকারের আংটি: পাথরের আংটি, তামার আংটি, পিতলের অংটি, অষ্টধাতুর আংটি, পারদের আংটি, ঘোড়ার নালের আংটি, ব্রোঞ্জের আংটি, পিতলের আংটি, দস্তার আংটি, কাসার আংটি, স্টীলের আংটি, লোহার আংটি ইত্যাদি।


❏ মহানবী (সা.) এর আংটি ব্যবহার: আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) সাধারণত কোনো প্রকার অলঙ্কার ব্যবহার করতেন না। রাষ্ট্রীয় দাফতরিক কাজের প্রয়োজনে সীল মোহর হিসেবে রূপার আংটি ব্যবহার করেছেন। সে আংটির হলকা বা রিং এবং নগিনা বা পাত উভয় ছিল রূপার। তাতে লেখা ছিল- মুহাম্মাদ রাসূল আল্লাহ। তিনি এ আংটি ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলে পরতেন। তিনি কখনো আংটিতে পাথর ব্যবহার করেনি। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)। তাই কোনো ফকীহের মতে পুরুষ শুধু প্রয়োজনেই আংটি ব্যবহার করতে পারবে, কারো কারো মতে পুরুষের জন্য সাধারণভাবে আংটি পরা অনুমোদিত, আবার কারো মতে আংটি ব্যবহার করা সুন্নাত; তবে সর্বাবস্থায় সেটি শূধুমাত্র রূপারই হতে হবে।


❏ মহিলাদের জন্য আংটির বৈধ উপকরণ: সোনা, রূপা, কাঠ, পোড়া মাটি, কাচ, চাঁচ, রাবার, প্লাস্টিক, মুক্তা, পাথর (হিরা, চুনী, পান্না, রুবী, ইয়াকূত, যমরূদ, মার্বেল, কষ্টি পাথর) ও শামুক-ঝিনুক ইত্যাদি। মহিলাদের জন্য এসব ব্যবহারে বাধা নেই; পুরুষদের জন্য রূপার আংটি ছাড়া অন্য কিছু ব্যহার করা জায়েজ নেই।


❏আংটি ও অলঙ্কার ব্যবহারে ডান-বাম: হাদীস শরীফে আছে, রাসূলে কারীম (সা.) সকল কর্মে ডান দিককে প্রাধান্য দিতেন। (আবূ দাঊদ শরীফ)। তাই আংটি বা যে কোনো অলঙ্কার ডান অঙ্গে পরা এবং ডান দিক থেকে পরিধান করতে শুরু করা সুন্নাত। এই নিয়ম পুরুষ মহিলা সবার জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য।


❏ রত্ন পাথরের জাকাত: যেহেতু আংটি কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস নয়, তাই আংটি যদি অত্যধিক মূল্যবান হয় এবং অনুরূপ কোনো মূল্যবান রত্ন পাথর বা পাথরের শোপিস ইত্যাদির মূল্য হিসাব করে তার জাকাত দিতে হবে। এসব ব্যবহারে থাকুক বা এমনিতেই থাকুক উভয়াবস্থায় জাকাতের আওতাধীন হবে।সূত্র: ইন্টারনেট।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com